পটিয়ার পাহাড় থেকে এবার বাগানমালিককে অপহরণ, মুক্তিপণে ছাড়া পাওয়ার দাবি
Published: 14th, January 2025 GMT
চট্টগ্রামে পটিয়ার পাহাড়ে বাগানে শসা ও লেবু তুলতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত হন আবদুল হামিদ (৬৫) নামের এক বাগানমালিক। তিনি মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে তাঁর স্বজনেরা দাবি করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে পটিয়া ও চন্দনাইশের পাহাড়ি এলাকায় বেশ কয়েকটি অপহরণের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পটিয়া ও চন্দনাইশের দুর্গম পাহাড়গুলোতে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা এসে নানা অপরাধ করে গা ঢাকা দিচ্ছেন বলে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি ও বাগানমালিকদের অভিযোগ।
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও বাগানমালিক আবদুল হামিদকে মুক্তি দেন অপহরণকারী ব্যক্তিরা। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, গতকাল সকাল সাতটার দিকে উপজেলার সাতগাছিয়া দরবার শরিফ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে শ্রীমাই পাহাড়ে নিজ বাগান থেকে আবদুল হামিদকে অপহরণ করা হয়।
গতকাল বিকেলে মুক্তি পাওয়া বাগানমালিকের বড় ছেলে মোহাম্মদ কায়সার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শ্রীমাই পাহাড়ে তাঁদের একটি বাগান রয়েছে। বাগানে ৪০ বছর ধরে লেবু, নানা জাতের সবজি, শসার চাষ করেন তাঁরা। রয়েছে মাছের খামারও। গতকাল সকাল সাতটার দিকে তাঁর বাবা আবদুল হামিদ, ছোট ভাই মো.
এ বিষয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল গণি বলেন, আবদুল হামিদকে সকালে বাগান থেকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা অপহরণ করেন। সন্ধ্যার দিকে মুক্তিপণের মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছেন বলে জেনেছেন। পাহাড়ি এলাকার বাগানমালিকেরা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে রয়েছেন।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জায়েদ মোহাম্মদ নাজমুন নুর বলেন, এই ব্যাপারে তিনি কোনো তথ্য পাননি। কোনো অভিযোগও কেউ করেনি। অভিযোগ পেলে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি
টিউশন শেষে বাসায় ফেরার পথে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের তৎপরতায় চার ঘণ্টার মধ্যে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থীর নাম শাকিল আহমেদ। তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সহ-সভাপতি।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কুমিল্লা শহর থেকে ফেরার পথে কয়েকজন অপহরণকারী তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর তার পরিবার ও বন্ধুদের কাছে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা পুলিশের সহযোগিতায় প্রায় চার ঘণ্টা পর কুমিল্লার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে শাকিলকে উদ্ধার করেন। এসময় এক অপহরণকারীকে আটক করা হয়।
এবিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মুহসিন জামিল বলেন, রাত ১২টা ৫৮ মিনিটে আমরা জানতে পারি সবুজকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আটকে রেখে টাকা দাবি করছে। গ্যাংয়ের সদস্যরা সবুজের মাধ্যমে ফোন দিচ্ছে। তারপর আমরা ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাঈদ ভাইকে জানালে ওনারা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে। এরপর থেকেই পুলিশ সবুজের লোকেশন ট্রেস করতেছিল। পরবর্তীতে পুলিশ ও আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৪ ঘণ্টা পর একটা পরিত্যক্ত বিল্ডিং থেকে সবুজকে উদ্ধার করি।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের সদস্য সচিব মুহাম্মাদ রাশেদুল হাসান বলেন, সবুজের বিষয়টি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাঈদ আমাকে অবগত করে। সাথে সাথে ওসি কোতোয়ালিকে ফোন দিয়ে তা জানানো হয়। আমাদের মহানগর কমিটির একটি টিম কান্দিরপাড় অঞ্চলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সবুজের লোকেশন শনাক্ত করা হয়। পুলিশ, বিভাগীয় চেয়ারম্যান মোরশেদ কাজেম স্যার, বৈবিছা-র সদস্যবৃন্দ, সবুজের সিনিয়র-জুনিয়র-ব্যাচমেট সবার তৎপরতায় আনুমানিক রাত ৩টায় সবুজকে উদ্ধার করতে আমরা সমর্থ হই।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তিন থেকে পাঁচজনের একটি চক্র শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে। পরে রাত আড়াইটার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে।