যানজটমুক্ত নারায়ণগঞ্জের দাবিতে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। 

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব এবং  সমাবেশ পরিচালনা করেন নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রানী সরকার। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত কয়েক মাস যাবত নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অসহনীয় যানজটের প্রেক্ষিতে  নারায়ণগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে  সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে যানজট কমানো ও উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

ট্রাফিক পুলিশের অব্যবস্থাপনা, নির্দিষ্ট বাসস্টপেজে যাত্রী ওঠানামা না করানো, মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও তার সহোযোগিদের চাঁদাবাজি, মুল রাস্তায় যত্রতত্র পার্কিং ও রাস্তার উপর দোকান বসিয়ে নগরীর মুল শহর গুলোর পুরো পরিবহন ব্যবস্থাই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, এর ফলে ঘন্টার পর ঘন্টা মানুষের অমূল্য সময় নষ্ট হচ্ছে। এই অব্যবস্থাপনা দূর করতে অবিলম্বে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় যানজট কমানো ও উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশের সভাপতি নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব  বলেন, রাস্তায় ফুটপাতে ময়লার গাড়ি যত্রতত্র রেখে রাস্তাকে সংকীর্ণ থেকে আরও সংকীর্ণতর করে ফেলা হচ্ছে। ট্রাফিক আইন অমান্য করার ফলে রাস্তার স্বাভাবিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে।

এ ছাড়া চালকের অদূরদর্শিতা, শহরমুখী মানুষের স্রোত, অপ্রশস্ত রাস্তা প্রভৃতি বিষয়ও যানজটের অন্যতম কারণ। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, রাস্তার স্বল্পতা, ব্যক্তিগত গাড়ি বৃদ্ধি, ফুটপাত ও রাস্তা দখল, গণপরিবহনের অব্যবস্থাপনা এবং সমন্বয়হীনতা-এসব মিলে এই যানজট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

একটি মেগাসিটিতে শহরের আয়তনের ২৫ শতাংশ রাস্তা থাকতে হয়। এসব সড়কের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আবার পার্কিং ও হকারদের দখলে থাকে। শহরের হাতে গোনা কয়েকটি সড়ক ছাড়া বেশির ভাগ সড়কের ফুটপাত দিয়েই হাঁটার জো নেই।

পরিবহন কর্তৃপক্ষ, ট্রাফিক পুলিশ, বিআরটিএসহ নানা সংস্থার কার্যক্রম এর সঙ্গে জড়িত।  যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে, অতিরিক্ত প্রাইভেট কারের উপস্থিতি, রাস্তার যানবাহনের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রাইভেট কার, মোট রাস্তার ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ। দীর্ঘক্ষণ গাড়ির ইঞ্জিন চালু থাকার ফলে নগরীর বায়ু দূষিত হচ্ছে। ফলে অ্যাজমা, হাঁপানিসহ নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।  

সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা,  সিদ্ধিরগঞ্জ থানার যগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান , মহানগর কমিটির সমাজকল্যান সম্পাদক মোঃ বকুল মিয়া, প্রচার সম্পাদক মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, মহানগর কমিটির সদস্য মোঃ শাহজালাল, নারী সংহতি'র আহ্বায়ক নাজমা বেগম, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক  আব্দুলাহ আল মামুন প্রমুখ। 

.

উৎস: Narayanganj Times

এছাড়াও পড়ুন:

বিশেষ শিশুদের পাশে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ‘ভিন্নতা নয়, সম্ভাবনার প্রতীক অটিজম’

১৮তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সহানুভূতির এক উষ্ণ বার্তা। ‘তারা আলাদা, তবে আমাদেরই মতো’-এই চেতনায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠান।

সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।

তার মানবিক ভাষণে উঠে আসে বিশেষ শিশুদের প্রতি সমাজের দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা।“ তারা কোনভাবেই সমাজের বোঝা নয়,” বললেন জেলা প্রশাসক। “তাদের মাঝেও আছে সম্ভাবনার আলো। আমাদের দায়িত্ব তাদের পাশে দাঁড়ানো, সাহচর্য ও সহমর্মিতায় তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করে দেওয়া।”

ডিসি আরও বলেন, “সূর্যের যেমন তাপ না থাকলে তার মূল্য নেই, তেমনি মানবতাহীন সমাজও মূল্যহীন। তাই মানবতা দিয়েই বদল আনতে হবে দৃষ্টিভঙ্গির।”

রালিটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।  রেলিতে অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন) মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী, সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আসাদুজ্জামান সরদারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন এনজিও, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অটিজম পরিবারের সদস্যরা।

আলোচনা সভা শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয় ১১ জন অটিজম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাঝে। জেলা প্রশাসক নিজ হাতে উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেন এই সহায়ক যন্ত্রটি। উপস্থিত অনেকেই চোখের জল লুকাতে পারেননি সে সময়।

“এই সন্তানরা সমাজের সম্পদ। যদি আমরা পাশে দাঁড়াই, সঠিক সুযোগ দিই তবে তারাও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে,” বলেন জেলা প্রশাসক। তিনি সমাজের বিত্তবান ও সচেতন মানুষদের অটিজম আক্রান্ত শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

এই কর্মসূচি শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং একটি মানবিক বার্তা ভিন্নতাই যে সৌন্দর্য, আর সহানুভূতিই যে প্রকৃত উন্নয়নের মূল ভিত্তি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর থানা (মহানগর) জাসাস’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন
  • স্ত্রীকে হত্যার পর ছুরি হাতে লাশের পাশে বসেছিলেন রব মিয়া
  • পেশাজীবী গাড়িচালকদের রিফ্রেশার প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
  • আড়াইহাজারে গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা, স্বামী আটক
  • নারায়ণগঞ্জে আগুনে ঝুটের গুদাম ও এমব্রয়ডারি কারখানা পুড়ে গেছে
  • আ’লীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে জাকির খানের মিছিল ও সমাবেশ
  • আরসা প্রধান আতাউল্লাহসহ পাঁচ সহযোগী রিমান্ড শেষে কারাগারে  
  • বিশেষ শিশুদের পাশে নারায়ণগঞ্জ ডিসি ‘ভিন্নতা নয়, সম্ভাবনার প্রতীক অটিজম’
  • রিমান্ড শেষে কারাগারে আরসা প্রধান আতাউল্লাহ ও ৫ সহযোগী
  • বিশেষ শিশুদের পাশে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ‘ভিন্নতা নয়, সম্ভাবনার প্রতীক অটিজম’