বাংলাদেশি শ্রমিক ও কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা (একবার ভিসা নিয়ে একাধিকবার ভ্রমণের সুবিধা) প্রদানে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এটা হলে বাংলাদেশি শ্রমিকেরা প্রয়োজন অনুযায়ী সহজে দেশে ফিরতে পারবেন।

ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুহাদা ওসমান গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে এ আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস। গত বছরের মে মাসে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মালয়েশিয়ায় কাজে যোগ দিতে না পারা ১৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিকের দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান তিনি।

হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুহাদা ওসমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বিষয়টি নিয়ে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর কুয়ালালামপুরে বৈঠক করেছে। আজ মঙ্গলবার আবারও বৈঠকে বসার কথা রয়েছে এই কমিটির।

বাংলাদেশি শ্রমিকদের পরের দলটি যাতে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারে, সে লক্ষ্যে এই প্রক্রিয়া মালয়েশিয়া দ্রুত এগিয়ে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক ইউনূস। এ সময় তিনি গত বছরের অক্টোবরে ঢাকায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি উল্লেখ করেন।

এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আরও জানান, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে এ বছর রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের উদ্যোগে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে। এতে আসিয়ানের সমর্থন প্রয়োজন হবে।

মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ ও কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরে হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুহাদা ওসমানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এতে বাংলাদেশের যুবশক্তিকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।

অধ্যাপক ইউনূস হাইকমিশনারকে আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, আপনার বাংলাদেশে অবস্থানকালে অর্থনীতি এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে।’

জাকসু নির্বাচনের তফসিল ১ ফেব্রুয়ারি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের জন্য আগামী ১ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ তথ্য জানান তিনি।

উপাচার্য কামরুল আহসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ (পথরেখা) প্রকাশ করেছে। ঘোষণা অনুসারে, নির্বাচনের তফসিল ১ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হবে। এ লক্ষ্যে গত শুক্রবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে জাকসু নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পরামর্শ চান উপাচার্য।

জাকসু নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় যদি চায়, তাহলে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। উপাচার্যকে তিনি বলেন, ‘যদি আপনারা চান, তাহলে জাকসু নির্বাচন আয়োজন করুন। নির্বাচনটি আপনাদের নেতৃত্বে আয়োজন করুন।’ এ সময় গণ–অভ্যুত্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন অধ্যাপক ইউনূস।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ