ভারতে যাওয়ার সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুস্মিতা পাণ্ডে (২৫) ও তার ভাই সত্যজিৎ পাণ্ডেকে (২৩) আটক করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে বেনাপোল হয়ে ভারত যাওয়ার সময় বিজিবি ও ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের আটক করে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সুস্মিতা ও সত্যজিৎ এর বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ জড়িত থাকার ঘটনায় ঢাকার নিউমার্কেট থানায় মামলা হয়। তারা মাগুরার সাতদোহাপাড়া এলাকার স্বপন পাণ্ডের সন্তান। 

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহিম হোসেন জানান, সুস্মিতা পাণ্ডে ও তার ভাই সত্যজিৎ পাণ্ডে আজ সকাল ৯টার দিকে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আসেন। ইমিগ্রেশনে ঢোকার সময় তাদের পাসপোর্ট বিজিবি ও ইমিগ্রেশন পুলিশ যাচাই-বাছাই করে। এসময় তাদের নামে ঢাকার নিউমার্কেট থানায় মামলার তথ্য পাওয়া যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সুস্মিতার নেতৃত্বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালানোর ঘটনায় থানায় মামলা হয়। আটকের পর তাদের আজ সন্ধ্যায় বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে সুস্মিতার ভাই সত্যজিৎ বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাকে অযথা আটক করা হয়েছে।
 
বেনাপোল পোর্ট থানা ওসি মো.

রাসেল মিয়া বলেন, সুস্মিতা ঢাকা ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা কালীন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে তার ও তার ভাইয়ের নামে মামলা হয়। সেই মামলায় তাদের আটক দেখানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা আছে কিনা যাচাই-বাছাই চলছে। আগামীকাল তাদের যশোর আদালতে পাঠানো হবে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কবি রফিক আজাদের স্মৃতিস্মারক বাড়ি

প্রয়াত কবি রফিক আজাদের ধানমণ্ডির বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়িটিতে প্রায় ২৯ বছর সপরিবারে বসবাস করেছেন রফিক আজাদ। এ বাড়িতে বসেই কবি লিখেছেন ২০টিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ। বুধবার সকালে বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু করে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।

চার ইউনিটের বাড়িটির একটিতে থাকছেন কবির স্ত্রী দিলারা হাফিজ। বাকি তিন ইউনিট অন্যদের নামে বরাদ্দ রয়েছে। আজ বুধবার বাড়িটির পূর্বাংশের দুটি ইউনিট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

ধানমণ্ডির ১ নম্বর সড়কের ১৩৯/৪এ ঠিকানার বাড়িটিতে (পশ্চিমাংশ) কমবেশি ৫ কাঠা পরিমাণ জায়গা রয়েছে।

১৯৮৮ সালে একতলা এ বাড়িটি রফিক আজাদের স্ত্রী কবি দিলারা হাফিজের নামে সাময়িকভাবে বরাদ্দ দেয় ‘এস্টেট অফিস’। দিলারা হাফিজ তখন ইডেন কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

বরাদ্দ কপিতে দেখা যায়, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক এম বেগমের স্বাক্ষর করা এ বরাদ্দনামায় উল্লেখ করা হয়, এই বরাদ্দের দ্বারা বাসার ওপর কোনো অধিকার বর্তাবে না, তবে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে বসবাস করতে পারবেন।

দীর্ঘদিন পর বাড়িটি নিজের বলে দাবি করেন সৈয়দ নেহাল আহাদ নামের এক ব্যক্তি। ২০১২ সালে নিজের মালিকানার পক্ষে আদালতের রায় পান তিনি। এ নিয়ে সৈয়দ নেহাল, হাউজিং অ্যান্ড পাবলিক ওয়ার্কস এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করে মামলা করেন দিলারা হাফিজ। এর ফলে আদালত বাড়িটির ওপর স্থিতাবস্থা দেন। পরের বছর এই স্থিতাবস্থা স্থায়ী করেন আদালত।

পরবর্তীতে মামলাটি ঢাকার সপ্তম সহকারী জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। আগামী মে মাসের ২৫ তারিখ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। এইসব তথ্য উল্লেখ করে গতকাল মঙ্গলবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, একই মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পৃথক চিঠি দেন দিলারা হাফিজ। এর মাঝেই আজ বুধবার সকালে বাড়িটি উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়।

দিলারা হাফিজ শিক্ষা ক্যাডারের একজন প্রভাষক হিসেবে বাড়িটির বরাদ্দ পেয়েছিলেন। সর্বশেষ সরকারি তিতুমীর কলেজে ৪ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডর চেয়ারম্যান হিসেবে চাকরি জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তার স্বামী রফিক আজাদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমিসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে তাদের দুই সন্তান—অভিন্ন আজাদ ও অব্যয় আজাদ প্রবাসে রয়েছেন।

এ বিষয়ে দিলারা হাফিজ বলেন, জাতীয় জীবনে একজন অগ্রগণ্য কবি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদ। তার স্মৃতি সংরক্ষণ ও ধারণের জন্যে বাড়িটির অংশবিশেষের স্থায়ী বন্দোবস্তের আদেশ পেতে গতকালও তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঘুরেছেন। মামলা চলমান থাকাবস্থায় উচ্ছেদ অভিযান চালানোর আশা করেননি তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ