খাগড়াছড়িতে দুর্বৃত্তের ছোঁড়া রাবার বুলেটে শিক্ষার্থী আহত
Published: 14th, January 2025 GMT
খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে দুর্বৃত্তের ছোঁড়া রাবার বুলেটে মো. রাশেদুল ইসলাম (১৬) নামে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মানিকছড়ি বাজার মসজিদ এলাকার গোদারপাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত রাশেদুল ইসলাম মুসলিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহিমের (হুজুর) ছেলে ও মানিকছড়ির স্থানীয় একটি মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ি বাজার মসজিদ সংলগ্ন রাজার গোদার পাড়ে বড় ভাই তানভীর ও রাশেদুল ইসলাম বসে মোবাইলে কথা বলছিলেন। এ সময় হঠাৎ দুর্বৃত্তের ছোঁড়া রাবার বুলেট তার পায়ে এসে লাগে। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিকছড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মানিকছড়ি থানার (ওসি) শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল জানান, বসে থাকা অবস্থা কে বা কারা তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছুঁড়েছে প্রাথমিকভাবে সেটি জানা যায়নি। তবে অনুসন্ধানে জানার চেষ্টা চলছে।
ঢাকা/রূপায়ন/ইমন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পোর্টফোলিও ডায়েট কী, কীভাবে এটি হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
বর্তমান সময়ে হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং হাইপার কোলেস্টেরলেমিয়া রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। তাঁদের রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল ও এলডিএলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, যা হার্টের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। বিভিন্ন ধরনের ডায়েট প্ল্যান রক্তের এলডিএল, কোলেস্টেরল কমাতে পারে, কিন্তু তা মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ডায়েট প্ল্যান হচ্ছে পোর্টফোলিও ডায়েট। পোর্টফোলিও ডায়েটে ২-৫ সপ্তাহের মধ্যেই ২০-২৫ শতাংশ কোলেস্টেরল ও এলডিএল কমে আসতে পারে।
পোর্টফোলিও ডায়েট কীপোর্টফোলিও ডায়েট রক্তের কোলেস্টেরল ও এলডিএলের পরিমাণ কমাতে একটি বিশেষ খাবার ব্যবস্থাপনা, যেখানে সব প্রাণিজ উৎস থেকে পাওয়া খাবার বাদ দেওয়া হয় এবং উদ্ভিজ্জ খাবারের আধিক্য থাকে। পোর্টফোলিও ডায়েটের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য থাকে।
১. প্রাণিজ খাবার বাদ: প্রাণিজ প্রোটিন, যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার বন্ধ করতে হবে। এই খাবারগুলো স্বাভাবিকভাবেই কম আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটসমৃদ্ধ হয়। ফলস্বরূপ এই খাবারগুলো রক্তের কোলেস্টেরল, এলডিএল বাড়ায় এবং গুড ফ্যাট এইচডিএল কমায়। যা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের রোগ সৃষ্টি করে।
২. উদ্ভিদ প্রোটিন খেতে হবে: আমাদের শরীরের প্রতিদিনের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে শুধু উদ্ভিজ্জ প্রোটিন খেতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে মটরশুঁটি, মসুর ডাল, মুগডালসহ সব ধরনের ডাল, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, সব ধরনের বাদাম এবং সয়াবিন থেকে তৈরি খাবার। একটি গবেষণা থেকে দেখা যায়, প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ গ্রাম সয়া প্রোটিন গ্রহণ করলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কম হতে পারে। সয়া প্রোটিন সয়া মিট, সয়া দুধ, সয়া দই—বিভিন্নভাবে বাজারে পাওয়া যায়। এ ছাড়া টকজাতীয় দেশি ফল খাবারের তালিকায় রাখা যাবে।
৩. দ্রবণীয় ফাইবার (সলিবল ফাইবার): দ্রবণীয় ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এই দ্রবণীয় ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারগুলো আমাদের অন্ত্রে জেলির মতো গঠন তৈরি করে। অন্ত্রে, দ্রবণীয় ফাইবার পিত্ত অ্যাসিডের সঙ্গে আবদ্ধ হয়, যা ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে চর্বিজাতীয় খাবারকে বৃহদান্ত্রের মাধ্যমে মলত্যাগের জন্য বহন করে। এটি লিভারকে আরও পিত্ত অ্যাসিড তৈরি করতে উৎসাহিত করে। এ প্রক্রিয়ার অন্যতম কাঁচামাল হচ্ছে কোলেস্টেরল। যদি লিভারে পর্যাপ্ত কোলেস্টেরল না থাকে, তখন রক্তে ভাসমান কোলেস্টেরল ও এলডিএলকে ব্যবহার করে। ফলে রক্তের কোলেস্টেরল ও এলডিএলের পরিমাণ কমে।
ওট, বার্লির মতো শস্য, বেগুন, ঢ্যাঁড়স, আপেল, কমলা, বেরিজাতীয় ফল দ্রবণীয় ফাইবারের খুব ভালো উৎস। ইসবগুলের ভুসি ও সব ধরনের শাকসবজিতেও দ্রবণীয় ফাইবার পাওয়া যায়।
৪. ফাইটোস্টেরল: ফাইটোস্টেরল উদ্ভিদের জৈবিক ঝিল্লির কাঠামোগত উপাদান, যা স্টেরল ও স্ট্যানলের সমন্বয়ে গঠিত। যদি কেউ প্রতিদিন ১ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৪ গ্রাম উদ্ভিদ স্টেরল ও স্ট্যানল গ্রহণ করেন, তাহলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে ৭ থেকে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ কমানো সম্ভব। অলিভ অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, নারকেল তেল, বাদাম, সয়াবিন, মটর ও ক্যানোলা তেলে প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান।
৫. মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট: স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিবর্তে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ব্যবহার করতে হবে। এই চর্বি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাই রান্নায় জলপাই তেল, সূর্যমুখীর তেল ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া অ্যাভোকাডোতেও পর্যাপ্ত পরিমাণে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।
গবেষণা বলছে, পোর্টফোলিও ডায়েট ১৪ শতাংশ পর্যন্ত হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে। যদিও শুধু ডায়েট মেনে চলাই যথেষ্ট নয়।
● ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা বন্ধ করতে হবে।
● নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে।
● উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
● ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
● ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
● প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল