ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতা মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে গেলে তাঁকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন শিক্ষার্থীরা। মামুন অর রশিদ নামের ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী।

আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডি, বিভাগের শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা তাঁকে উদ্ধার করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় সোপর্দ করেন

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মামুন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছিলেন। আন্দোলন–পরবর্তী সময়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নেন মামুন অর রশিদ। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা ভবনের তৃতীয় তলায় ৩১৫ নম্বর কক্ষের সামনে জড়ো হয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ বিরোধী স্লোগান দেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা তাঁকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে থানায় সোপর্দ করেন। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কিল-ঘুষি ও চড়থাপ্পড়ের শিকার হন তিনি।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘মামুন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। পরে আমি তাঁকে আসতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু আজকে সে কখন এসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, তা বুঝতে পারিনি। পরে প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র উপদেষ্টা ও সমন্বয়কেরা তাকে থানায় দিয়েছে।’

প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক ফকরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাঁকে পরীক্ষা দিতে আসতে নিষেধ করলেও পরীক্ষা দিতে এসেছে। পুলিশি তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে। নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠনের নেতা মামুন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আহত আরমান মীর নামের একজন গত ৩০ অক্টোবর কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করেন। ওই মামলায় মামুন অর রশিদ ১৮ নম্বর আসামি। গত ৩১ ডিসেম্বর ওই মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। পরে ৭ জানুয়ারি তিনি জামিন পান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আবাহনী-কিংসের শিরোপা লড়াই আজ

ইংল্যান্ডপ্রবাসী হামজা দেওয়ান চৌধুরীর লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেকের পরই বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা বেড়েছে বহুগুণ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজার পথ ধরে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহী দেখিয়েছেন সামিত সোম-কিউবার মতো প্রবাসীরা। দেশের ফুটবলে যেন গণজোয়ার বইছে। এর মধ্যে আজ ঘরোয়া ফুটবলের বিগ ম্যাচ। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফুটবলের মহারণই বলা চলে। মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং বসুন্ধরা কিংস। 

২০১৮ সালে কিংস পেশাদার ফুটবলে আসার পর থেকে লিগ ট্রফি জিততে ব্যর্থ হওয়া আবাহনীর জন্য ফেডারেশন কাপের ফাইনালটি পুনর্জন্মই বলা চলে। গত মৌসুমে শিরোপাহীন থাকা দলটির সমর্থকরা এবার আত্মবিশ্বাসী ডাগ আউটে এ কে এম মারুফুল হকের মতো কোচ থাকায়। আর দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া কিংসের সামনে সুযোগ নিজেদের রাজত্ব ধরে রাখা। দেশের ফুটবলের দুই হেভিওয়েটের এ লড়াইটি শুরু হবে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে। ফেড কাপের ট্রফির এ লড়াইটি দেখা যাবে টি স্পোর্টসে।

ময়মনসিংহে গত মৌসুমেও ফেডারেশন কাপের ফাইনাল হয়েছিল। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ট্রফি জিতেছিল কিংস। আজ জিতলে তাদের শোকেসে জমা হবে ফেড কাপের চার নাম্বার ট্রফিটি। ঘরোয়া ফুটবলে এ প্রতিযোগিতা মানেই আবাহনীর দাপট। সর্বোচ্চ ১২ বার চ্যাম্পিয়ন প্রমাণ করে আকাশি-নীল জার্সিধারীদের আধিপত্য। এবার সংখ্যাটা ১৩তে নিয়ে যাওয়ার হাতছানি তাদের সামনে। আবাহনী আত্মবিশ্বাসী এই জন্য যে গত ৮ এপ্রিল প্রথম কোয়ালিফায়ারে টাইব্রেকারে কিংসকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। সেই ম্যাচে পরাজিত বসুন্ধরাকে শিরোপা মঞ্চে উঠতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারাতে হয়েছে রহমতগঞ্জকে। অতীতের মতো কিংস ব্যালান্স টিম নয়। তাদের খেলাতেও পুরোনো সেই ধার নেই। প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলের তিন নাম্বারে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কোচ ভ্যালেরিও তিতার অধীনে ছন্নছাড়া বসুন্ধরা। এবারের মৌসুমে যে অবস্থা তাতে লিগ শিরোপা জেতা দলটির জন্য কঠিন। 

তাই ফেডারেশন কাপকে পাখির চোখ করেছেন কিংস কোচ তিতা, ‘আগের ম্যাচে আমরা আবাহনীর কাছে হেরেছি। সেটি ভুলে যেতে চাই। যেহেতু আগামীকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচটি ফাইনাল, তাই আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি জিততে পারব।’ 

পেশাদার ফুটবলে অভিষেক মৌসুমে এই ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর মুখোমুখি হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে মারামারিতে ২০১৮ সালের সেই ফাইনালটি কলংকিত হয়ে আছে। সেদিন থেকে দেশের ফুটবলে কিংস-আবাহনীর দ্বৈরথের সূচনা হয়েছিল। ২০১৮ সালে আবাহনীর কাছে হারার পরের আসরের মধ্যে তিনবারই ট্রফি জিতেছে কিংস। অনুপযোগী মাঠে খেলা সম্ভব নয় বলে ২০২১-২২ মৌসুমে ফেডারেশন কাপ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে বসুন্ধরা। সেই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী। তার পরের আসরে আবাহনীকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। 

গত মৌসুমে শিরোপা পুনরুদ্ধার করা বসুন্ধরা জিতেছিল ঘরোয়া ট্রেবল। এবার শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ভ্যালেরিও তিতার দলের। কারণ, অন্য পাশে ডাগ আউটে যে আছেন মারুফুল হকের মতো দারুণ মস্তিষ্কের কোচ। এই মৌসুমে লিগ এবং ফেড কাপ– দু’বারই কিংসকে হারিয়েছে আবাহনী। 

কক্ষপথে ফেরার জন্য এই ট্রফিটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ভালো করেই জানা মারুফুলের, ‘ফাইনাল বলে আমরা কোনো চাপ নিচ্ছি না। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আমি পুরোপুরি আশাবাদী। যদিও বসুন্ধরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এবং খুব ভালো একটা টিম, তারপরেও আমি আশাবাদী। মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ দুই ম্যাচে তাদের আমরা হারিয়েছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গৃহকর নিয়ে প্রশাসকের সঙ্গে বাসিন্দাদের হট্টগোল
  • আবাহনী-কিংসের শিরোপা লড়াই আজ
  • ‘২০১৮’ ফেরাতে চায় জিম্বাবুয়ে