বরিশালে কৃষকদের সমাবেশে চলতি মৌসুমে ধানের দাম মণপ্রতি দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার দাবি জানানো হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে বরিশাল নগরের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট।

সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের বাকেরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি রণজিৎ মালির সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাসদের বরিশাল জেলা সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য শহিদুল শেখ, বেল্লাল গাজী, কৃষক ফ্রন্ট সংগঠক ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের বাকেরগঞ্জ উপজেলা শাখার সহসভাপতি সূর্যভান বেগম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে ক্রয়কেন্দ্র খুলে ধানের দাম মণপ্রতি দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি শস্য কিনতে হবে। সার, বীজ, কীটনাশকসহ সব কৃষি উপকরণের দাম কমাতে হবে। কৃষকদের কৃষিপণ্য স্বল্প মূল্যে পরিবহন করার জন্য সরকারি পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের রক্তস্নাত বাংলায় যদি কৃষকেরা আবারও সিন্ডিকেট আর মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে জিম্মি হয়ে যান, তাহলে শহীদের আত্মত্যাগ বৃথা হয়ে যাবে।

মনীষা চক্রবর্তী বলেন, কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে শস্য উৎপাদন করেন, কিন্তু দেশে সবকিছুর দাম বাড়ে, কৃষকদের ধানের দাম বাড়ে না। জমি চাষ, সার, কীটনাশক, বীজ, সেচ—সবকিছুতে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এক মণ ধান উৎপাদন করতে কৃষক যে অর্থ ব্যয় করেন, ধান বিক্রি করে তাতে লাভ তো দূরে থাক, উৎপাদন ব্যয় ওঠে না। তবু কৃষকেরা পূর্বপুরুষের পেশাকে ধরে রেখেছেন। কিন্তু যুগ যুগ ধরে এই বঞ্চনার কারণে কৃষকের কোমর ভেঙে গেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে কৃষি পেশা থেকে মুখ থুবড়ে পড়বেন তাঁরা। এ জন্য কৃষকদের দিকে নজর দিতে হবে।

মনীষা বলেন, ‘আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পতন করেছি। এখন কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার দরকার। কৃষকদের বৈষম্য বিলোপ করা দরকার। প্রয়োজনে দাবি আদায়ে কৃষকদের নিয়ে আমরা রাজপথে নামব, কিন্তু এই বঞ্চনা থেকে তাঁদের মুক্তি দিতে হবে।’ এ সময় কৃষি বিষয়ে কৃষকসহ সব অংশীজনের মতামত নিয়ে কৃষিব্যবস্থা সংস্কার করার জন্য ‘কৃষি কমিশন’ গঠনের দাবি জানান মনীষা।

সমাবেশ শেষে উপজেলা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিল শেষে একটি প্রতিনিধিদল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ১০ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি পেশ করে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষক ও সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

ফরিদপুরের প্রবীণ শিক্ষক ও সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ওরফে তারাপদ- এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার পালিত হয়েছে। দিনটি স্মরণে তাঁর ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলীর বাসভবনে গীতাপাঠসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

এ ছাড়া দুপুরে স্থানীয় রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম ও ফরিদপুরে শ্রীঅঙ্গনে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০২১ সালের ২ এপ্রিল ৯৩ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

১৯২৮ সালের ৬ আগস্ট মানিকগঞ্জের কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্ম হয় জগদীশ চন্দ্র ঘোষের। ১৯৭১ সালের ২ মে পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় তাঁর পরিবার। ওই দিন তাঁর বাবা যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, ভাই গৌরগোপাল ঘোষ ও কাকাতো ভাই বাবলু ঘোষ গণহত্যার শিকার হন।

জগদীশ চন্দ্র ঘোষ শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করতেন। দীর্ঘ ৪০ বছর তিনি বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া নাটকসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তিনি। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ