আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রেসিডেন্ট নাওয়াফ সালামকে লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন।

সোমবার তাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

কিছু সংবাদমাধ্যম নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার বিষয়টিকে ‘সুনামির’ সঙ্গে তুলনা করেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাওয়াফ সালামকে প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত ইরান সমর্থিত শিয়া মুসলিম গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর জন্য বড় ধাক্কা। তাদের অভিযোগ নতুন প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের বাদ দেওয়ার জন্য কাজ করবেন।

সৌদি আরবের জোরালো চাপের পর গত বৃহস্পতিবার লেবাননের পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জোসেফ আউন। আর এরপরই দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।  

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সালামের মনোনয়ন লেবাননের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করবে। তবে এই পরিস্থিতি লেবাননের রাজনৈতিক অঙ্গনে আরও জটিলতা তৈরি করতে পারে।

এদিকে লেবাননের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, দেশের বাইরে অবস্থানরত নাওয়াফ সালাম মঙ্গলবার দেশে ফিরবেন। সংসদের ১২৮ জন আইনপ্রণেতার মধ্যে ৮৪ জন তার সমর্থনে ভোট দিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন তাকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দিতে ডেকেছেন।

নাওয়াফ সালাম এর আগেও দুবার প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রার্থী ছিলেন। তিনি ব্যাপকভাবে একজন সংস্কারবাদী হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তিনি সুন্নি মুসলিম। আর শুধু সুন্নি মুসলিমরাই লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।

জোসেফ আউনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া এবং নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশটির সরকার ব্যবস্থায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান ঘটল। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট পদটি খালি ছিল। এ ছাড়া এত দিন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সক্ষমতার ভিত্তিতে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত হতো।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ