১৮ বছর বয়সী এক তরুণীকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিতে কেন তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই তরুণীকে ২৬ জানুয়ারি আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। তরুণীকে বেআইনি আটক রাখার অভিযোগ নিয়ে তাঁর বন্ধু হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিক চলতি মাসে রিটটি করেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।

রিট আবেদনকারীর আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ১৮ বছর বয়সী তরুণী বাংলাদেশি নাগরিক, আর রিট আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক (২২)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটির পরিচয় হয়। মেয়েটি কক্সবাজারে থাকতেন। পরিবারকে না জানিয়ে পড়াশোনার জন্য মেয়েটি গত ডিসেম্বরে ঢাকায় চলে আসেন। এদিকে মেয়েটির সন্ধান পেতে তাঁর বাবা কক্সবাজার থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। পরবর্তী সময়ে মেয়েটি তাঁর ওই বন্ধুকে (যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক) নিয়ে ঢাকায় একটি বেসরকারি আইনি সহায়তাপ্রদানকারী সংস্থায় যান। সেখানে গত ১০ ডিসেম্বর উভয়ের (মেয়েটি ও তাঁর অভিভাবক) মধ্যে মধ্যস্থতা হয়। তবে মধ্যস্থতার সিদ্ধান্ত অনুসরণ না করে মেয়েটির বাবা তাঁকে নিয়ে কক্সবাজারে চলে যান। মেয়েটির বন্ধু (মার্কিন নাগরিক) গত মাসের শেষ দিকে জানতে পারেন যে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই মেয়েটিকে তাঁর বাবা বিভিন্ন ধরনের মানসিক ওষুধ সেবনে বাধ্য করেছিলেন। এ অবস্থায় প্রতিকার পেতে হাইকোর্টে রিট করেন মেয়েটির বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের ওই নাগরিক।

আদেশের বিষয়ে রিট আবেদনকারীর (যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক) আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ বলেন, হাইকোর্ট ওই তরুণীকে ২৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় আদালতে উপস্থিত করতে তাঁর অভিভাবককে নির্দেশ দিয়েছেন। কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসি, মেয়েটির অভিভাবকসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদার খালাসের রায় বহাল

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বহুল আলোচিত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

সোমবার (৩ মার্চ) সকালে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ গত মাসে লিভ টু আপিল করে। আবেদনের বিষয়ে উল্লেখ করে ২৩ ফেব্রুয়ারি সময়ের আরজি জানান দুদকের আইনজীবী। এরই পরিপরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের আপিল বিভাগ বিষয়টি ‘নট টুডে’ (আজ নয়) রাখেন। ওইদিন আদালত বলেন, এক সঙ্গে শুনানি হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানির জন্য কজলিস্টে ওঠে।

মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এর আগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ছিল। ওইদিন আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে বিষয়টি উল্লেখ করে দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, দুদক লিভ টু আপিল করেছে। একসঙ্গে শুনানির জন্য সময়ের আরজি জানান তিনি।

এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। পরে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের সঙ্গে দুদকের করা লিভ টু আপিল রোববার (২ মার্চ) আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসবে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া এবং অপর দুজনের করা পৃথক আপিল মঞ্জুর করে গত ২৭ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করা হয়। মামলা থেকে খালাস পান খালেদা জিয়া ও অপর দুজন। এই দুজন হলেন হারিস চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম ও সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ ফেব্রুয়ারি মাসে লিভ টু আপিল করে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি দুদক একটি লিভ টু আপিল করে। এই দুই লিভ টু আপিলের ওপর এখন আপিল বিভাগে একসঙ্গে শুনানি হতে যাচ্ছে।

দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, ‘দুদকের আবেদনটি কার্যতালিকায় ছিল না। তাই রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের সঙ্গে ট্যাগ করে একসঙ্গে শুনানির জন্য আরজি জানিয়ে সময় চাওয়া হয়।’

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয় অপর আসামিদের।

বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ডের আদেশ স্থগিত করেন।

এর ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেন তার আইনজীবীরা। আপিল শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে মামলার পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরির জন্য অনুমতি চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদন গত বছরের ৩ নভেম্বর মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। শুনানি শেষে এই আপিল মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।

এনজে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাঁদতে কাঁদতে কামাল মজুমদার বলেন, ‘আর রাজনীতি করব না, আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি নিয়েছি’
  • রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা কেন প্রণয়ন করা হবে না: হাইকোর্ট
  • ‘এমিলিয়া পেরেজ’ নয়, পুরস্কার জিতল ব্রাজিলের সিনেমা
  • জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে খালাসের রায় বহাল
  • চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদার খালাসের রায় বহাল
  • ত্বকী হত্যার বিচার শুরু করার দাবিতে ১৫ বিশিষ্টজনের বিবৃতি
  • খালেদা জিয়ার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি সোমবার
  • সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মরদেহ উদ্ধার
  • কলাবাগানে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মরদেহ উদ্ধার
  • লোকমান খালাস, মে মাসে মোহামেডানের নির্বাচন