বাংলাদেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভির বিস্তার ঠেকাতে বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সোমবার বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম সমকালকে এ তথ্য জানান। 

নির্দেশনায় এইচএমপিভির বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দরের যাত্রী, স্টাফ ও দর্শনার্থীদের মুখে মাস্ক রাখা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কারও মধ্যে জ্বর, কফ, শ্বাস ছোট হওয়ার মতো এইচএমপিভির লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের হেলথ সার্ভিসে জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনাকারী দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এবং যেসব দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী রয়েছে, সেসব দেশ থেকে যাত্রী আনার ক্ষেত্রেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিমানের ভেতর যদি কারও মধ্যে জ্বর, কফের মতো এইচএমপিভির লক্ষণ দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের হেলথ সার্ভিসে জানাতে হবে।

রোববার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত ব্যক্তি একজন নারী, যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায়। চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও রয়েছে। 

আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে স্বাস্থ্য ডেস্ক চালু: এদিকে প্রতিবেশী ভারতে এইচএমপিভি বাড়তে থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ডেস্ক চালু করা হয়েছে। সোমবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ডেস্ক চালু করেন জেলার ভারপ্রাপ্ত  সিভিল সার্জন ডা.

মো. শাখাওয়াত হোসেন। এ সময় ভারত থেকে আসা যাত্রীদের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ডেস্ক চালুর সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান। প্রাথমিকভাবে ভারত থেকে আসা যাত্রীদের নাম তালিকাভুক্ত করে শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা, যাত্রীদের মুখে মাস্ক পরা; সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ডা. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে অস্থায়ী মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এখানে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুই ধাপে চারজন স্বাস্থ্য সহকারী কাজ করবেন। প্রাথমিকভাবে করোনাকালীন যে সতর্কতাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছেনো হয়েছিল, সে সতর্কতাগুলোই এ ভাইরাসের ক্ষেত্রেও অবলম্বন করা হচ্ছে। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার খয়েরপুর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের হাওরে এই ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৫)। ইন্দ্রজিৎ উপজেলার কলমা ইউনিয়নের হালালপুর গ্রামের মৃত যতিন্দ্র দাসের ছেলে। স্বাধীনের বাবার নাম ইদ্রিস মিয়া; বাড়ি খয়েরপুর গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অষ্টগ্রামের হাওর এলাকায় বোরো ধান কাটার মৌসুম চলছে। প্রতিদিন কৃষকেরা ধান কাটতে বাড়ি থেকে হাওরে যান; ফেরেন সন্ধ্যায়। সকালে খাবার খেয়ে ইন্দ্রজিৎ ধান কাটতে যান। পরিবারের অন্য সদস্যের সঙ্গে স্বাধীনও যায় ধান কাটতে। সকাল নয়টার দিকে অষ্টগ্রামের আকাশ কালো হতে থাকে। কিছুক্ষণ পর ধমকা হাওয়া বইতে থাকে। বিরূপ আবহাওয়ায় অনেক কৃষক ধান কাটা রেখে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু ইন্দ্রজিৎ ও স্বাধীন হাওরে ছিলেন। সকাল পৌনে ১০টার দিকে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি শুরু হয়। সামান্য শিলাও পড়ে। তখন বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়।

বজ্রপাতে দুজন কৃষকের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে ইন্দ্রজিৎ ও স্বাধীনের মৃত্যু হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ