ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, তিন এসআই প্রত্যাহার
Published: 13th, January 2025 GMT
গাজীপুরের কোনাবাড়ী মেট্রো থানায় এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার ঘটনায় জড়িত তিন এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার রাতে তাদের প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান।
প্রত্যাহার করা পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন– কোনাবাড়ী থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) উৎপল সাহা, উপপরিদর্শক (এসআই) হামিদ মাহমুদ ও উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কাশেম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারি রাতে নগরের কোনাবাড়ী বাজার এলাকা থেকে নুরুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে ধরে থানায় নেওয়া হয়। ওই রাতেই অভিযুক্ত তিন এসআই হত্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা আদায় করেন ব্যবসায়ীর স্বজনের কাছ থেকে। ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরও পরের দিন সকালে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠান। ওই দিনই নুরুল ইসলাম আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পান।
ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম কোনাবাড়ী হাউজিং এলাকার হোসেন আলী মুন্সীর ছেলে। কোনাবাড়ী বাজার এলাকায় তাঁর ওষুধের দোকান রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে টাকা নেওয়ার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় রোববার রাতে কোনাবাড়ী থানার তিন এসআইকে প্রত্যাহার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, ঘটনাটি তদন্তের জন্য একজন এডিসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ণিল বিকেলে শিশুদের ব্যতিক্রমী ঈদ আনন্দ
চারপাশে সবুজ শালবন। মাঝে দূর্বা ঘাসে ঢাকা সমতল মাঠ। প্রকৃতির সবুজ এই কার্পেটে শিশুরা দৌড়াচ্ছে, খেলছে, বেলুন ওড়াচ্ছে, কর্কশ বেলুনবাঁশি বাজাচ্ছে। শিশুদের আনন্দ উদ্যাপন দেখে মনে হতেই পারে, ঈদ এখনো ফুরোয়নি।
গতকাল বুধবার বিকেলে এই দৃশ্য দেখা যায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পাবরিয়াচালা গ্রামের কফুরচালা মাঠে। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনের নাম ‘শিশুদের ঈদ আনন্দ’। আয়োজন করে স্থানীয় ‘পারুলী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন’। শিশুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক সেলিম রেজা, নদী পরিব্রাজক দলের শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরীসহ সমাজের নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ।
গতকাল বিকেলে চারটার দিকে কফুরচালা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, এক প্রান্তে তৈরি হয়েছে মঞ্চ। আর সামনের মাঠজুড়ে ছড়িয়ে আছে শিশুরা। হঠাৎ মঞ্চ থেকে ঘোষণা এল, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে। ঘোষণা শুনেই শতাধিক শিশু সবুজ ঘাসে বসে ইচ্ছেমতো ছবি আঁকতে শুরু করে। ১৫ মিনিটের এই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রায় সব শিশুই অংশ নেয়। এরপর মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে চলছিল বিভিন্ন বয়সী শিশুদের দৌড় প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি। বাঁশির সংকেত পেয়েই দে ছুট! কে কার আগে দৌড়ে গিয়ে মাঠের বিপরীত পাশের দড়িটি ছুঁতে পারে, সে চেষ্টায় ব্যস্ত হয় তারা। তবে এই প্রতিযোগিতায় সবাইকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
পরের পর্বে ছিল শিশুদের বিস্কুটদৌড় প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন বয়সী শিশুরা সুতায় বাঁধা বিস্কুট মুখে নেওয়া চেষ্টায় লাফিয়ে উঠছিল। কেউ কেউ বিস্কুট মুখে পুরে দৌড়ে মাঠের অন্য প্রান্তে থাকা বিচারকদের কাছে উপস্থিত হয়। বিকেল ঘনিয়ে সন্ধ্যা হওয়ায় আগেই মাঠের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে বসে বল নিক্ষেপের আয়োজন। শিশুদের দুই দলে ভাগ করে নির্দিষ্ট দূরত্বে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো হয়। এক দলের সদস্য অন্য দলের সদস্যের দিকে বল নিক্ষেপ করতে থাকে। এভাবে ১০ মিনিট ধরে বল নিক্ষেপ করে বিজয়ী নির্বাচিত হয়। সন্ধ্যার আগে আগে শিশুদের সঙ্গে আসা মায়েদের জন্য ছিল ‘চেয়ার সিটিং’ খেলা। সেখানে পায় ৩০ মিনিট পর বিজয়ী নির্বাচিত হয়। এরপর মঞ্চে বসে জাদুর আসর। শিশুদের আনন্দ বাড়িয়ে একের পর এক চমকপ্রদ জাদু দেখান শিল্পী খলিলুর রহমান। এ ছাড়া বিকেলজুড়ে মঞ্চে শিশুদের জন্য ইচ্ছেমতো গান গাওয়া ও কবিতা, ছড়া আবৃত্তির সুযোগ রাখা হয়।
এসব খেলায় অংশ নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শিশুরা। আমাতুল নামের এক শিশু জানায়, সে অনুষ্ঠানে খুবই আনন্দ পেয়েছে। আরেক শিশু সিফাত জানায়, ঈদের এই আয়োজনে সে অংশ নিয়ে পুরস্কার পেয়েছে। নুসরাত চেঁচিয়ে জানায়, সে মায়ের সঙ্গে অনুষ্ঠানে এসে দারুণ আনন্দ করেছে। ছড়া পাঠে পুরস্কার জেতার পর ছোঁয়ার বাধভাঙা আনন্দ আর দেখে কে!
অনুষ্ঠান শেষে শিশুদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক সেলিম রেজা। এমন আয়োজনের উদ্দেশ্য জানাতে পারুলী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের আহ্বায়ক সুমগ্ন সৌর বলেন, ‘আমরা চাই ঈদে শিশুরা দেশীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুক।’