জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসআই) কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ২ লাখ টাকা বকেয়া থাকা ভবনে পানির সংযোগ দিতে ঢাকা ওয়াসার উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে হুমকি দেন সোহেল নামের ব্যক্তি। পরে সন্দেহ হলে বিষয়টি এনএসআইকে জানান ওয়াসার কর্মকর্তা। পরে এনএসআই কর্মকর্তারা তার পরিচয়পত্র যাচাই করে দেখেন সেটি ভুয়া। পরে তাকে শাহ আলী থানায় হস্তান্তর করে এনএসআই।

জানা গেছে, মিরপুর ৪ নম্বর সেকশনের ১১ নম্বর সড়কের ১–সি নম্বর হোল্ডিংয়ের বাড়ির মালিক মানিক মিয়ার ১ লাখ ৮১ হাজার ৯৭১ টাকা বিল বকেয়া পড়ে। এ অবস্থায় ওই ভবনের পানির সংযোগ সম্প্রতি বিচ্ছিন্ন করে দেয় ওয়াসা। সোমবার দুপুরে এনএসআই’র সিনিয়র ফিল্ড অফিসার তাইবুর রহমান পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি মিরপুর বাংলা কলেজ সংলগ্ন ঢাকা ওয়াসার মডস জোন–৪–এর অফিসে যান। উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক খানকে এই মুহূর্তেই পানির সংযোগ দেয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। অন্যথায় বড় ধরনের সমস্যা হয়ে যাবে বলে তাকে হুমকি দেন। 

আবু বকর সিদ্দিক খান বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে দ্রুত এনএসআই’র একটি টিম ঘটনাস্থলে হাজির হন। তারা তার কাছ থেকে পরিচয়পত্র উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে ওই ভুয়া কর্মকর্তা নিজের আসল পরিচয় প্রকাশ করেন এবং তিনি ওই বাড়িতে ভাড়া থাকেন বলে জানান। পরে শাহ আলী থানা পুলিশের কাছে সোহেলকে হস্তান্তর করা হয়। 

আবু বকর সিদ্দিক জানান, ওই ব্যক্তির আচরণ দেখে সন্দেহ হয়েছিল। পরে কৌশলে তাকে বসিয়ে রেখে কর্তৃপক্ষ ও এনএসআই টিমকে খবর দেন। ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি আমাকে ভয়-ভীতি দেখান। এতে আরও সন্দেহ হয়েছিল।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবার সঞ্চয়পত্র কীভাবে কিনবেন, মুনাফা কত

পরিবার সঞ্চয়পত্র মধ্যবিত্ত নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় সঞ্চয় স্কিম। এটা থেকে প্রতি মাসেই মুনাফার টাকা তোলা যায়। মুনাফাও বেশ ভালো। ২০০৯ সালে পাঁচ বছর মেয়াদি এই সঞ্চয়পত্র চালু হওয়ার পর দেড় দশকেই সবচেয়ে জনপ্রিয় সঞ্চয় স্কিমে পরিণত হয়েছে। সবাই এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন না। মূলত নারীদের জন্য এই সঞ্চয়পত্র।

এবার দেখা যাক, এই সঞ্চয়পত্র কীভাবে কিনবেন, কোথায় পাওয়া যায়, মুনাফার হার কত ইত্যাদি।

মুনাফা কত

একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত একক নামে পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। অন্য সঞ্চয়পত্র যৌথ নামে কেনার সুযোগ থাকলেও পরিবার সঞ্চয়পত্র যৌথ নামে কেনা যায় না।

এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দুইভাগে বিভক্ত। যেমন সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রথম বছর শেষে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ; দ্বিতীয় বছর শেষে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ, তৃতীয় বছর শেষে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, চতুর্থ বছর শেষে ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও পঞ্চম বছর শেষে বা মেয়াদ পূর্ণ হলে সাড়ে ১২ শতাংশ মুনাফা মিলবে। চলমান সঞ্চয় স্কিমগুলোর মধ্যে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা।

অন্যদিকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে মুনাফার হার প্রথম বছর শেষে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ; দ্বিতীয় বছর শেষে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছর শেষ ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছর শেষে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও পঞ্চম বছর শেষে বা মেয়াদ পূরণ হলে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

মাসিক মুনাফা নেওয়ার পর পাঁচ বছর শেষে মূল টাকা ফেরত পাওয়া যায়। মেয়াদপূর্তির আগে নগদায়ন করলে মাসিক মুনাফা কর্তন করে সরকার বাকি অর্থ ফেরত দেবে। যেমন প্রথম বছর চলাকালে এক লাখ টাকা ভাঙালে মুনাফা পাওয়া যাবে না।

কারা কিনতে পারবেন

এটি বিশেষায়িত সঞ্চয়পত্র। ১৮ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নারী এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। যেকোনো বাংলাদেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী পুরুষ ও নারী এবং ৬৫ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি পুরুষ ও নারী চাইলে এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।

কোথায় পাওয়া যায়

জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা, বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা ও ডাকঘর থেকে এই সঞ্চয়পত্র কেনা ও ভাঙানো যায়।

মূল্যমান

১০ হাজার টাকা, ২০ হাজার টাকা, ৫০ হাজার টাকা, ১ লাখ টাকা, ২ লাখ টাকা, ৫ লাখ টাকা ও ১০ লাখ টাকা।

উৎসে কর

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট বলছে, পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সর্বমোট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর ৫ শতাংশ হারে এবং এর অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করা হয়।

অন্য সুবিধা

পরিবার সঞ্চয়পত্রের বেশ কিছু সুবিধা আছে। যেমন প্রতি মাসেই মুনাফার টাকা তোলা যায়। যেকোনো সময় নমিনি বা মনোনীতক নির্বাচন, পরিবর্তন ও বাতিল করা যায়। সঞ্চয়পত্রের ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনি সঙ্গে সঙ্গে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করে টাকা উত্তোলন করতে পারেন অথবা মেয়াদ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত যথারীতি মাসে মাসে মুনাফা উত্তোলন করতে পারেন।

হারিয়ে গেলে, পুড়ে গেলে বা নষ্ট হলে গ্রাহকের নামে বিকল্প (ডুপ্লিকেট) সঞ্চয়পত্রও ইস্যু করা হয়।

বিক্রি কমেছে ৩১%

উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন কারণে পরিবার সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক নারী বিনিয়োগকারী পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙছেন। সেই সঙ্গে বিক্রিও কমেছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরর প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) পরিবার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ হয়েছে ৮ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। বিক্রি কমেছে ৩১ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যাম্প থেকে পালানো ৬ রোহিঙ্গা মাগুরায় আটক
  • পরিবার সঞ্চয়পত্র কীভাবে কিনবেন, মুনাফা কত