এক যুগ আগেও ফেলে দেওয়া হতো নারকেলের ছোবড়া। আবার কেউ কেউ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতেন। এই ছোবড়া এখন আর ফেলনা নয়। গদি, সোফা, দড়ি, কৃষিপণ্যসহ নানা জিনিস তৈরি হচ্ছে নারকেলের ছোবড়া থেকে। রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। ফেলনা এই ছোবড়াই ঘোরাচ্ছে লক্ষ্মীপুর জেলার অর্থনীতি। জেলায় ছোবড়া পণ্যের ৩০টির মতো কারখানায় বছরে কোটি টাকার ব্যবসা হয়।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সোহেল মো.

শামসুদ্দীন ফিরোজ জানান, জেলায় ২ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে নারকেলের বাগান রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় রয়েছে নারকেলগাছ। গত এক বছরে শুকনা নারকেল ও ডাব মিলিয়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। জেলায় ২ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে নারকেল বাগান রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি বাড়ির আঙিনাতেই রয়েছে নারকেলগাছ। ২৩-২৪ অর্থবছরে ২৬ হাজার মেট্রিক টন নারকেল উৎপাদিত হয় লক্ষ্মীপুরে।

ছোবড়ার আঁশ থেকে ঠিক কত আয় হয়, তার সঠিক পরিসংখ্যান বিসিক বা সরকারি কোনো দপ্তরেও নেই বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলা বিসিক কার্যালয়ের প্রমোশন কর্মকর্তা মো. জুয়েল চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফেলনা ছোবড়া থেকে কোটি টাকা আয় হচ্ছে। নারকেলের ছোবড়ার আঁশ ও গুঁড়া দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। আসছে বৈদেশিক মুদ্রা। এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।

নারিকেলের ছোবড়া থেকে আঁশ (কোকো ফাইবার) ছাড়িয়ে সরবরাহের জন্য শেডের নিচে রাখা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার দালাল বাজারে। সম্প্রতি তোলা

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ