স্কুলছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা ফকিরের (৪৫) নামে মামলা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে চৌহালী থানায় জুয়েল রানাকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি করেন। চৌহালি থানার ওসি জিয়াউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

আরো পড়ুন:

চিন্ময়কাণ্ডে আসামি হওয়া ৬৩ আইনজীবীর জামিন

মুকসুদপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২ পক্ষের মামলা, সংবাদ সম্মেলন

মামলার আসামি জুয়েল রানা চৌহালী উপজেলার সম্ভুদিয়া ইউনিয়নের চর-সলিমাবাদ গ্রামের আব্দুল খালেক ঝুনু ফকিরের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক।

এর আগে, স্কুলছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা ফকিরকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার বিষয়ে জবাব দিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম নোটিশে স্বাক্ষর করেন।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, শনিবার (১১জানুয়ারি) রাতে ৮ম শ্রেণির স্কুলছাত্র (১৪) বলাৎকারের অভিযোগ উঠছে। যা রবিবার (১২ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দলের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাকে (জুয়েল রানা) এ বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হলে জুয়েল রানার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভুক্তভোগী ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মোবাইলে খুদেবার্তার মাধ্যমে বিএনপি নেতা জুয়েল রানা ফকিরের সঙ্গে স্কুলছাত্রের পরিচয় হয়। শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে সম্ভুদিয়া বাজার এলাকায় স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময়সভা চলাকালে সেখানে তাদের দেখা ও আলাপ হয়। শনিবার রাত ১১টার দিকে জরুরি কথা আছে বলে জুয়েল রানা তাকে চর-সোলিমাবাদ বাজার এলাকায় ডেকে নেন।

সেখানে একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে তাকে (স্কুলছাত্র) যৌন নির্যাতন করেন জুয়েল রানা ফকির। এরপর সে (স্কুলছাত্র) বাড়িতে এসে পরিবারকে বিষয়টি জানায়। পরের দিন রবিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে পরিবার থানায় অভিযোগ করতে গেলে স্থানীয় বিএনপির নেতারা উপযুক্ত বিচার দেওয়ার আশ্বাসে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। আজ (সোমবার) রাতে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে চৌহালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা ফকিরকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা করেন। 

চৌহালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদ মোল্লা বলেন, “বিষয়টি জানার পরই অভিযুক্ত জুয়েল রানাকে শোকজ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনা তদন্তে দলের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

অভিযোগ অস্বীকার করে জুয়েল রানা বলেন, “আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সেই কারণে আমার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। ওই ছাত্রের শারীরিক পরীক্ষা করলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে।”

চৌহালি থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, “ভুক্তভোগীর বাবা একটি এজাহার দাখিল করেছেন। মেডিকেল পরীক্ষর জন্য ভুক্তভোগীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে তাকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে। ভুক্তভোগীকে প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে অল্প সময়ের মধ্যেই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে।”

ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ