স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে জুলাই–আগস্টের একটি হত্যার মামলায় স্বামীকে আসামি করার অভিযোগে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ওই হত্যা মামলায় নিহতের পরিবারের কেউ বাদি না হয়ে গৃহশিক্ষক বাদি হওয়ায় রহস্য আরও ঘনীভূত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না থাকলে কাউকে হয়রানি করা হবে না।

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ইফাত হাসান খন্দকার (১৬) নামে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার টেলিভিশন ও ওটিটি প্লাটফর্মের প্রযোজক সারোয়ার জাহান বাপ্পীকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সময় বাপ্পী বসুন্ধরার বাসায় থাকার প্রমাণ পেয়ে বিপাকে পড়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এর আগে ওই ব্যক্তির নামে তার স্ত্রী রুকাইয়া তাহসিনা বিভিন্ন অভিযোগে পাঁচটি মামলা করেছেন। বাপ্পীও তার স্ত্রীর নামে দুটি মামলা করেছেন।

ভুক্তভোগী বাপ্পীর দাবি, স্ত্রী তাহসিনার পূর্বের তিন বিয়ের বিষয় জানাজানি হলে ধামাচাপা দিতে তার নামে পাঁচটি মামলা করেন। সবশেষ সারওয়ার বিবাহবিচ্ছেদের পরিকল্পনা করার মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়। বাপ্পীর অভিযোগ হয়রানি করতে স্ত্রীই তার মামলা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এটা করিয়েছেন। এর আগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে সারওয়ারের করা একটি মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে আসে তাহসিনার প্রতারণা ও তিন বিয়ের ঘটনাটি। যদিও তার স্ত্রী তাহসিনা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। একইসঙ্গে তাহসিনা দাবি করেছেন, ‘স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কের কারণে তাদের সংসারে ফাটল ধরেছে।’

গত ২০ জুলাই ইফাত হাসান আন্দোলন দমনকারীদের গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় আদালতে দায়ের করা হত্যা মামলায় ১১৮জন নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪২ নম্বর আসামি করা হয়েছে বাপ্পীকে। মামলায় তাকে ঢাকার ১৮নং ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার বাদী ইফাতের গৃহশিক্ষক কাউছার আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে অনেকেই ছাত্র–জনতার উপর হামলা চালায়। আমার পক্ষে সবাইকে চেনা সম্ভব হয়নি। 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এলাকাবাসীর সহায়তায় আসামির তালিকা করেছি। এখানে অনেককে আমি চিনি না এবং চেনা সম্ভবও না। দুর্ভাগ্যজনক কারোর নাম চলে আসলে তদন্তে তিনি অব্যহতি পেয়ে যাবেন। এখানে দোষের কিছু দেখছি না।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো.

শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি না। তবে যদি কাউকে হয়রানি করতে আসামি করা হয়, যাচাইবাছাই শেষে তার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে।’

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগীর স্ত্রী তাহসিনা বলেন, ‘সারওয়ার মানুষ খারাপ হলেও এই মামলায় আসামি হওয়া মানায় না। কারণ সে কখনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। আমার বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ করছে সেটিও জানি না। কারণ পারিবারিক কোনো বিষয়ে মামলা করতে হলে আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করবো।’

বাপ্পী অভিযোগ করে বলেন, ‘স্ত্রী তাহসিনার আরও স্বামী রয়েছে। একজন প্রবাসে, আরেক দেশে বাসায় যাতায়াত করেন। এমনকি সন্তানদের বাবার নাম পরিবর্তন করে অপর এক ব্যক্তিকে স্বামী হিসেবে দেখিয়ে সন্তানের পাসপোর্ট করেন। তখন তাহসিনা সন্তানের চিকিৎসার কথা বললে আদালত মানবিক কারণে মামলা খারিজ করে দেন। পরে আরেকটি মামলার তদন্ত করে পিবিআই তাহসিনার তিন বিয়ের সত্যতা পায় এবং আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই মামলাটি এখনও বিচারাধীন রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে তাহসিনা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সবগুলো অভিযোগ ভিত্তিহীন। সাইফুল ইসলাম নামে একজনের সঙ্গে আগে বিয়ে হয়েছিল। তার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর সারওয়ারকে বিয়ে করি। তারও আগে বিয়ে হয়েছিল। সব জেনেই আমরা বিয়ে করি। সন্তানের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরেও যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাপ্পী রাজি হয়নি। এ রাগে অন্য একজনের নাম ব্যবহার করে সন্তানের পাসপোর্ট করি।’

পিবিআই তদন্তে তিন বিয়ের প্রমাণ পায়। এ বিষয়ে তাহসিনা বলেন, ‘সারওয়ার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই তদন্ত রিপোর্ট নিজের মতো করে বানাতে সহায়তা করেছে। ওই প্রতিবেদনের কিছুই সত্য না। আদালতে এটি প্রমাণিত হবে।’

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জামালপুরে ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজির ৫ যাত্রী নিহত

জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলায় ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিতে থাকা পাঁচ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের কড়োগ্রাম এলাকায় জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- এনাম ফকির, সিএনজি চালক আব্দুর রাজ্জাক, আরিফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল করিম আলাল।

জামালপুর সদর উপজেলার নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. লুৎফর রহমান জানান, মধুপুর থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরগামী একটি সিএনজি অটোরিকশাকে মধুপুর থেকে ছেড়ে আসা দ্রুত গতির একটি ট্রাক সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। এতে সিনএজি অটো রিকশায় থাকা ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত দুজনকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। 

উদ্ধারকৃতদের মধ্য এনাম ফকির স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে মারা যায়। এনামের বাবা আমজাদ ফকির গুরুতর আহত অবস্থায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মালপুর সদর উপজেলার নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. লুৎফর রহমান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে এখান থেকে চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একজন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছে। মরদেহ উদ্ধার করে আইনানুগ প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।”

ঢাকা/শোভন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুধু নারী নয়, পুরুষরাও যৌন হয়রানির শিকার হয়: প্রিয়াঙ্কা
  • বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লির মৃত্যু 
  • গায়িকা-অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল আর নেই
  • সাইফুল-সাজ্জাদে তটস্থ চট্টগ্রামের ৫ থানার পুলিশ
  • কামরুল হাসানের কাছে শিল্প ধরা দিয়েছিল
  • ‘আমার চিত্রকর সত্তার মৃত্যু ঘটিয়েছি’
  • ‘রেখাচিত্রকে অবহেলা করা উচিত নয়’
  • অনুষ্ঠানে প্রবেশে নারী সাংবাদিককে ‘বাধা’, যা হয়েছিল সেদিন
  • যুক্তরাষ্ট্রে উড়োজাহাজ-হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় বেঁচে নেই কেউ
  • জামালপুরে ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজির ৫ যাত্রী নিহত