রাবিতে কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে ভিন্নধর্মী আয়োজন
Published: 13th, January 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে উদ্দেশ্যপ্রণেদিতভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে আল কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে গণতিলাওয়াত কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার মুক্তমঞ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়া কমিউনিটির উদ্যোগে এ কুরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় আয়োজক কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শুয়েবুল হাসান বলেন, “রাবির আবাসিক হলগুলোতে পবিত্র কুরআনে আগুন দেওয়া এবং চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যাসহ বিভিন্নভাবে এদেশের মুসলমানদের উসকে দিচ্ছে চক্রান্তকারীরা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর যে চেষ্টা চালানো হচ্ছে, আমরা তার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের এই গণ কুরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি তারই অংশ। যারা এ ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আবাসিক হলগুলোতে পবিত্র আল কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। কে বা কারা এ কর্মকাণ্ড করেছে তার কোন হদিস এখনো পাইনি। তবে তাদের এ কর্মকাণ্ডের বিপরীতে আমরা কোরআনের বাণীর সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করেছি। আমরা আমাদের কোরআনের অবননার বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকবো ইনশাআল্লাহ।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.
এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গতকাল রবিবার (১১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে সাতটি আবাসিক হলে কে বা কারা পবিত্র কোরআনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তবে এখন পযর্ন্ত ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।