রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে উদ্দেশ্যপ্রণেদিতভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে আল কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে গণতিলাওয়াত কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার মুক্তমঞ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়া কমিউনিটির উদ্যোগে এ কুরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় আয়োজক কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শুয়েবুল হাসান বলেন, “রাবির আবাসিক হলগুলোতে পবিত্র কুরআনে আগুন দেওয়া এবং চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যাসহ বিভিন্নভাবে এদেশের মুসলমানদের উসকে দিচ্ছে চক্রান্তকারীরা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর যে চেষ্টা চালানো হচ্ছে, আমরা তার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের এই গণ কুরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি তারই অংশ। যারা এ ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আবাসিক হলগুলোতে পবিত্র আল কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। কে বা কারা এ কর্মকাণ্ড করেছে তার কোন হদিস এখনো পাইনি। তবে তাদের এ কর্মকাণ্ডের বিপরীতে আমরা কোরআনের বাণীর সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করেছি। আমরা আমাদের কোরআনের অবননার বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকবো ইনশাআল্লাহ।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.

মাঈন উদ্দিন খান বলেন, “পবিত্র কুরআন পুড়িয়ে মুসলমানদের হৃদয়ে তারা আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমাদের দেশটা ভালোভাবে চলুক তারা চায় না। আগস্ট বিপ্লবের পরে তারা চাচ্ছে আমাদের ক্যাম্পাস অচল হয়ে যাক। শুধু ক্যাম্পাস না দেশের মধ্যে তারা লুকিয়ে থেকে এখনো ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের এ চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছে। তারা যে কর্মকাণ্ড করেছে, তার উচিৎ জবাবে এ কর্মসূচি দেখে আমি অনেক খুশি হয়েছি। এ রকম কর্মসূচি শুধু শহীদ মিনারে না, প্রতিটি হলে হোক।”

এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গতকাল রবিবার (১১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে সাতটি আবাসিক হলে কে বা কারা পবিত্র কোরআনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তবে এখন পযর্ন্ত ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ