প্রশ্ন ফাঁস রোধে নিজস্ব প্রেসের চিন্তা পিএসসির, হচ্ছে নতুন রোডম্যাপ
Published: 14th, January 2025 GMT
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নিয়োগ পরীক্ষার নানা সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন গত বছর। পিএসসি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা আর চায় না। তাই এবার আলাদা প্রেস কেনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রথম আলোকে এ কথা জানান পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম।
মোবাশ্বের মোনেম বলেন, ‘আমরা ক্রমাগতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিএসসির কর্মকাণ্ডকে আধুনিকায়ন এবং নির্ভরযোগ্য করে তুলব। পিএসসির অফিস চত্বরেই একটি আধুনিক প্রেস নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে পারলে প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনাগুলো ঘটবে না বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
আরও পড়ুনপিএসসির ৬ সদস্যের নিয়োগ বাতিল১৯ ঘণ্টা আগেমোবাশ্বের মোনেম বলেন, ‘এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে আমি যোগদানের পরপরই লক্ষ করি যে ২১তম বিসিএস পরীক্ষা থেকে শুরু করে ৪৬তম বিসিএসের সব তথ্য ও উপাত্ত কেবল পিএসসিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় এটি আমার কাছে অত্যন্ত বিপজ্জনক মনে হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এসব তথ্য একাধিক স্থানে রাখার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুনডিপিডিসিতে চাকরি, ৩ ক্যাটাগরিতে পদ ৪৭, দ্রুত আবেদন করুন১ ঘণ্টা আগেপিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ইনোভেশন ও ট্রান্সফরমেশনে আগ্রহী একজন মানুষ। পিএসসির বিদ্যমান সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এ প্রতিষ্ঠানকে একটি প্রত্যাশিত উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন, আমি তা করব। এ ক্ষেত্রে কমিশনের বিজ্ঞ সদস্যদের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে এবং আমাকে সার্বক্ষণিক সাহায্য-সহযোগিতা করে চলেছেন। আপনি জেনে খুশি হবেন যে ইতিমধ্যেই এই লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি দল গঠন করা হয়েছে। এই টিম পাঁচ বছর মেয়াদি একটি কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এখানে পিএসসির একটি সুনির্দিষ্ট ভিশন নির্ধারণ করা হবে এবং সেই ভিশন অর্জনে কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে। এ কৌশলগত পরিকল্পনাটি হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য পিএসসির রোডম্যাপ, প্রতিবছর এই রোডম্যাপের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুনআইএসডিবি-বিআইএসইডব্লিউতে ২ লাখ সমমূল্যের কোর্স, বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ-কর্মসংস্থান, আবেদন করুন দ্রুত২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।