খেলাপি ঋণের মামলায় পাট ব্যবসায়ীকে না পেয়ে তাঁর মেয়ে, জামাই ও ব্যবস্থাপককে ১১ ঘণ্টা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখে পুলিশ। এ সময় গোয়েন্দারা সাদা পোশাকে ছিল। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এটা আইন ও মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

নগরীর নিতাইগঞ্জ এলাকার শারমিন জুট বেলার্সের মালিক আবদুল আলী। তাঁর আইনজীবী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন জানান, আবদুল আলী নানা কারণে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কমার্স ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখায় ঋণখেলাপি হন। আদালত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা রয়েছে। তাই তিনি পালিয়ে রয়েছেন। অন্য সম্পত্তি বেচে দেনা শোধের চেষ্টা করছেন। ঋণের বিপরীতে সম্পত্তি বন্ধক রয়েছে ব্যাংকের কাছে। তাঁর বাড়ি নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের জিমখানা এলাকায় সিটি করপোরেশনের উল্টো দিকে। পুলিশ একাধিকবার এই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে পায়নি। না পেয়ে ডিবি সোমবার ভোর ৫টায় ঢাকার বাড্ডায় তাঁর মেয়েজামাই এ টি এম পারভেজ সাজ্জাদের বাসায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে শারমিন আক্তার, তাঁর স্বামী এ টি এম পারভেজ সাজ্জাদ ও নগরীর দেওভোগের বাসা থেকে শারমিন জুট মিলের ব্যবস্থাপক জামান আহমেদকে আটক করা হয়। তাদের নগরীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবস্থিত ডিবি দপ্তরে আটক রাখা হয়। বিকেল ৪টায় তাদের মুচলেকা রেখে ছাড়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো পরোয়ানা নেই। পুলিশ সাদা পোশাকে কোথাও অভিযান চালাতে পারবে না বলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ঢাকা দক্ষিণের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন। বাবার অপরাধে মেয়ে, জামাই ও ব্যবস্থাপককে আটক করে আনা যায় না।’

ঘটনার ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘আবদুল আলী মোটা অঙ্কের ঋণখেলাপি। তাঁকে ধরার জন্য ওপর মহলের চাপ রয়েছে। তাই তাঁর ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে এই তিনজনকে আনা হয়েছিল। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ পরীক্ষা, প্রস্তুতিতে যা যা করতে পারেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির (এনরোলমেন্ট) এমসিকিউ পরীক্ষা ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। এই পরীক্ষায় প্রার্থীদের জুতসই প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

এমসিকিউ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সাকল্যে সময় আছে প্রায় দুই সপ্তাহের মতো। এর মধ্যে সাত বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। অনেক পরীক্ষার্থী শেষ সময়ে এসে অগোছালো ও পরিকল্পনাবিহীন পড়াশোনা করেন। কার্যত বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির এমসিকিউ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার হার বেশি। তবে বুদ্ধিদীপ্ত ও কৌশলী প্রস্তুতি আপনাকে অনেকের চেয়ে এগিয়ে রাখবে।

সাধারণত আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ পরীক্ষা তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বহুনির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১০০ নম্বরে। প্রশ্ন আসে ৭টি বিষয়ে। ১০০ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ নম্বর পেলেই আপনি উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তবে নেগেটিভ নম্বর থাকায় পরীক্ষার্থীদের অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

শুরুতেই তামাদি আইন ১৯০৮, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এবং বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২-এর মতো ছোট আইনগুলো পড়ে ফেলতে হবে। সিলেবাসের সাত বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে সহজ এই আইনগুলো। তবে সহজ হলেও গুরুত্ব অনেক। তিনটি আইন থেকে মোট ২৫ নম্বরের প্রশ্ন আসবে। পরীক্ষার্থীরা চাইলে এসব বিষয় থেকে পুরো নম্বরই পাওয়া সম্ভব। অর্থাৎ পাস মার্কের অর্ধেক নম্বর। যখন দেখবেন পাস মার্কের অর্ধেক নম্বর হাতের তালুর মধ্যে, তখন আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বেড়ে যাবে। বাকি বিষয়গুলো দুশ্চিন্তামুক্তভাবেই প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

তামাদি, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ও বার কাউন্সিল অর্ডার

তামাদি আইন ১৯০৮ একটি পদ্ধতিগত আইন। আইনটি দেওয়ানি মোকদ্দমা এবং ফৌজদারি মামলার আপিলের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয়। এতে ৩২টি ধারা ও ১৮৩টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। ধারাগুলোর মধ্যে তামাদি মেয়াদ শেষে মামলা দায়ের, আদালত বন্ধ থাকা অবস্থায় তামাদির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে করণীয়, বিলম্ব মওকুফ, আইনগত অপারগতা, তামাদি গণনা, যেভাবে তামাদি মেয়াদের গণনা করতে হয়, এখতিয়ারবিহীন আদালতে মামলা দায়ের, কার্যধারা স্থগিত থাকার সময় বাদ দেওয়ার নিয়ম, প্রতারণার ফলাফল, লিখিত প্রাপ্তিস্বীকারের ফলাফল, দেনা পরিশোধের ফলাফল, অবিরাম চুক্তিভঙ্গ, সুখাধিকার অর্জন ও সম্পত্তির অধিকার বিলুপ্তিসংক্রান্ত টপিকগুলো ভালো করে পড়তে হবে। এ ছাড়া ৯১, ৯২, ১০৩, ১১৩, ১১৪, ১২০, ১৪২, ১৫০, ১৫৭, ১৬৯, ১৮২ অনুচ্ছেদগুলো শেষবারের মতো চোখ বুলিয়ে যেতে হবে। ঘুরেফিরে এসব ধারা ও অনুচ্ছেদ থেকেই প্রশ্ন আসে।

আরও পড়ুনডিএনসিসিতে ১৫৮ পদে নিয়োগে আবার বিজ্ঞপ্তি২২ ঘণ্টা আগে

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭–কে ন্যায়পরায়ণতা আইনও বলা হয়। মূলত এটি প্রতিকারমূলক বা তত্ত্বগত আইন। মাত্র ৫৭টি ধারা নিয়ে গঠিত আইনটি। এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার, স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধার, অস্থাবর সম্পত্তি দখল পুনরুদ্ধার, যেসব চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যেতে পারে, যেসব চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যায় না, কতিপয় ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ মঞ্জুরের ক্ষমতা, অরেজিস্ট্রিকৃত চুক্তিপত্র কার্যকরযোগ্য নয়, সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনে ডিক্রি প্রদান; যাদের পক্ষে চুক্তি কার্যকর করা যায়, যাদের পক্ষে চুক্তি কার্যকর করা যায় না; দলিল সংশোধন, চুক্তি রদ, দলিল বাতিল, ঘোষণামূলক মামলা, চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা, কখন কখন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং নেতিবাচক চুক্তি পালন করার জন্য নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত ধারাগুলো পড়লেই হবে।

ছবি: প্রথম আলো/এআই জেনারেটেড

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ রিট নিষ্পত্তিতে বেঞ্চ নির্ধারণ হাইকোর্টে
  • তবে কি আমির খানের বদলে রাজকুমার রাও
  • জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি–সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত
  • নারী চিকিৎসক দিয়ে নারীর মরদেহের ময়নাতদন্ত: নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রুল
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিট
  • যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের নিশানায় কারা, কী তাঁদের অপরাধ
  • সিজেএম আদালত ভবন নির্মাণে গতি নেই
  • ওয়াক্ফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিতেও রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে ভারতে
  • আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ পরীক্ষা, প্রস্তুতিতে যা যা করতে পারেন
  • মহানগরী জামায়াতের সাংগঠনিক আইনজীবী থানার ঈদ পূর্নমিলনী অনুষ্ঠিত