জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাস: দুর্নীতির ‘মূল হোতা’ প্রকল্প পরিচালক
Published: 13th, January 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্পের উপ-প্রকৌশলী মো. আমিরুল ইসলাম নতুন প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্পের অনিয়ম, শিক্ষা ছুটি ছাড়াই পিএইচডি গবেষণা করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
তবে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও লোক না পাওয়ার অযুহাত এনে তাকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জবি উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আমিরুল ইসলাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ- প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় শিক্ষা ছুটি ছাড়াই ডুয়েট থেকে রেগুলার মাস্টার্স করেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা না মেনে শিক্ষা ছুটি ছাড়াই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পিএইচডি করছেন বলে জানা গেছে।
তিনি টেন্ডার ছাড়াই প্রকৌশল দফতরকে পাশ কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বড় বড় কাজ ও কেনাকাটা সম্পন্ন করতেন। তিনি তার দুর্নীতি জায়েজ করার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসর সাবেক কোষাধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার ব্যক্তিগত কক্ষে একসঙ্গে নামাজ পড়া, ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত করা, যাত্রাবাড়ীতে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া- এসবই ছিল তার কাজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সূত্র থেকে আরও জানা গেছে, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্পের যাবতীয় দুর্নীতির ‘মূল হোতা’ এ আমিরুল ইসলাম। কেননা প্রকল্প অফিসের একমাত্র স্থায়ী প্রকৌশল প্রতিনিধি হিসেবে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান তাকে প্রকৌশল দপ্তর থেকে প্রকল্পের বিশেষ দায়িত্বে নিয়োগ প্রদান করেন।
তিনি প্রকল্পের প্রকৌশল প্রধান (২০০ একর জায়গায় রাস্তা তৈরির কারিগর ও একমাত্র পাহাড়াদার) হয়ে কাজ বাস্তবায়ন করেন। আবার তিনিই প্রকল্পের টপ সুপারভিশন কমিটির প্রকৌশল সদস্য সচিব হয়ে কাজের মান যাচাই করেছেন গত ৬ বছর ধরে। তিনি নিজেই কাজ করেছেন, আবার সেই কাজের সুপারভিশনের দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন। এ ক্ষেত্রে কে কার কাজ বুঝে নিয়েছেন, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
সদস্য সচিব নিয়োগ পেয়েই নিজেকে অপরিহার্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য পরামর্শকের কাজও নিজেই সম্পন্ন করতেন। সব ড্রয়িং ডিজাইন (ডিজিটাল কপি করে) নিজের আয়ত্তে নিয়ে পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে বাউন্ডারি ওয়াল ডিজাইন করেন। এ সুযোগে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের অধিগ্রহণকৃত সব নিলামের খোয়া বাউন্ডারি ওয়ালে ব্যবহার ও তার সুযোগ তৈরি হয়।
এছাড়াও লেকে অনিয়ম, পুকুর, ঘাটলা, বালু ভরাট কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ, অতিরিক্ত ইস্টিমেইট, বিল সুপারিশ, প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার যাবতীয় কাজের যৌথ প্রযোজক উপ-প্রকৌশলী তিনি।
প্রকৌশলী আমিরুল ইসলামের এসব দুর্নীতির মূলখুটি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কথা বলে অডিটোরিয়ামে কান্নাকাটি করা সেই মিজানুর রহমানের শিক্ষক ও ফ্যাসিবাদী আমলে দুইবারের সাবেক জবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া। তিনি আমিরুলকে তার ছেলে বলে সম্বোধন করতেন। এ কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কাজের সঙ্গে জড়িয়েছেন, সেখানেই অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ আমিরুলের বিরুদ্ধে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ এর প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করায় গত ৯ জানুয়ারি পরবর্তী প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় আমিরুল ইসলামকে। পদত্যাগ করা সৈয়দ আলীর বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ।
সাবেক প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাসের প্রকল্প দেখভাল করছিলেন। গত ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
তদন্ত কমিটিতে বলা হয়েছিল, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, কেমিক্যালস ও গ্লাসওয়ার মালামালের বিষয়ে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৯০০ টাকার স্থলে ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮৫০ টাকা নথিতে দিয়েছেন তিনি।
নতুন দায়িত্বে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো.
এছাড়া সাবেক জবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া ও সাবেক প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসায় তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরগুলোও বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের হাতে এখন অন্য কোনো বিকল্প নেই। কাজটি তো চালাতে হবে। তাই সাময়িকভাবে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর দক্ষ প্রকল্প পরিচালক হিসেবে বগুড়ার একজনকে পেলেও শিক্ষার্থীদের বিশৃঙ্খলা করার কারণেই নাকি তাকে দায়িত্বে আনা হয়নি। ইউসিজি থেকে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমরা অনুমতি চেয়েছি।”
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্দোনেশিয়ার আইপিএস বৃত্তি, সুযোগ স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডিতে
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৃত্তি নিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন ও ইউরোপের প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। তবে পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় প্রতি আগ্রহও লক্ষ্যণীয়। সেই ইন্দোনেশিয়ার একটি বৃত্তি হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল প্রায়োরিটি স্কলারশিপ–আইপিএস। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সম্পূর্ণ অর্থায়িত আইপিএস বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ বৃত্তির আওতায় দেশটির মুহাম্মাদিয়াহ ইউনিভার্সিটি অব সুরাকার্তায় (ইউএমএস) পড়াশোনার সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা। বৃত্তি প্রোগ্রামটি আগামী সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হবে।
সুযোগ-সুবিধা
আইপিএস বৃত্তির আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ টিউশন মওকুফ পাবেন
জীবনযাত্রার ভাতা হিসেবে শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে ১৭ লাখ ৫০ হাজার আইডিআর পাবেন
বই ভাতা হিসেবে প্রতি মাসে মিলবে ৫০ হাজার আইডিআর
স্বাস্থ্যবিমা
বিমানে যাতায়াতের টিকিট
পড়াশোনার বিষয় কী কী—
শিক্ষা অনুষদ, অর্থনীতি ও ব্যবসা অনুষদ, আইন অনুষদ, প্রকৌশল অনুষদ, ফার্মেসি অনুষদ, মনোবিজ্ঞান অনুষদ, ভূগোল অনুষদ, ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, স্বাস্থ্য অনুষদ, যোগাযোগ ও তথ্যবিজ্ঞান অনুষদ।
আরও পড়ুনইউনিভার্সিটি অব আলবার্টায় সম্পূর্ণ অর্থায়নের বৃত্তি, স্নাতক–স্নাতকোত্তর–পিএইচডিতে সুযোগ০৫ এপ্রিল ২০২৫আবেদনের প্রয়োজনীয় তথ্যছবি
একাডেমিক সার্টিফিকেট
একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
ভাষা সার্টিফিকেট
বৈধ পাসপোর্ট
একাডেমিক সুপারিশপত্র
মোটিভেশন লেটার
তত্ত্বাবধায়কের সুপারিশপত্র
মেডিকেল রিপোর্ট।
আরও পড়ুনজার্মানিতে ফ্রি ফ্রেডরিখ স্টিফটাং বৃত্তি, ১২০০ ইউরোর সঙ্গে মিলবে স্বাস্থ্যবিমাও ০৩ জুলাই ২০২৩আবেদনের যোগ্যতাইন্দোনেশিয়ার নাগরিকত্ব নেই, এমন যেকোনো দেশের শিক্ষার্থী এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন
স্নাতকের জন্য আবেদন করতে উচ্চমাধ্যমিকের সনদ
স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতকের সনদ
পিএচডির জন্য স্নাতকোত্তরের সনদ থাকতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি: আবেদনের পদ্ধতিসহ আবেদনের বিস্তারিত তথ্য মিলবে এই লিংকে। এ লিংকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন আগ্রহীরা।
আবেদনের শেষ তারিখ ১৫ মে, ২০২৫।
আরও পড়ুন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিত২১ এপ্রিল ২০২৫