অপরাধ দমনে পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গে কাজ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। আজ সোমবার রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ অডিটরিয়ামে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিসেম্বর মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তিনি এই নির্দেশনা দেন।

বাহারুল আলম বলেন, ‘আমাদের সততা দিয়ে কাজ করতে হবে ও ন্যায়ের পথে থাকতে হবে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও খুন বন্ধ করতে আমাদের শতভাগ চেষ্টা করতে হবে। সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে চাঁদাবাজি, মাদকসহ সব অপরাধ দমন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে যদি কোনো প্রতিকূলতা থাকে সেটি মোকাবিলা করে আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, ‘ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের ব্যাপারে শূন্য সহনশীলতার (জিরো টলারেন্স) নীতি অনুসরণ করতে হবে। ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করতে হবে। ডিএমপির থানাগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্ববোধ ও আগ্রহ থেকে সবাইকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে পুলিশের প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা ফিরে আসবে।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘মামলা তদন্তে অগ্রগতি আরও বাড়াতে হবে। থানায় জিডি করার এক ঘণ্টার মধ্যে রেসপন্স করতে হবে এবং সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করতে হবে। জিডি তদন্তের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার বিলম্ব করা যাবে না। চোরাই মুঠোফোন উদ্ধারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। চোরাই মুঠোফোন কোথায় বিক্রি করা হয়, সেগুলো চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

অপরাধ সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মামলা তদন্ত সঠিকভাবে করতে হবে ও তদন্তে আরও গতিশীলতা আনতে হবে। মামলা তদন্তে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোনোভাবেই চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারীকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। আমরা সবাই মিলে পেশাদারির সঙ্গে কাজ করে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনব।’

সভায় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) ফারুক হোসেন গেল ডিসেম্বর সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলা–সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন। মাসিক অপরাধ সভায় ডিসেম্বর মাসে ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা বিধানসহ সেরা কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে পুরস্কার দেন ডিএমপি কমিশনার।

সভায় অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক, অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মাসুদ করিম, যুগ্ম কমিশনাররা, উপকমিশনাররা, ডিএমপির সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ