প্রশাসনিক কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গতিবিধি পর্যবেক্ষণে বসানো আছে ৬২৪ সিসি ক্যামেরা। পিলে চমকানো তথ্য হলো, এসব ক্যামেরার কেবল ৩৫টি এখন সচল। ৯৫টি অর্ধ-বিকল, বাদবাকি ৪৯৪টি পুরোপুরি অচল। সচিবালয়ের তিন ফটকে আছে চারটি ব্যাগেজ স্ক্যানার। এর সবটিই নষ্ট। এ ছাড়া ছয়টি আর্চওয়ের কোনোটাই কাজ করে না; সবই ‘মৃত’। খোদ সরকারি প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে এমন ভয়ংকর ‘বিকল কাহিনি’। এসব নষ্ট সরঞ্জামের তালিকা সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ প্রতিবেদনে তুলে ধরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। 

গেল ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লেগে ষষ্ঠ থেকে নবম তলায় থাকা পাঁচ মন্ত্রণালয়ের দপ্তর পুড়ে যায়। সরকারি ছুটির দিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এখনও জনমনে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। পাশাপাশি নানা কারণে সচিবালয়ে প্রবেশে কড়াকড়ি করেছে সরকার। এমন সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে সচিবালয়ের নিরাপত্তার দুর্দশার চিত্র সামনে এলো। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের শুরুতে বিভিন্ন ক্যাটেগরির ৭৪টি ক্যামেরাসহ আরও কিছু সরঞ্জাম কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে এতে চার প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানই শর্ত পূরণ করতে না পারায় মূল্যায়ন কমিটি কাউকে যোগ্য মনে করেনি। ফলে গত ১৯ মে বাতিল হয়ে যায় সেই দরপত্র। 
ওই সময় ফের দরপত্র আহ্বান ও নিরাপত্তা যন্ত্রপাতির হালনাগাদ চাহিদা সরেজমিন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের নিরাপত্তা শাখার উপসচিবকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়। এ কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রতিবেদনটি জমা দেয়। প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে সম্প্রতি এসব সরঞ্জাম কেনার জন্য সংশোধিত বাজেটে বাড়তি সাড়ে ১২ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। তবে এখনও অর্থ ছাড় করা হয়নি। 

জানা যায়, করোনা মহামারির পর সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তখন কয়েক দফায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার নিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনা হয়েছিল। লাগানো হয় ৭৪টি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সিসি ক্যামেরা। ৫টি গেটের ক্যামেরা ছিল প্রযুক্তির দিক থেকে উন্নত, যা কেনা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে। এসব ক্যামেরা নাইট ও ডে ভিশন। ফলে রাতের অন্ধকারেও মানুষ চেনা যায়। এ ছাড়া নতুন করে ৪টি ব্যাগেজ স্ক্যানার বসানোর কথা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। অথচ ২০২২ সালে একটি ব্যাগেজ স্ক্যানার জার্মানি থেকে আমদানি করা হয়। একই সঙ্গে প্রথমবারের মতো সচিবালয়ের ৪টি গেটে গাড়ি স্ক্যানার স্থাপন করা হয়েছিল। এসব স্ক্যানারও যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা। এত কম সময়ের ব্যবধানে এসব সরঞ্জাম কেন বিকল হলো– তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তার যন্ত্রপাতি কেনার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেওয়া উচিত। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জার্মানি থেকে সর্বশেষ প্রযুক্তির সিসি ক্যামেরা ও ব্যাগেজ স্ক্যানার আনা হলে এত দ্রুত তা নষ্ট হতে পারে না। তাই নতুন প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি কেনার আগে পুরোনো যন্ত্রপাতি যাচাই-বাছাই করে দেখা প্রয়োজন, কেন এত তাড়াতাড়ি বিকল হলো। 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক সাইয়েদ মাহমুদ উল্লা সমকালকে বলেন, ইনফ্রারেড ক্যামেরা মানুষের তাপমাত্রা থেকে ধরতে পারে। অন্ধকারের মধ্যেও মানুষকে চেনা যায়। একটা বিড়াল গেলেও দেখা যাবে। গুরুত্বপূর্ণ সব স্থানে প্রায়ই এ ক্যামেরা ব্যবহার হয়। এই ক্যামেরা ইমেজ ও ভিডিও নিতে পারে। এমন ক্যামেরা আমেরিকা, চীন থেকে আনা হলে অবশ্যই এসব কাজ করার কথা। এত অল্প সময়ে নষ্ট হতে পারে না। 

সিসি ক্যামেরার হাল
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে তিনটি কোম্পানির মোট ৬২৪টি ক্যামেরা সচিবালয়ের বিভিন্ন স্থানে বসানো আছে। এর মধ্যে সাইনেস্ট ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের ৪২০টি, ট্রেসার ইলেকট্রোকমসের ১৮৮টি ও মেরিটস টেকনোলজি লিমিটেডের ১৬টি ক্যামেরা রয়েছে। তবে ৬২৪টি ক্যামেরার মধ্যে বর্তমানে ৩৫টি ক্যামেরা যথাযথভাবে মনিটরে পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে। ৯৫টি সচল ক্যামেরা মনিটরে দেখা যায়, তবে এগুলো নেগেটিভ ভিউ হওয়ায় যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায় না। বাকি ৪৯৪টি পুরোপুরি নষ্ট।
কমিটির পর্যবেক্ষণে বলেছে, নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হচ্ছে সচিবালয়ের পাঁচটি প্রবেশ গেট ও সীমানা প্রাচীর। তবে বর্তমানে বসানো ক্যামেরার মধ্যে অধিকাংশই অচল থাকায় পর্যবেক্ষণে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া উন্নত প্রযুক্তির যুগে অ্যাডভান্স টেকনোলজি সংবলিত নতুন ক্যামেরা রয়েছে; যার মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ক্যামেরাগুলো ফেস ডিটেকশনের মাধ্যমে দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করতে পারে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা চিহ্নিত করতে পারে; যা সচিবালয়ের পাঁচটি গেট ও সীমানা প্রাচীরের জন্য প্রয়োজন। 

প্রস্তাবিত সিসি ক্যামেরা
সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। যাতে ক্যামেরা সচিবালয়ের পাঁচটি গেটে ও সীমানাপ্রাচীর-সংলগ্ন সব ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সচিবালয়ের পাঁচটি গেট এবং সব ভবন পর্যবেক্ষণের আওতায় আনার জন্য প্রস্তাবিত ৭৪টি ক্যামেরা কেনা যেতে পারে। এর মধ্যে সচিবালয়ের গেট ও বিভিন্ন ভবনের প্রবেশদ্বারে ৪৩ ফেস ডিটেকশন ক্যামেরা, সীমানা প্রাচীরে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য ২০টি বুলেট ক্যামেরা এবং বিভিন্ন ভবন ও আঙিনার ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে পর্যবেক্ষণের জন্য চারটি পিটিজেড ক্যামেরা বসানো প্রয়োজন। একই সঙ্গে দরকার সাতটি ডম ফেস রিকগনাইজেশন ক্যামেরা। 

ব্যাগেজ স্ক্যানার ও আর্চওয়ে সব অচল
বর্তমানে সচিবালয়ের পাঁচটি গেটের মধ্যে তিনটি গেটে মোট চারটি ব্যাগেজ স্ক্যানার রয়েছে। তবে সব স্ক্যানার অচল। কমিটির পর্যবেক্ষণে বলেছে, সচিবালয়ের ২ নম্বর গেটের মাধ্যমে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রবেশ করে। তাই এ গেটে একটি ব্যাগেজ স্ক্যানার বসানো প্রয়োজন। তাছাড়া সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটে (দর্শনার্থী প্রবেশ গেট) দুটি এবং ৫ নম্বর গেটে একটি ব্যাগেজ স্ক্যানার বসানো যেতে পারে। এ ছাড়া সচিবালয়ের নিরাপত্তায় বসানো ছয়টি আর্চওয়ের মধ্যে সবগুলোই এখন অচল। এ কারণে ছয়টি আধুনিক স্মার্ট আর্চওয়ে কেনা যেতে পারে।

লাগবে ভিডিও ডিসপ্লে
সচিবালয়ের নিরাপত্তা কন্ট্রোল রুমে ২৭টি মনিটর রয়েছে, এর একটি অচল। নিরাপত্তার জন্য বসানো ক্যামেরা যথাযথ পর্যবেক্ষণের জন্য আরও ১০টি মনিটর কেনা যেতে পারে। এ ছাড়া নিরাপত্তায় নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তির ৫০টি ওয়্যারলেস সেট কেনা প্রয়োজন। 

সচিবালয়ের সোমবারের চিত্র
গতকাল সচিবালয়ের এক নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশের সময় প্রতিবেদক দেখতে পান, দর্শনার্থী প্রবেশে বেশ কড়াকড়ি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যেসব সংবাদকর্মী ও দর্শনার্থীর তালিকা গেটে দেওয়া আছে, শুধু তাদেরই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। গেটে ব্যাগেজ স্ক্যানার ও আর্চওয়ের ব্যবহার দেখা যায়নি।

কারা কী বলছেন
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা সমকালকে বলেন, শুধু সচিবালয় নয়, দেশের অনেক জায়গায় নিরাপত্তা সচেতনতার অভাব রয়েছে। সর্বোচ্চ প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্রের নাজুক পরিস্থিতি সেটাই আবার প্রমাণ করল। এটা দুঃখজনক। শুধু সচিবালয় নয়, প্রতিটি সরকারি অফিসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার। 
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের পরিকল্পনায় নিরাপত্তার বিষয়টির অভাব রয়েছে। তার পরও ভালো দিক হচ্ছে, বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করেছে। তবে শুধু পর্যালোচনা করলেই হবে না। যেসব দুর্বলতা উঠে এসেছে, তা কাটিয়ে উঠতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। 
জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন সমকালকে বলেন, সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। কী কারণে এতদিন সেটা হয়নি, তা খুঁজে বের করার পাশাপাশি আগামীতে তা নিশ্চিত হওয়া উচিত। 

এ ব্যাপারে জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব ড.

নাসিমুল গনির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে সমকাল। তবে মোবাইল ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। একই বিভাগের এক যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগামী মার্চ নাগাদ সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত হবে, তখন টাকা পাওয়া গেলে সরঞ্জাম কেনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ সময়টায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার কী হবে– এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। 
জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) আতাউর রহমান সমকালকে বলেন, উপসচিবকে দিয়ে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে, এটা একটা ক্লু মাত্র। এর ওপর অনেক কাজ করা হবে। বুয়েটের শিক্ষক, পুলিশসহ যারা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, তাদের দিয়ে যাচাই-বাছাই করব। উপসচিবের কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে কি অর্থ বিভাগে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ বিভাগ এমন নয় যে, টাকা চাইলেই দিয়ে দেবে। খরচ করতে পারলেই শুধু টাকা পাওয়া যাবে। আতাউর রহমান বলেন, যেসব যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে, শুধু সেগুলোই কেনা হবে। বুয়েটের টেকনিক্যাল লোক দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে। যেগুলো অল্পদিন আগে কেনা, মেয়াদ থাকার পরও নষ্ট হয়েছে, সেগুলো স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কেনা হয়েছিল কিনা, দেখা হবে। কেনাকাটায় অনিয়ম হয়েছে কিনা, সেটা তদন্ত করে দেখা হবে। 

 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ফতুল্লায় দোয়া মাহফিল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ফতুল্লায় দোয়া মাহফিল ও গরীবদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে এনায়েত নগর ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে ধর্মগঞ্জ ইউনাইটেড ক্লাবে এই দোয়া মাহফিল ও কম্বল বিতরন করা হয়।

এনায়েত নগর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চলনায় এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম লিটনের তত্ত্বাবধানে সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেনের সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু। 

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী। 

প্রধান বক্তা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, যারা ভাবছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু লিখে গুজব ছড়িয়ে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন তাদের কে বলতে চাই আপনারা চিন্তা করবেন না আপনারা আবার ক্ষমতায় আসবেন। শেখের বেটি শেখ হাসিনা আজ নিজেই পালিয়ে গিয়ে পাশের রাস্ট্রে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে রেহিঙ্গা হিসেবে রয়েছেন।

এ দেশের মাটি মানুষের কথা চিন্তা করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া পালিয়ে যাননি। তারা সব সময় এদেশের মাটি ও মানুষের কথা চিন্তা করে গেছেন। কোন অন্যায়ের কাছে আপোষ করেন নি। 

তিনি আরো বলেন শেখ হাসিনা যেমন তাদের দলের কোন নেতাকে না বলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন ঠিক তেমনি নারায়ণগঞ্জের সেই আলোচিত গডফাদার  শামীম ওসমান ও তার কোন কর্মীকে না বলেই স্ব-পরিবারে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। হাসিনা আর তার সরকার প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ দেশে আসবেনা।  এ দেশের মানুষ হাসিনার লাশটি পর্যন্ত গ্রহন করবেনা।

প্রশাসন কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন,বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি বর্ষন ও হামলার সাথে জড়িত ফ্যাসিস্ট সরকারের সদস্যরা এলাকায় ঘুরে ফিরছে এমনকি হুমকি দিচ্ছি আপনারা তাদের কে গ্রেফতার করছেনা। যারা আজ দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছেন তাদের কে গ্রেফতার করার আহবান জানান।

তিনি বলেন, যারা ৫ আগস্টের পরে কবর স্থান মসজিদের জমি, ঝুট সন্ত্রাসী, ট্রাক স্ট্যান্ড,জমি জবর দখল করে মঞ্চে উঠে সাধু বক্তব্য দিয়েছেন তাদেরকে দল চিন্থিত করে তদন্ত করে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছেন। বাবার পর ছেলের বিরুদ্ধে ও ব্যবস্থা নিয়ে কমিটি ভেঙ্গে  দিয়েছেন।

কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার পর সেই ব্যক্তি এখন বলে বেড়াচ্ছেন তাকে নমিনেশন দেওয়া হবে তাই কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এগুলো মিথ্যা গুজব বলে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, তাকে ওয়ার্ডের কমিশনার বা মেম্বারের নমিনেশন দিবেনা।কারন দল জেনে গেছে তিনি মুখে বলেন এক করেন আরেক।

তিনি জাহাজ কেটে খেয়েছেন,তার ছেলে ঝুট ছিনতাই করেছেন,কবরস্থানের জমি দখল করে নিয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বাটপারি করছেন তা একন সকলেই জেনে গেছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা দ্রীঘ ১৬ বছরে যে আন্দোলন করেছি তা ৫ আগস্ট কিছুটা হলেও সফলতা পেয়েছে তবে পুরোপুরি সাফল্য আসেনি।

আমাদের নেতা তারেক রহমনা বলে আসছে আপনারা লুটতরাজ করবেন না। কিন্ত আমরা দেখছি যারা বিগত দিনে আন্দোলনে ছিলোনা তারাই আজ নেতৃত্ব গ্রহন নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। দলের সামনের কাতারে এসে তারা দাড়াচ্ছে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে যারা রাজপথে আন্দোলনে সংগ্রামে ছিলো। 

তিনি আরো বলেন সবাই সতর্ক থাকবেন, হাইব্রিড কোন নেতাকে মাঠে থাকতে দিবেন না। এ সকল হাইব্রিডরা ফ্যসিস্ট সরকারের দোসর,এরা গডফাদার শামীম ওসমানের লোক। তিনি আরো বলেন বিএনপির কোন লোকজন দিয়ে যেনো সাধারন কোন মানুষের ক্ষতি না হয়।  

ফ্যসিস্ট সরকারে ভোটে সাধারন জনগন ভোট কেন্দ্রে  না গিয়ে বিএনপিকে  নীরবে সমর্থন করে গেছেন। তাই এরাই হলো মূল শক্তি। তিনি বলেন আগামীতে আবারো আন্দোলন করতে হবে।বর্তমান সরকারকে আমরা সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি। নির্বাচনের জন্য যতোটুক সংস্কার করা প্রয়োজন ঠিক ততোটুক সংস্কার করে নির্বাচন দিন। আর তা না হলে জনগন আবারো মাঠে নামবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার,ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাকির হোসেন রবিন,ফতুল্লা থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আব্দুল খালেক টিপু,ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ সভাপতি আনিছুর রহমান,নারায়নগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি জুয়েল আরমান,ফতুল্লা থানা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকী।

এছাড়া অন্যানদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপি'র সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ,  প্রচার সম্পাদক  বাবুল সরদার, দপ্তর সম্পাদক নান্নু সরদার এনায়েতনগর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি -নাছির উদ্দিন রিপন,সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমীন খোকন,কোষাধক্ষ্য তৈয়ব ,যুগ্ম সম্পাদক আল-মমিন,দপ্তর সম্পাদক হাসান,২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজ উদ্দিন সিরাজ,সাধারণত সম্পাদক -আরিফুল ইসলাম মানিন,সাংগঠনিক সম্পাদনা খোকা,সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আকরাম।৩নংওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জহির, সাংগঠনিক সম্পাদক কে,এম ফারুক, সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ার, সহ-সভাপতি রঞ্জু, ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আক্কাস, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন,সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মিন্টু, সহ-সভাপতি সোহেল,৫নং বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রায়হান ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির, যুগ্ম সম্পাদক  লিটন সরদার,সহ-সভাপতি রফিক সহ-সাংগঠনিক আবুল বাসার,প্রচার সম্পাদক জাফর, এনায়েতনগর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির সরদার প্রমূখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ