ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে এসে সোমবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতা। প্রক্টরিয়াল বডি, শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা মামুন অর রশিদ নামে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে উদ্ধার করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশের কাছে নেওয়ার সময় কিছু শিক্ষার্থী মামুনকে মারধরও করেন।
 
মামুন ইবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহসভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, মামুন আন্দোলন-পরবর্তী সময়েও বিভিন্ন অপপ্রচারে লিপ্ত ছিলেন। ছাত্রলীগ আবার শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসে প্রতিশোধ নেবে মর্মে প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মামুন শিক্ষার্থীদের হুমকি দিচ্ছিলেন।

জানা যায়, সকালে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মানোন্নয়ন পরীক্ষা শুরু হলে তাতে অংশ নেন ছাত্রলীগ নেতা মামুন। তাঁর ক্যাম্পাসে আসার খোঁজ পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলের সামনে জড়ো হয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা মামুনকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে থানায় নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কিছু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী মামুনকে অতর্কিতভাবে কিল-ঘুসি ও চড়থাপ্পড় দেন। পরে তাঁকে প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে মামুনকে থানায় নেওয়া হয়।

বিভাগের শিক্ষকরা জানান, মামুন পরীক্ষা দিতে আবেদন করেছিল। পরে আমরা তাকে আসার জন্য নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু সে কখন এসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, তা বুঝতে পারিনি। প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক ড.

ফকরুল ইসলাম বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এসেছে বলে মনে করি। 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি মেহেদী হোসেন বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী পুলিশ হেফাজতে আছে। বিষয়টিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আবাহনী-কিংসের শিরোপা লড়াই আজ

ইংল্যান্ডপ্রবাসী হামজা দেওয়ান চৌধুরীর লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেকের পরই বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা বেড়েছে বহুগুণ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজার পথ ধরে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহী দেখিয়েছেন সামিত সোম-কিউবার মতো প্রবাসীরা। দেশের ফুটবলে যেন গণজোয়ার বইছে। এর মধ্যে আজ ঘরোয়া ফুটবলের বিগ ম্যাচ। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফুটবলের মহারণই বলা চলে। মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং বসুন্ধরা কিংস। 

২০১৮ সালে কিংস পেশাদার ফুটবলে আসার পর থেকে লিগ ট্রফি জিততে ব্যর্থ হওয়া আবাহনীর জন্য ফেডারেশন কাপের ফাইনালটি পুনর্জন্মই বলা চলে। গত মৌসুমে শিরোপাহীন থাকা দলটির সমর্থকরা এবার আত্মবিশ্বাসী ডাগ আউটে এ কে এম মারুফুল হকের মতো কোচ থাকায়। আর দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া কিংসের সামনে সুযোগ নিজেদের রাজত্ব ধরে রাখা। দেশের ফুটবলের দুই হেভিওয়েটের এ লড়াইটি শুরু হবে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে। ফেড কাপের ট্রফির এ লড়াইটি দেখা যাবে টি স্পোর্টসে।

ময়মনসিংহে গত মৌসুমেও ফেডারেশন কাপের ফাইনাল হয়েছিল। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ট্রফি জিতেছিল কিংস। আজ জিতলে তাদের শোকেসে জমা হবে ফেড কাপের চার নাম্বার ট্রফিটি। ঘরোয়া ফুটবলে এ প্রতিযোগিতা মানেই আবাহনীর দাপট। সর্বোচ্চ ১২ বার চ্যাম্পিয়ন প্রমাণ করে আকাশি-নীল জার্সিধারীদের আধিপত্য। এবার সংখ্যাটা ১৩তে নিয়ে যাওয়ার হাতছানি তাদের সামনে। আবাহনী আত্মবিশ্বাসী এই জন্য যে গত ৮ এপ্রিল প্রথম কোয়ালিফায়ারে টাইব্রেকারে কিংসকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। সেই ম্যাচে পরাজিত বসুন্ধরাকে শিরোপা মঞ্চে উঠতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারাতে হয়েছে রহমতগঞ্জকে। অতীতের মতো কিংস ব্যালান্স টিম নয়। তাদের খেলাতেও পুরোনো সেই ধার নেই। প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলের তিন নাম্বারে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কোচ ভ্যালেরিও তিতার অধীনে ছন্নছাড়া বসুন্ধরা। এবারের মৌসুমে যে অবস্থা তাতে লিগ শিরোপা জেতা দলটির জন্য কঠিন। 

তাই ফেডারেশন কাপকে পাখির চোখ করেছেন কিংস কোচ তিতা, ‘আগের ম্যাচে আমরা আবাহনীর কাছে হেরেছি। সেটি ভুলে যেতে চাই। যেহেতু আগামীকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচটি ফাইনাল, তাই আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি জিততে পারব।’ 

পেশাদার ফুটবলে অভিষেক মৌসুমে এই ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর মুখোমুখি হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে মারামারিতে ২০১৮ সালের সেই ফাইনালটি কলংকিত হয়ে আছে। সেদিন থেকে দেশের ফুটবলে কিংস-আবাহনীর দ্বৈরথের সূচনা হয়েছিল। ২০১৮ সালে আবাহনীর কাছে হারার পরের আসরের মধ্যে তিনবারই ট্রফি জিতেছে কিংস। অনুপযোগী মাঠে খেলা সম্ভব নয় বলে ২০২১-২২ মৌসুমে ফেডারেশন কাপ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে বসুন্ধরা। সেই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী। তার পরের আসরে আবাহনীকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। 

গত মৌসুমে শিরোপা পুনরুদ্ধার করা বসুন্ধরা জিতেছিল ঘরোয়া ট্রেবল। এবার শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ভ্যালেরিও তিতার দলের। কারণ, অন্য পাশে ডাগ আউটে যে আছেন মারুফুল হকের মতো দারুণ মস্তিষ্কের কোচ। এই মৌসুমে লিগ এবং ফেড কাপ– দু’বারই কিংসকে হারিয়েছে আবাহনী। 

কক্ষপথে ফেরার জন্য এই ট্রফিটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ভালো করেই জানা মারুফুলের, ‘ফাইনাল বলে আমরা কোনো চাপ নিচ্ছি না। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আমি পুরোপুরি আশাবাদী। যদিও বসুন্ধরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এবং খুব ভালো একটা টিম, তারপরেও আমি আশাবাদী। মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ দুই ম্যাচে তাদের আমরা হারিয়েছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গৃহকর নিয়ে প্রশাসকের সঙ্গে বাসিন্দাদের হট্টগোল
  • আবাহনী-কিংসের শিরোপা লড়াই আজ