বায়ু ও পরিবেশ দূষণ রোধে অভিযান: জরিমানা ২২ লাখ টাকা
Published: 13th, January 2025 GMT
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগে পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভিন্ন জেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বায়ুদূষণকারী প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযানে ঝালকাঠি, ঢাকা ও টাঙ্গাইল জেলায় ২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৫টি মামলার মাধ্যমে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ৩টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শিল্পকারখানার দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপের অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ জেলায় ১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে একটি স্টিল/রি-রোলিং মিল থেকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়।
সীসা ও ব্যাটারি গলন বন্ধে অভিযানে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা জেলায় ৩টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং ৪টি কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। ৪ ট্রাক যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়।
কালো ধোঁয়া নির্গমন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগরের বিজয়নগরে ১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪টি যানবাহনের চালককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের জন্য ঝিগাতলায় ১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং ৩টি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযানে ঢাকার শ্যামলী এলাকায় বিভিন্ন সুপারশপ ও গোপালগঞ্জে ২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১টি মামলার মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং ৪৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। ১০টি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর বায়ুদূষণ ও পরিবেশ দূষণ রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ছনখোলা এলাকায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছে। ডাকাত সন্দেহ করে মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হলে তাদের পিটুনি দেওয়া হয়। এ সময় আক্রান্তরা পাল্টা গুলি চালালে স্থানীয় চারজন এলাকাবাসী গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ছনখোলা (পশ্চিম পাড়া) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, গণপিটুনিতে নিহত দুজনের মরদেহ থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গুলিবিদ্ধ অন্তত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত রেজা বলেন, রাত ১০টার দিকে ইওছিয়া ইউনিয়নের চানখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। প্রকৃত কারণ জানতে আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী আমাকে জানায় যে, ডাকাতরা যখন ডাকাতির চেষ্টা করে, তখন গ্রামবাসী মসজিদের লাউড স্পিকার ব্যবহার করে তাদের উপস্থিতি ঘোষণা করে। এ সময় ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে দুজনকে ধরে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।’
সাতানিয়া থানার ডিউটি অফিসার আমজাদ হোসেন জানান, এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে দুজন মারা গেছে। তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এ সময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। তবে কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে সেটা তিনি জানাতে পারেননি। ঘটনাস্থলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অন্যান্য অফিসার আছেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, কাঞ্চনার নেজাম নামের এক রাজনৈতিক কর্মী ৫ আগস্টের পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফেরেন। ফিরেই তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি শুরু করেন। নেজাম গ্রুপের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। সোমবার নেজাম আরও কয়েকজনকে নিয়ে ছনখোলা এলাকায় গেলে তারাবি নামাজ পড়ে বের হওয়া মুসল্লিরা নেজাম গ্রুপকে ঘিরে ফেলে। মসজিদের মাইক থেকেও তখন ঘোষণা দেওয়া হয় এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নেজাম এলাকাবাসীর ওপর গুলি চালায়। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে পরে নেজাম ও তার সঙ্গীদের গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নেজাম ও ছালেক নামে দুজন মারা যায়।
একটি পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার: পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সুদীপ্ত রেজা র বরাত দিয়ে সাতকানিয়া প্রতিনিধি সুকান্ত বিকাশ ধর জানান, গণপিটুনিতে নিহত এক ব্যক্তির কাছে থাকা একটি পিস্তল এবং ৮ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় পুলিশ জানাতে পারেনি।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, মো. ওবায়দুল্লাহ (২২), মো. নাসির(৩৮), মো. আব্বাস (৩৮) ও মো. মামুন সওদাগর (৪৮)। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্তু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।