জাতিসংঘ আবাসিক প্রতিনিধিকে ডেকে ঢাকার কড়া প্রতিবাদ
Published: 13th, January 2025 GMT
মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের বিষয় নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইসকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে।
২০২১ সালের পর মিয়ানমার থেকে আর কোনও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি, এমন দাবি করে ইউএনএইচসিআর-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনকে মিথ্যা তথ্য বলে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের পর মিয়ানমার থেকে আর কোনও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি এবং বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা ‘পরিকল্পিতভাবে’ অবস্থান করছে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া, থাইল্যান্ডের সীমান্তে কিছু রোহিঙ্গা খণ্ডকালীনভাবে অবস্থান করছে বলেও দাবি করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেন মিয়ানমার ও জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ফেরদৌসী শাহরিয়ার এবং তৌফিক হাসান।
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গোয়েন লুইসকে জানায়, এই ধরনের তথ্য সঠিক নয় এবং এর কোনো ভিত্তি নেই। আবাসিক প্রতিনিধি নিজেও এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, প্রতিবেদনটি মিয়ানমারের ইউএনএইচসিআর দ্বারা প্রকাশিত, বাংলাদেশের ইউএনএইচসিআর দ্বারা নয়।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মিয়ানমার থেকে ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের ইউএনএইচসিআর সরকারকে ওই রোহিঙ্গাদের তালিকা দিয়েছে এবং তাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। তবে ইউএনএইচসিআর-এ সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২১ সালের পর রোহিঙ্গা প্রবেশের বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কাজ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে।
ঢাকা/হাসান//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।
এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।
এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”
আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী