হবিগঞ্জের ৩০০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
Published: 14th, January 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নয়জন হত্যার ঘটনায় ৩০০ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে ২৬৪ জনের নাম উল্লেখ ও বাকিরা অজ্ঞাতপরিচয় আসামি।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ৩ জন করে, ১৮ জন বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবং সাবেক এসপিসহ পুলিশের ১৮ কর্মকর্তা। বাকি অভিযুক্তদের বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বরাবর এ অভিযোগ দেওয়া হয়। পরে ট্রাইব্যুনালের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে ভিকটিম শেখ নয়ন হোসেন, মো.
অভিযুক্তদের মধ্যে আলোচিতরা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, আব্দুল মজিদ খান, সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, হবিগঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে, আওয়ামী লীগ নেতা সুশান্ত দাশ গুপ্ত প্রমুখ।
অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তার দলীয় নেতাকর্মীদের ছাত্রজনতার উপর হামলার নির্দেশ দেন। এছাড়াও ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের দমনে সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে। সুশান্ত দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তাদের নেতৃত্বে অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যসহ আনুমানিক ৩০০ জন আসামি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গণহত্যায় জড়িত ছিলেন।
ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্তরা হলেন- ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, আব্দুল মজিদ খান, সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সুশান্ত দাশ গুপ্ত, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান তালুকদার, ইউপি চেয়ারম্যান হায়দরুজ্জামান খান (ধন মিয়া), বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আমীর হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন জুয়েল, বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কবির মিয়া, উত্তর পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তাকিন বিশ্বাস, দক্ষিণ-পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান আরফান উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন, হারুন মিয়া, ছামির উল্লাহ, জাকির হোসেন মহসিন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রেখাছ মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা মাধব দেব, আওয়ামী লীগ নেতা সামছুল আলম, ইউপি চেয়ারম্যান সুষেনজিৎ চৌধুরী, অতু মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল মুহিত খান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মর্ত্তুজা হাসান, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শিমুল পাল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী আমজাদ তালুকদার, তছকীর মিয়া, আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিছবাহ উদ্দিন ভুঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা কাপ্তান সারোয়ার, কাজল চ্যাটার্জী, ফুয়াদ উল্লা খান, ছামির আলম, জিয়াউর রহমান, জনাব আলী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাশেদ মিয়া, আছাদুজ্জামান খান তুহিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, আবুল খায়ের, বাবলু মিয়া, তুফাজ্জল হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, আলোচিত অস্ত্রধারী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাশ, এরশাদ আলী, সামরুল ইসলাম, জয়কুমার দাশ, আহাদ মিয়া, ছাদিকুর রহমান ও শেখ সামছুল হক, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা তজম্মুল হক চৌধুরী, নাসির উদ্দিন, সিরাজ লস্কর, ইউপি চেয়ারম্যান খেলু মিয়া, সাইদুল খা, সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, বানিয়াচং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল মিয়া, নয়ন মিয়া, হারুন মিয়া, আলী হায়দর, সাদিকুর খা, জুয়েল, পারভেজ খান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি উজ্জ্বল, সাবেক সভাপতি আঃ হালিম সুহেল, সামছু মিয়া, রফিকুল ইসলাম পাশা, আব্দুল মজিদ খানের পিএ সেলিম উদ্দিন, মো. আবু জাহির এর পিএ সুদীপ দাশ, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তার, নাছরিন আক্তার, ছাত্রলীগ নেতা পিয়াস খান, রুবেল মিয়া, শাহেদ মেম্বার, খোকন মিয়া, সমশের মেম্বার, মুস্তাকিম, রুবেল মিয়া, শাকিল মিয়া, ধন মিয়া, সবুজ মিয়া, ময়না মিয়া, আকরম আলী, মাসুদ উল্লা খান সাজ্জাদ, রনি খান, বাদল বট, স্বপন কুমার দাশ, আব্দুল মেম্বার, মতিউর, আঙ্গুর মিয়া, হাফিজুর, শপন মিয়া, হামদু মিয়া, ফজল উল্লা খান, সনজব আলী, নুরে আলম, মামুন মিয়া, কাশেম মিয়া, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, আবুল মনছুর তুহিন, শাহাদত আলী খান (রতু), শিমন আলী খান, মনিরুল মিয়া, মারুফ মিয়া, নাসির উদ্দিন, অমল রায়, মাসুম খান, জনাব আলী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইম আহমদ (পুলক), উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মামুন খান, সন্দীপ, মোশাহিদ, মামুন মিয়া, নুরুল আমিন, মোস্তফা মিয়া, নজরুল ইসলাম, মহিদ মিয়া, কামরুল খান, রতন কর, মোজাহিদ, আব্দুল বাছিত, বাবলু রায়, আতাউর রহমান, মাহমুদ আখনজী, হাবিবুর রহমান (খসরু),মিলু মিয়া, শাহজাহান উল্লা, জনীন মিয়া, নুরুল ইসলাম, আঃ ওয়াদুদ, জিতু মিয়া, সিজিল খা, আঃ শহীদ, রবিউল আলম সেলিম, কাওছার মিয়া, এলাছ মিয়া, আব্দাল মিয়া, মনজিল মিয়া, নৃত্যু দেব, নুর মোহাম্মদ, সুপ্রিয়, সুমন, সিজিল, এসএম সোহাগ, আক্কাছ খান, ইকবাল হোসেন, শাহজাহান, আঃ শহীদ, জুয়েল মিয়া, আবজল মিয়া, আজমল মিয়া, শাহ আলম, শামীম আহমেদ, সামছু মিয়া, লোকমান মিয়া, রুবেল মিয়া, শাহেদুর রহমান, মোতাহের মিয়া, নুরুল হক, মোস্তফা মিয়া, রবিউল, আলামিন, আইয়ুব আলী ওরফে আবু মিয়া, রিতেশ কুমার বৈষ্ণব, আব্দুল মন্নান, সাইদুল মিয়া, মজিবুর, মহিউদ্দিন আগা খান, সাবাজ, মন্নান, সাদিকুর, কামরুল, সুহেল রানা, আশিকুর রহমান কুটি, আলতু মিয়া, সহিবুর, শাহনেওয়াজ ফূল মিয়া, মোর্শেদুজ্জামান রুকু, ডা. কালাম, মহিউদ্দিন, তামজিদ, ফারুক, শামীম, মনজিল মিয়া, রঞ্জিত দত্ত, সুকেশ দেব, মনি দত্ত, আব্দুল আলীম মিয়া, সালাম টেইলার, আব্দাল মিয়া, শেখ হাবীবুল হক, সামরুল ইসলাম, মো. মুতাব্বির মিয়া, মো. নুর মিয়া, মো. আঃ হাই, মো. উজ্জ্বল মিয়া, মো. ইমন মিয়া, মো. ছনু মিয়া, মো. আবু তালিব, জাকির রেজা, আবুল কাশেম, নাসির উদ্দিন, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির রেজা, মোতালিব ঠাকুর, দুদু ঠাকুর, মিলন ঠাকুর, চান মিয়া, ছায়েব আলী, সিরাজুল ইসলাম, তাহের মিয়া, হাবিবুর রহমান খলিল, আফতাব উদ্দিন, শাহজাহান, নজরুল ইসলাম, কাজল মিয়া, কামরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফয়েজ, মো. আব্দুল হাদি, সেতু মিয়া, আঃ কাদির, জয়নাল, আলী রহমান, শফিকুল আলম চৌধুরী, আব্দুল কাদির, জুয়েল খান, সুমন আহমেদ, মো. শাহজাহান মিয়া, তাজু মিয়া, আলফু মিয়া, রুহুল কিবরিয়া বুলবুল, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহেনারা আক্তার বিউটি, মো. শাহেদ মিয়া মেম্বার, শেখ খালেক মিয়া, মো. তপন সর্দার, শেখ মোতাহিরুল ইসলাম, কাজী আব্দুল জলিল, মো. নাছির উদ্দিন, কাজী শাহজাহান, আবুল কালাম আজাদ, রেদুয়ান পারভেজ শামীম, মো. শাহেদ আলী, এসএম হাফিজুর রহমান, মারুফ সর্দার, টিপু মিয়া, মো. জাকির হোসেন, স্বপন মিয়া, সাবেক পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে, ওসি দেলোয়ার হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হানিফ, এসআই মো. আব্দুল কাদের, মো. হুমায়ুন কবীর, মো. সদরুল হাসান খান, মো. মঞ্জুরুল ইসলাম খান, স্বপন চন্দ্র সরকার, মো. শাহানুর ইসলাম, এএসআই মহসিন মিজি, মো. হারুন অর রশিদ, মো. আ. খালেক মিয়া, মো. খালেদ মোশারফ, মো. জাকির হোসেন, মো. রুহুল আমিন, অরুণ কুমার সিংহ ও মামুন মিয়া।
ঢাকা/মামুন/ইমন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নুরুল হক নুর কি অন্য দলে যাচ্ছেন? কী বলছেন রাশেদ খান
‘গণ অধিকার পরিষদ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। এই দল ছেড়ে অন্য কোনো দলে নুরুল হক নুরের যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারা এখন এগুলো প্রচার করছেন মূলত মিডিয়ায় হাইপ (অতিরঞ্জিত) করার জন্য যে, তাদের দলে অনেক মানুষজন যোগদান করছে।’ ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপিতে) যোগ দিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নে সমকালকে এ কথা বলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সোমবার রাতে সমকালের মামুন সোহাগকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
এনসিপিতে যোগদানের কথা একটি জাতীয় গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে- এর সত্যতা কতটুকু- জানতে চাইলে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘নুরুল হক নুর গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি। তিনি এই মুহূর্তে ইতালিতে অবস্থান করছেন। সেখানে প্রবাসী অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করেছেন। এখন আপনি যে প্রশ্নটি করলেন, আমিও দেখলাম হান্নান মাসুদ (জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা) একটি বক্তব্য দিয়েছেন, আমার মনে হয় গণমাধ্যমের উচিত একপাক্ষিক বক্তব্য প্রচার না করে উভয়ের বক্তব্য নেওয়ার পরে একটি সিদ্ধান্তে আসা বা সেই বক্তব্য প্রচার করা। তিনি যা বলেছেন সেই কথাটার সত্যতা বা ভিত্তি কতটুকু?’ পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি।
রাশেদ খান বলেন, ‘বিভিন্ন সময় নাহিদ ইসলাম (অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, বর্তমানে এনসিপির আহ্বায়ক), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম (বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্বের জায়গায় যারা রয়েছেন তারা আমাদের ডেকেছেন এবং আমাদের মতামত নিয়েছেন। মন্ত্রী পাড়ায় তাদের যেখানে বাসা সেখানেই সেই বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে তাদের দল গঠন থেকে শুরু করে জোট গঠন বা বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে তারা আমাদের মতামত চেয়েছে। শুধু আমাদের সাথেই না এ রকম অনেকের সাথেই তারা বসেছে, কথা বলেছে, আলোচনা করেছে। সেখানে একটা সময় তারা আমাদের তাদের সঙ্গে জোট করার প্রস্তাব দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বলি বাংলাদেশের রাজনৈতিকভাবে জোটের আসলে কতটুকু ভিত্তি আছে তা দেখেছি। জোটের মধ্যে মনোমালিন্য ভুল বোঝাবুঝি, জোট ভাঙার সমস্যা আছে। সেক্ষেত্রে আপনারা যেহেতু আমাদের সাথে রাজনীতি করেছেন, একসঙ্গে ডাকসু নির্বাচন করেছি, এক সাথে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় রাজনীতি করেছি, আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছি সুতরাং আমরা একসাথে কিছু করতে পারি। একীভুত হয়ে আমরা বৃহত্তর স্বার্থে বড় কিছু করার উদ্যোগ নিতে পারি। যেহেতু এখন গণমানুষের নতুন কিছু আকাঙ্খা আছে, গণতন্ত্রের আকাঙ্খা আছে এই বিষয়গুলো শুধু এভাবেই আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য যারা বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষিপ্তভাবে কাজ করছি তারা এক হয়ে কীভাবে বড় পরিসরে কোনো কিছু করা যায় এই জিনিসটা তারাই কিন্তু প্রস্তাব দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘তারা এখন এভাবে প্রচার করছেন মিডিয়ায় যে, অনেক মানুষজন তাদের সঙ্গে যোগদান করছে। দেখেন তারা যখন দল গঠন করল, তার আগে কিন্তু এ ধরনের আলোচনা দেখলাম যে বিএনপি, গণ অধিকার পরিষদ বা অন্যান্য দলের নেতারা তাদের দলে যোগদান করছে। আসলে এটি কতটুকু সত্য? তারা মূলত বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের ভাগিয়ে নেওয়ার বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে তারা তাদের সরকারি যে ক্ষমতা সেটা কিন্তু ব্যবহার করছে। তারা বলছে যে, আপনারা আমাদের সাথে আসেন, আপনাদেরকে আমরা অমুক আসন থেকে নির্বাচন করার সুযোগ দেব এবং নির্বাচনের সমস্ত খরচ দেব।’
তিনি বলেন, ‘তারা এক্ষেত্রে এক ধরনের বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এ কথাগুলো আমি বলতে বাধ্য হলাম। কারণ আমার জায়গা থেকে এ ধরনের বিতর্কে সূত্রপাত করা, সেটি নিয়ে সমালোচনা, আলোচনা, পাল্টা বক্তব্য দেওয়া আসলে ঠিক না। এখন যেহেতু এটি নিয়ে বিভক্তি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং আপনি প্রশ্ন করলেন, জানতে চাইলেন সেটির আলোকে কিন্তু এই কথাগুলো বলা। আমি এই কথাগুলো বলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।’
তাহলে নুরুল হক নুর অন্য কোনো দলে যাচ্ছেন না- এটি নিশ্চিত কিনা জানতে চাইলে সমকালকে তিনি বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। এই দল আন্দোলন-সংগ্রাম করে উঠে এসেছে। এই দল তো কোনো কিংস পার্টি না, বা কোন সরকারি বলয়ের মধ্য থেকে গড়ে ওঠেনি। সুতরাং এই দল ছেড়ে তো অন্য কোনো দলে নুরুল হক নূরের যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’
তিনি বলেন, ‘যদি সেটিই হতো তাহলে তো আমরা দল গঠন না করে কেউ আওয়ামী লীগে, কেউ বিএনপিতে, কেউ জাতীয় পার্টিতে, কেউ জামায়াতে যোগ দিতাম। আমার মনে হয় না নুরুল হক নুর আসলে সেই দলে যুক্ত হবেন এমন কোনো কথা বলেছেন। আমার মনে হয় মিডিয়াই হাইপ (অতিরঞ্জিত) তৈরি করার জন্যই তারা এ রকম বিভ্রান্তিকর বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচার করছে। এর আগে দল গঠনের আগেও একই ধরনের বক্তব্য প্রচার করেছিল যে নুরুল হক নুর তাদের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। কমিটি তো হয়ে গেছে, তিনি তো যুক্ত হননি।’