মেয়েসহ বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ
Published: 13th, January 2025 GMT
দুর্নীতি মামলায় সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তাঁর বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের এপিএস মনির হোসেনের স্থাবর সম্পদসহ তাঁর আটটি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া পৃথক মামলায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।
গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ জাকির হোসেন মামলাগুলোর পৃথক শুনানি নিয়ে এসব আদেশ দেন। এদিকে অপর একটি মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে দুদকের আবেদন শুনানির জন্য আগামী ২০ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।
গতকাল পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর ও তাঁর মেয়ের আয়কর নথি জব্দের আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম। আদালতে শুনানি করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি বেনজীরের স্ত্রী জিশান মীর্জা ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বেনজীর ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বেনজীর ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২ কোটি ৬২ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তাঁর স্ত্রী ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১৬ কোটি টাকার তথ্য গোপন করেছেন। তাদের বড় মেয়ে পৌনে ৯ কোটি টাকার এবং দ্বিতীয় মেয়ে ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়। এদিকে, গত ১ জানুয়ারি দুর্নীতির মামলায় সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ। এ মামলায় গতকাল তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়।
এ ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস মনির হোসেনের বিরুদ্ধে গত ৯ অক্টোবর মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক নাছরুল্লাহ হোসাইন। ওই মামলায় গতকাল তাঁর সম্পদসহ আটটি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ চাওয়া হয়।
গতকাল দুদকের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ আসামির উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার শুনানির জন্য আগামী ২০ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কোম্পানির আয়কর রিটার্নের সময় বাড়ল এক মাস
কোম্পানি করদাতাদের কর জমার সময় বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। বৃহস্পতিবার এক আদেশে কোম্পানির ক্ষেত্রে রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়িয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ১৬ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে।
আয়কর আইন অনুযায়ী, ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার রিটার্ন জমা শেষ সময় ৩০ নভেম্বর। বোর্ড চাইলে এরপর একক সিদ্ধান্তেই আরও এক মাস সময় বাড়াতে পারে।
অপর এক আদেশে ব্যক্তি করদাতাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। দুই দফা সময় বাড়ানোর পর শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ নিয়ে তৃতীয় দফায় আজ তা বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে এনবিআরের কর বিভাগ।
এর আগে ২৯ ডিসেম্বর ও ১৭ নভেম্বর পৃথক দুটি আদেশে দুই দফা এক মাস করে সময় বাড়ায় এনবিআর। বর্তমানে এক কোটির বেশি কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাঁদের মধ্যে প্রতিবছর ৪০ লাখের বেশি টিআইএনধারী রিটার্ন দেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়াতে ইতোমধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে ‘সবুজ সংকেত’ দেন। এরপর এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দুই দফায় দুই মাস সময় বাড়িয়েও প্রত্যাশা অনুযায়ী রিটার্ন জমা পড়েনি। তা ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন। যেমন– সার্ভারে অতিরিক্ত চাপ, সংশোধনী রিটার্নের সুযোগ না থাকা, রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা, রিটার্নের ফাইনাল প্রিভিউ ডাউনলোডে সমস্যা। পাশাপাশি কর আইনজীবীরা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। সব দিক বিবেচনা করেই ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের জন্য তৃতীয় দফায় ১৫ দিন সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
এনবিআর থেকে জানা গেছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ লাখেরও বেশি ব্যক্তি শ্রেণির করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের আশা ছিল, প্রায় ৫০ লাখ রিটার্ন জমা পড়বে। কিন্তু গত ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৪ লাখের কিছুটা বেশি রিটার্ন জমা পড়েছে।