Prothomalo:
2025-01-31@14:36:58 GMT

ফুল ফোটে নরকে

Published: 14th, January 2025 GMT

গভীর রাতে কেন্দ্রীয় ভবনের শীর্ষতম বিন্দুতে আলো জ্বলে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে সবার মোবাইল ফোনে এল টেক্সট মেসেজ, ‘এখন সকাল ১১টা।’

এই শহরে যেকোনো পরিবারের যেকোনো একজন সদস্যের নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। কখন কেন্দ্রীয় ভবন থেকে তাঁর বাণী আসে বলা যায় না! কখন ভবনের কেন্দ্রীয় আলো জ্বলে ওঠে! সঙ্গে সঙ্গে অন্য সদস্যদের ডেকে তুলতে হয়। মোবাইল ফোনে যে টেক্সট আসে, তা পালন করতে হয় অক্ষরে অক্ষরে।

যেমন এখন সবার ঘড়িতে ১১টা বাজবে। একসঙ্গে সবাই চোখ কচলাতে কচলাতে মোবাইল ফোন, হাতঘড়ি, টেবিলঘড়ি, দেয়ালঘড়িসহ আর যত ঘড়ি আছে, সব কটিতে টাইম সেট করবে এগারো এএম। দেহঘড়িও বাদ যাবে না। সে–ও অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এখন সব আলো জ্বলে উঠবে। সব কটি বাড়িতে একাধিক হাজার ওয়াটের বাল্ব আছে। আর কেন্দ্রীয় ভবনের চূড়ায় জ্বলে উঠবে লক্ষ ওয়াটের বাল্ব। ওটাই এ শহরের সূর্য। প্রকৃত সূর্যের কেউ ধার ধারে না এখানে। এখন সকাল ১১টা। ১১টায় প্রাত্যহিক যে দৃশ্য দেখা যায়, এখন সে দৃশ্যই দেখা যাবে শহরে।

দেখা যাবে, দোকানগুলোতে বিকিকিনি শুরু হয়েছে। অফিস–আদালত খুলে গেছে। স্বল্প কিংবা দূরপাল্লার বাসগুলো ছাড়তে শুরু করেছে। মোড়ের চা–স্টলগুলো খুলছে। সেখানে বসে চা–সিগারেট খাচ্ছে লোকজন। আগে যেখানে পৃথিবীর সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হতো, এখন তা হচ্ছে না। এখন লোকজন সব বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী নয়। তারা এখন সুসভ্য হয়ে শুধু কথা বলছে ফুল, পাখি আর লতাপাতা নিয়ে। তারা কথা বলছে সিনেমা নিয়ে, কিন্তু কিছু সিনেমার কথা সযত্নে এড়িয়ে যাচ্ছে। তারা শুধু প্রেমের ছবির কথা বলছে। প্রেমের গান নিয়ে কথা বলছে।

মাঝেমধ্যে কিছু চেনা কিছু অচেনা লোক তাদের জিজ্ঞেস করছে, কেমন চলছে সবকিছু? একগাল হাসি দিয়ে তারা বলছে, খুব ভালো। সময় কত এখন, জিজ্ঞাসা করছে। তখন সবাই একসঙ্গে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় বলছে। সেই সব চেনা-অচেনা লোক লোকজনের ঘড়ির সময় নিজ হাতে চেক করছে। দেখছে, সময় ঠিক আছে কি না। দেখা যাচ্ছে, ঠিক আছে। কারও ঘড়িতে যদি সময় কমবেশি দেখা যাচ্ছে, তখন ওই সব লোকের সঙ্গে তাকে চলে যেতে হচ্ছে।

এভাবে যারা চলে যাচ্ছে, তারা আর কখনো ফিরছে না। এই নিয়ে কারও মনে কোনো কষ্ট নেই, কোনো প্রতিবাদ নেই। কেন্দ্রীয় ভবন থেকে প্রথমে ঘড়ি বিতরণ করা হয়েছিল বিনা মূল্যে। সবাই খুশি হয়েছিল খুব। আরে বাবা, মোবাইল ফোন আসার পর থেকে তো সবাই ঘড়ি পরাই বাদ দিয়েছে। এখন প্রত্যেকে একটা করে ঘড়ি উপহার পাওয়ায় সবাই যারপরনাই খুশি।

এরপর বলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় ভবন থেকে যখন যে সময় বলা হবে, এই ঘড়িতে শুধু সেই সময়ই দেখা যাবে। এর কোনো ব্যত্যয়ের সুযোগ নেই। সময় উল্টাপাল্টা হলে সবকিছু উল্টাপাল্টা হয়ে যাবে। যেমন জীবন থাকলে তা উল্টে যাবে। মরণ থাকলে তা–ও উল্টাবে। মরণের পর তার কোনো হদিস থাকবে না। তাকে ভুলে যেতে হবে।

এভাবে কেন্দ্রীয় ভবন থেকে যখন যে সময় নির্দেশ করা হয়, তখন তা–ই পালন করা হয়। যেমন দিনের বেলা যদি কখনো কেন্দ্রীয় ভবনের সূর্যটাকে নিভিয়ে দেওয়া হয়। বুঝতে হবে, এখন রাত নামবে। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ফোনে টেক্সট আসবে এখন রাত ১২টা। সবকিছু দ্রুত সমাপ্ত করে রাতযাপন শুরু করতে হবে।

এভাবে চলছে। কারও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। শুধু পরিবারের একজন সদস্যকে রাতের বেলা সজাগ থাকতে হচ্ছে। কারণ, ঘুমের মধ্যে কোনো নির্দেশ এলে তা তো বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিবারের সদস্যরা তাই পর্যায়ক্রমিক নির্ঘুম রাত কাটানোর ব্যবস্থা করেছে।

এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। কয়েক প্রজন্ম ধরে। সবাই–ই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কারণ, এ ধরনের প্র্যাকটিস জন্মের আগে থাকেই শুরু হয়েছে। জন্মের পরও চলছে। মৃত্যুর পরও চলবে—এ রকম একধরনের বিশ্বাস সবার ভেতরে কঠিনভাবে প্রোথিত হয়েছে।

এভাবে একদিন মধ্যরাতে দিন শুরু হয়ে যাওয়ার পর চলছে ঠিকঠাকমতোই। মাঝেমধ্যে যা হয় আরকি, তেমনই। কখনো এক দিন পরই রাত হয়ে যায়। আবার এক দিন পরই দিন। আবার কিছুক্ষণ দিন চলার পরই রাতের ঘোষণা আসে। তাতে দিন–রাতের সময়ের সমতা থাকে না, ব্যবধান অনেক বড় হয়ে যায় ঠিক, কিন্তু তাতে কারও তেমন সমস্যা হয় না।

কিন্তু এবারে মধ্যরাত থেকে দিন শুরু হয়ে যাওয়ার পর কয়েক দিন হয়ে গেল, রাত নামার কোনো খবর নেই। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ চলছে। এবার দিন কত দিন চলবে, কেউ ঠিকমতো বলতে পারছে না। কারও সে তথ্য জানার সুযোগও নেই। জিজ্ঞাসা করারও অধিকার বা যোগ্যতাও কারও নেই। কেন্দ্রীয় ভবন যা বলবে, তা–ই করতে হবে। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো করণীয় নেই।

এ রকম টানা কিছুদিন দিন চলার কয়েকটি অর্থ ইতিমধ্যে শহরের লোকজন বের করে ফেলেছে। তার একটি হলো উৎপাদন বাড়াতে হবে। উৎপাদনের সঙ্গে আমাদের শহরের অনেক কিছু জড়িত। কেন্দ্রীয় ভবনের টাকার দরকার। উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে সে টাকার জোগান দেওয়া হবে। আরও কিছু ব্যাপারস্যাপার আছে। যেমন কেন্দ্রীয় ভবন ইদানীং আশঙ্কা করছে, রাতের আঁধারে কেউ কেউ যোগ অঙ্ক করতে বসে! কেন্দ্রীয় ভবনের খুব ভয় জনগণের যোগ অঙ্ক কষায়। তাদের যোগ অঙ্ক শেখা মানে অনেক কিছু বিয়োগের সম্ভাবনা। কেন্দ্রীয় ভবন কোনোভাবেই এমন ঝুঁকি নিতে চায় না।

কেন্দ্রীয় ভবন অনেক উদার। দিনের পর দিন চললেও তাদের বিশ্রামে কোনো বাধা নেই। যখন খুশি বিশ্রাম নিতে পারবে। কেউ বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারবে না। যে যেখানে কর্মরত, সেখানেই ঘুমানোর ব্যবস্থা। কিন্তু আলো নেভানো যাবে না। আর কেউ ঘুমালে তাকে যেমন ডেকে তোলা যাবে না, তেমনি অন্যদের কাজেরও কোনো ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না; অর্থাৎ যার যার মতো কাজ করতে থাকবে। শুধু কিছু চেনা-অচেনা লোক এসে সময়–সময় জিজ্ঞাসা করলে বলতে হবে সময় কত এখন। যদি কেন্দ্রীয় সময়ের সঙ্গে তাদের সময়ের মিল না পাওয়া যায়, তখন তাদের সঙ্গে যেতে হবে এবং কোনো বাক্য ব্যয় করা যাবে না। যদি কোনো ধরনের অজুহাত দেখানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে তার পরিবারের কেউ নিখোঁজ হয়ে গেছে। আর এখানকার নিয়ম হলো, একবার কেউ নিখোঁজ হলে তাকে আর কোনো দিনও পাওয়া যাবে না।

এবারের দিন আর শেষ হচ্ছে না। সবাই যেহেতু সবকিছু মেনে নিয়েছে, তাই কেউ এটা নিয়ে কোনো ধরনের মন খারাপ করছে না। শুধু দিন দিন বিশ্রামরত মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের ঘুম না হওয়াতে উষ্কখুষ্ক চুলের ভেতরে জমা হচ্ছে ধুলো। চোখগুলো লাল লাল দেখাচ্ছে। হঠাৎ তাদের চোখের দিকে তাকালে ভড়কে যেতে  হচ্ছে। মানুষ তো! তাতে কেউ কেউ বিরক্ত হচ্ছে, ‘আরে মিয়া, এরুম কইরা তাকাও কিয়ের লাইগা। ভূত দেখচোনি।’

অন্যজন তখন অমতা–অমতা করে, ‘না, মানে।’ তখন প্রথমজন বলে, ‘মিয়া, তুমিই তো ভূত হয়ে গেছ। আয়নায় গিয়া মুখ দেকোগা।’

কিন্তু আয়নায় কেউ মুখ দেখছে না।

এভাবে আতঙ্কিত ও বিরক্তিকর লোকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। প্রয়োজনীয় কথাগুলো মনে রাখতে পারছে না কেউ। হঠাৎ হঠাৎ সেই সব চেনা-অচেনা লোক এসে সময় জিজ্ঞেস করলে ভুলভাল বলছে। পরই মনে পড়ছে, সঠিক সময়ের কথা। কিন্তু সে কথা বলার সুযোগ তারা পাচ্ছে না।

এ রকম একদিন চেনা-অচেনা লোকজন অভিযানে নেমে একে একে সবাইকে সময় জিজ্ঞেস করছে কেন্দ্রীয় ভবনের নির্দেশে। ঢুলু ঢুলু ঘুমজর্জর লাল চোখ নিয়ে সঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছে সবাই। যারা সঠিক উত্তর দিচ্ছে, তারা ধন্যবাদ পাচ্ছে। আর এই বার্তা পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় ভবনে। সবাইকে প্রশ্ন করা হচ্ছে, এ রকম চলতে থাকবে নাকি বন্ধ হবে, আসলে কী করা উচিত। সবাই সমস্বরে বলছে, এভাবেই চলুক। খুব ভালো চলছে; এবং তারা এই মতামত সেলফোন দিয়ে টেক্সটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ভবনে পাঠাচ্ছে।

একদিন হঠাৎ জটলা লেগে গেল। একজন বলে উঠল, ‘এখন ঘড়িতে বাজে অন্ধকার।’ এক তরুণের এই কথা শুনে প্রথমে সবাই বিস্মিত। তারপর বিরক্তিবোধ করল। কিন্তু ওই তরুণের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হলো, এ তো নতুন সূর্য। তবুও তারা আস্থা রাখতে পারল না। পরে দেখা গেল, শুধু ওই তরুণ নয়, তার সঙ্গে আরও অনেকেই একই কথা বলছে। এটা সবারই মনের কথা। কিন্তু কেউ মুখ ফুটে বলেনি। বলার সাহসও পায়নি।

এ কথা চেনা-অচেনা সেই সব লোককে খুব রাগান্বিত করল। অনেক বছর পেরিয়ে গেল কেন্দ্রীয় ভবনের আলো নেভেনি, আর এই লোক বলে কিনা এখন ঘড়িতে বাজে অন্ধকার। কারও ঘড়িতে অন্ধকারও বাজে না, আলোও বাজে না। ঘড়িতে বাজে কেন্দ্রীয় ভবনের সময়। বেকুব সেটা বোঝে না কেন?

চেনা-অচেনা লোকগুলো তার ওপর ক্ষিপ্ত হলো না। কেন্দ্রীয় ভবনের নির্দেশে সম্মানের সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো। উৎসুক জনতা দেখল এ দৃশ্য। কেউ কিছু বলল না। কিছু ভাবলও না। কারণ, তাদের ভাবনা পড়ার মতো যন্ত্র কেন্দ্রীয় ভবনে আছে। সেই যন্ত্রের পাঠ যদি কেন্দ্রীয় ভবনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তি বুঝতে পারেন, তাহলে তাদেরও স্থান হবে কেন্দ্রে। তারা কেউ কেন্দ্রে যেতে চায় না।

মুখে হাসি নিয়ে ওই তরুণ ফিরে এল। তবে একটা পরিবর্তন লক্ষ করল এই শহরের লোকজন। তারা দেখল, তরুণের দুচোখের জায়গায় দুটি ঘড়ি। সেখানে কেন্দ্রীয় ভবনের ঘড়ি-নির্দেশিত সময় দেখা যাচ্ছে। লোকটি বলল, তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না; বরং আগের চেয়ে তার দৃষ্টি ভালো হয়েছে। সে ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছে। মাঝখানে ঘড়ি দুটি উপহার পেয়ে সে যারপরনাই খুশি হয়েছে। তরুণ সবাইকে তার চোখের দিকে তাকাতে বলছে।

তাতে একটা ঘটনা ঘটছে। লোকটার চোখ তো আগের চোখ নেই। হয়ে গেছে ঘড়িচোখ। এই ঘড়িচোখের দিকে যে–ই তাকাচ্ছে, তার চোখও ঘড়িচোখ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে একদিন দেখা গেল, সবার চোখই ঘড়িচোখ হয়ে গেছে।

কিন্তু সমস্যা হলো, ঘড়িচোখ কখনো নেভে না। মানে ঘুমায় না। ঘুমাতেও দেয় না। আর না ঘুমানোয় শহরে উদ্‌ভ্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলল। কেন্দ্রীয় ভবন ঘোষণা করল, সবাইকে চোখ জমা দিতে হবে। কারণ, এই চোখ বা ঘড়িচোখ সমস্যা সৃষ্টি করছে। এর বদলে নতুন চোখ দেওয়া হবে। সেই চোখ হবে আরও আরামদায়ক।

এই প্রথম দেখা গেল সবার ভেতরে অসম্মতি। কিন্তু কেউ তা প্রকাশ্যে বলল না। তারা ওই তরুণকে খুঁজতে লাগল, যার ঘড়িচোখের দিকে তাকিয়ে তাদের চোখও ঘড়িচোখ হয়ে গিয়েছিল। আসলে ভেতরে–ভেতরে সাবই খুঁজছিল। কিন্তু কেউ কাউকে বুঝতে দিচ্ছিল না। একদিন একজন এসে খবর দিল, ঘড়িচোখের ওই তরুণকে দেখা গেছে কেন্দ্রীয় ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কীভাবে কীভাবে যেন সবার কাছে এ খবর পৌঁছাল। যে যার কাজ ফেলে ছুটল ভবনের দিকে।

এত লোক দেখে ঘড়িচোখের তরুণ বলল, ‘নকল সূর্যটা নেভাতে হবে।’

সবাই মাথা নিচু করল। তারা চায় না নেভাতে। অথবা তারা জানে না কীভাবে নেভাতে হয়।

ঘড়িচোখের তরুণ বুঝল, কথায় কাজ হবে না। সে তার চোখে চাপ দিয়ে ঘড়িচোখটা খুলে কেন্দ্রীয় ভবনের শীর্ষে জ্বলতে থাকা সূর্যের দিকে ছুড়ে মারল। এতে কাজ হলো। দেখা গেল, একে একে সবাই তাদের ঘড়িচোখ ঘুলে খুলে কেন্দ্রীয় ভবনে জ্বলতে থাকা সূর্যের দিকে ছুড়ে মারছে।

এরপর দেখা গেল, কারও হাতে কোনো ঘড়ি নেই। কারও চোখে নেই ঘড়িচোখ। আর কেন্দ্রীয় ভবনের সূর্যটাও নেই। ভবনটিও দেখা গেল না। দেখা গেল কিছু ইট–সুরকি পড়ে আছে কঙ্কালের মতো।

সবাই ফিরে পেয়েছে যার যার চোখ। ফিরে পেয়েছে আকাশ। সেখানে সূর্যটা জ্বলছে। নতুন চোখে সে সূর্যের দিকে তাকাচ্ছে সবাই। বাতাসে তখন এক বিশেষ সৌরভ।

তরুণ বলছে, ‘আপনারা কি সুবাস পাচ্ছেন?’ তার চোখে আনন্দাশ্রু।

সবাই আনন্দে চিৎকার করে উঠল। আর গাইতে থাকল যার যা প্রিয় গান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আমাদের আত্মা শুদ্ধ করতে হবে, ঈমান ঠিক করতে হবে : মাজেদুল 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম বলেছেন, আমরা অনেকেই নামাজ পড়ি, কিন্তুু সুদখাই, আমরা নামাজ পড়ি ঘুষখাই, আমরা নামাজ পড়ি নেশার সাথে জড়িত, আমরা নামাজ পড়ি মাদক ব্যবসা করি, আমরা নামাজ পড়ি আবার অন্যেও হক মেরে খাই, আমরা দুর্বল মানুষের উপর জুলুম করি, আমি মনে করি আমাদের এই নামাজ কোন কাজে আসবে না।

আগে আমাদের আত্মাশুদ্ধ করতে হবে, ঈমান ঠিক করতে হবে। আমার মনের ভিতরে এমন বাসনা আনতে হবে যে আমি নামাজ পড়বো মানুষের হক মেরে খাবোনা, আমি নামাজ পড়বো সুদ খাবোনা, আমি নামাজ পড়বো ঘুষ খাবোনা, আমি দুর্বলের উপর জুলুম করবোনা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি দক্ষিনপাড়া যুব ও কিশোর সংঘের উদ্যোগে কবরবাসীদের রুহের মাগফেরাত কামনায় ১৫তম বার্ষিক ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।

এসময় তিনি আরো বলেন, আজকে আমারা এখান থেকে ওয়াজ শুনে গেলাম জামাতের সাথে ফজর নামাজ পড়লাম না, তাহলে এই ওয়াজ শুনে আমাদের কোন ফয়দা হবে না। আমরা এখানে এসেছি শিখতে, আমরা এখান থেকে শিখবো এবং তা পালন করবো। আমি জানি এই এলাকায় অনেকেই অসহায়দের উপর জুলুম করে, অনেকেই মাদক ব্যবসা করে।

আল্লাহতালা যদি আমাকে কোনদিন সুযোগদেন আমি কিন্তুু আপনাদের ছাড়বো না, নেশার সাথে আমি কোন আপোষ করবোনা। নেশার ব্যবসা যারা করে তাদের সাথে আমি কোন আপোষ করবোনা, তাদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না। আমি যতোদিন বেচে থাকবো আপনাদের সেবা করে যাবো, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যতোদিন বেচে থাকবো এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো।

বাইতুল আমান জামে মসজিদের সভাপতি হাজী বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে ওয়াজ করেন মাওলানা গাজী সোলাইমান আল-কাদরী। বিশেষ বক্তা হিসেবে ওয়াজ করেন হযরত মাওলানা মুফতি বেলাল আহমদ ও হাফেজ মাওলানা মুফতি মোঃ আমানুল্লাহ।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাইতুল আতিক জামে মসজিদের সভাপতি মোঃ ওমর আলী, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এড্যাঃ মাসুদুজ্জামান মন্টু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক কামরুল হাসান শরীফ, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি শাহজাহান, হাজী নুরুল ইসলাম ও লোকমান হোসেন প্রমূখ। মাহফিল পরিচালনা করেন মাওলানা মিজানুর রহমান।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ