বেসরকারি সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে পরবর্তী তিন বছরের জন্য পুনর্নিয়োগ পেয়েছেন মাসরুর আরেফিন। সম্প্রতি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁর এ নিয়োগ অনুমোদন করেছে।

সিটি ব্যাংক আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, মাসরুর আরেফিন ২০১৯ সাল থেকে টানা দুই মেয়াদে এমডি ও সিইওর দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তৃতীয় মেয়াদে তিনি এ পদে নিয়োগ পেলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ছয় বছরে মাসরুর আরেফিন সিটি ব্যাংককে ভিন্নতর উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। এ সময় ব্যাংকের বার্ষিক আয় ১ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকায় এবং পরিচালন মুনাফা ৬৬৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। তার নেতৃত্বে সিটি ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার মুনাফার ক্লাবে প্রবেশ করেছে।

গত ছয় বছরে ব্যাংকের আয়–ব্যয়ের অনুপাত ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে ৪২ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য বছরে ৩৬০ কোটি (৩.

৬ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৭০২ কোটি (৭.০২ বিলিয়ন) ডলার হয়েছে বলে জানায় সিটি ব্যাংক। বলা হয়, গত ছয় বছরে ব্যাংকের মোট আমানত ২১ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকায় এবং ঋণ পোর্টফোলিও ২৩ হাজার কোটি টাকা থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এ ছাড়া ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের মন্দ ঋণের অনুপাত ৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে, আর শ্রেণীকৃত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের অনুপাত ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২২ শতাংশে উঠেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাসরুর আরেফিনের নেতৃত্বে সিটি ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তির এজেন্ডা নিয়ে শহরভিত্তিক ব্যাংক থেকে দেশের আপামর মানুষের ব্যাংক হওয়ার পথে এগিয়েছে। তিনি ব্যাংকে ডিজিটাল ন্যানো লোন, এজেন্ট ব্যাংকিং এবং ক্ষুদ্র ও মাইক্রোফাইন্যান্স বিভাগ চালু করেছেন। পাশাপাশি সিটিটাচ ডিজিটাল ব্যাংকিংকে আরও জনপ্রিয় করার কাজ করেছেন। ২০২৪ সালে সিটিটাচে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে।

মাসরুর আরেফিন ১৯৯৫ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে যোগ দিয়ে ব্যাংকিং পেশা শুরু করেন। ৩০ বছরের কর্মজীবনে তিনি এএনজেড ব্যাংক মেলবোর্ন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক কাতার, সিটি ব্যাংক এনএ, আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

অভিজ্ঞ এই ব্যাংকার বরিশাল ক্যাডেট কলেজের সাবেক ক্যাডেট। তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর, মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ এবং পরে ফ্রান্সের ইনসিয়াড বিজনেস স্কুল থেকে উচ্চতর আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপরে কোর্স সম্পন্ন করেন।

মাসরুর আরেফিন একজন ঔপন্যাসিক, কবি এবং অনুবাদক হিসেবেও পরিচিত।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রদল–যুবদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগ

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় এক ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর করে মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েকজন নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তবে ইউপি নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানের পর একটি মামলায় সাত দিন কারাগারেও ছিলেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর ১২টার দিকে ইউএনও কার্যালয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষ হওয়ার একটু আগেই বাইরে বের হন আনোয়ার হোসেন। উপজেলা চত্বরে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান সর্দার, ছাত্রদল নেতা মেজবাহুল, সাব্বির হোসেনসহ আরও কয়েকজন। তাঁদের হাতে মারধরের শিকার হন আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলটিও সেখানে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এর আগেও আমার ওপরে হামলা করে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল ইমরান ও মেজবাহ। ৫ আগস্টের পর থেকে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন সময় আটকে আমাকে হয়রানি করে আসছে তারা। তবে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জয় পেয়েছিলাম।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপি নেতা–কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে বালুমহাল দখল নিয়ে আনোয়ার হোসেনের অনুসারীদের সঙ্গে সাব্বিরের দ্বন্দ্ব হয়। এই হামলার সঙ্গে ওই বিরোধের জের থাকতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদুল ইসলাম বলেন, দলের কেউ যদি এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকেন এবং তদন্তে তা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন কাহারোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ