বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বয়ে যাওয়া অভিন্ন নদ–নদীগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। আন্তর্জাতিক নদীপ্রবাহ নিয়ে জাতিসংঘের যে চুক্তি রয়েছে, বাংলাদেশের উচিত তাতে স্বাক্ষর করা। ওই চুক্তির আলোকে দুই দেশের অভিন্ন নদ–নদীগুলোর সমস্যার সমাধান করতে হবে।

আজ সোমবার রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য সেন্টার ফর ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিসার্চ অ্যান্ড সার্ভিসেস (সিআইআরএস) আয়োজিত সেমিনারের বিষয় ছিল ‘ব্রেকিং দ্য আইস: ডায়ালগ অন ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটার শেয়ারিং বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া’।

সেমিনারে বক্তারা যৌথ নদী বিষয়ে সব ধরনের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দল তৈরির সুপারিশ করেন। দলটি ওই নদীগুলোর তীরবর্তী জনপদের কৃষি, পরিবেশ, পানি ও মানুষের জীবিকার পরিবর্তনগুলো নিয়ে কাজ করবে।

সেমিনারে জাতিসংঘের উন্নয়ন গবেষণার প্রধান অর্থনীতিবিদ নজরুল ইসলাম প্রেজেন্টেশন দেন। তিনি নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে অগ্রাধিকার দিয়ে জাতিসংঘের নদীর নন–নেভিগেশন (নৌযান চলাচলের সুবিধার বাইরে অন্যান্য উপযোগিতা) বিষয়ক আইনের আওতায় হওয়া চুক্তিতে সই করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। ওই চুক্তির আওতায় তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন নদ–নদীবিষয়ক সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দেন।

নদী ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞ ড.

মনিরুল কাদের মির্জা বিশ্বের অভিন্ন নদ–নদীগুলো নিয়ে হওয়া বিভিন্ন চুক্তির উদাহরণ টেনে বলেন, এসব চুক্তির আলোকে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী নিয়ে চুক্তি হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বন্যা, পানিপ্রবাহ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে যৌথ উদ্যোগ হওয়া জরুরি।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন সিভিল ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য তানভীর হারুন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক শফিউল ইসলাম। তিনি যৌথ নদীগুলোর সমস্যার সমাধানে বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক বিষয়গুলোকে একত্র করে পরিকল্পনা করার কথা বলেন। দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়ে নিয়মিত আলোচনার ওপর জোর দেন তিনি।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ