সচিবালয়ের সামনে আমরণ অনশনে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইরা
Published: 13th, January 2025 GMT
রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শকেরা চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে সচিবালয়ের সামনে তাঁরা এ অনশন শুরু করেন। এর আগে সকাল থেকে তাঁরা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইরা জানিয়েছেন, ৫ ও ৬ জানুয়ারি তাঁরা একই দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন। তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের আশ্বাসে ৬ জানুয়ারি অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন। ওই সময় দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তাঁরা। দাবি মেনে না নেওয়ায় আজ তাঁরা আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআই রবিউল ইসলাম সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল চারটা পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি। তাই তাঁরা আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনার জন্য তিনজন প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠায়। তিনজন প্রতিনিধি এখনো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছেন। তাঁরা ফিরে এলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
অব্যাহতি পাওয়া আরেক শিক্ষানবিশ এসআই মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অন্যায়ভাবে আমাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল সমস্যার সমাধান করে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সচিবালয়ে আজ জানতে এসেছি, আমাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সম্প্রতি সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে পুলিশের ৪০তম ক্যাডেট ব্যাচের শিক্ষানবিশ ৩২১ এসআইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ৫ ও ৬ জানুয়ারি সচিবালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
আরও পড়ুনচাকরি ফেরতের দাবিতে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষানবিশ এসআইদের অবস্থান৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যস্ত জংশনে শুনশান নীরবতা
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন। দারুণ ব্যস্ত এই জংশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নেই যাত্রীদের পদচারণা। জংশনের প্লাটফর্ম নীরব হয়ে পড়ে রয়েছে।
রেলওয়ে কর্মচারীদের দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন রেলওয়ে কর্মচারীরা। ফলে সারা দেশের মতো সিলেট থেকেও ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এখানে কিছু যাত্রী না জেনে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনে এলেও পরে তারা ফিরে যান। এরপর থেকেই জংশনটিতে নীরবতা বিরাজ করছে। জংশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও রেলওয়ে পুলিশকে জংশনে টহল দিতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. সাজেদুল ইসলাম সোহাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, রেল চলাচল বন্ধের খবর জানা না থাকায় কিছু যাত্রী শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে আসেন। ট্রেন বন্ধ থাকায় তারা ফিরেও যান। তারপর থেকেই জংশনটিতে নীরবতা বিরাজ করছে। তবে স্থানীয় লোকেরা জংশনে আসা যাওয়া করছেন।
বাবুল মিয়া একজন শ্রমিক। কাজের জন্য ট্রেনে চড়ে আখাউড়ায় যাবেন তিনি। তিনি বলেন, “আমি আখাউড়া যাব কাজের জন্য। জংশনে এসে দেখি ট্রেন বন্ধ। এখন কীভাবে যাব এই চিন্তায় আছি। বাসে করে যেতে হবে।”
অপর যাত্রী সাজু মিয়া নামে বলেন, “সোমবার রাত থেকে যে ট্রেন বন্ধ, সেটি জানতাম না। জংশনে আসার পর জানতে পেরেছি। আমি ঢাকায় যাব। আমাকে যেতেই হবে। এখন যেতে হবে বাসে করে।”
রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. সাজেদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, “রেলওয়ে কর্মচারীদের কর্মবিরতি ঘিরে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্টেশন এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। যাত্রীর চাপ নেই।”
রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার গৌর প্রসাদ দাস পলাশ বলেন, “আমরা মাইকে যাত্রীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান করেছি, যারা অগ্রিম টিকিট কেটেছিলেন, তাদের টিকিট ফেরত দেওয়ার জন্য। ট্রেন চলাচল কোন সময় চালু হবে, এ বিষয়ে তথ্য নেই। আগে থেকে এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় জংশনে যাত্রীদের চাপ নেই। যাত্রীরা বিপল্প পথে গন্তব্যে যাচ্ছেন।”
ঢাকা/মামুন/এস