নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়টা ছিল তামিল চলচ্চিত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। রজনীকান্ত ও কমল হাসানের মতো তারকারা তখন চল্লিশের কোঠায়। এছাড়া বিজয়, অজিত কুমার, অরবিন্দ স্বামী এবং আর মাধবনসহ নতুন প্রজন্মের তারকাদের ভিড়ে আরও একজন ছিলেন যিনি কেরিয়ারের শুরুতে বাজিমাত করলেও ভাগ্যের ফেরে হারিয়ে যান লাইমলাইট থেকে।

পশ্চিমবঙ্গে জন্ম নেওয়া মির্জা আব্বাস আলি ১৯৯৬ সালে তামিল চলচ্চিত্র ‘কাধাল দেশম’ দিয়ে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন যা বাণিজ্যিক সাফল্য পায়। তখন আব্বাসকে ‘হার্টথ্রব’ বলে অভিহিত করেন অনেকেই। রাতারাতি স্টার হয়ে যান তিনি। ঝুলিতে আসে একের পর এক ছবির অফার। 

তেলুগু ভাষায় ‘প্রিয়া ও প্রিয়া’, ‘রাজা’ এবং তামিল ভাষায় কান্নেঝুথি ‘পোট্টুম থোট্টু’, ‘পাদায়াপ্পা’ এবং ‘সুয়াম্বরম’র মতো ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। কমল হাসান ও শাহরুখ খান অভিনীত ‘হে রাম’-এ ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করার পর আব্বাস কান্ডুকোন্ডেইন কান্ডুকোন্ডেইনের সঙ্গে তার সবচেয়ে বড় ব্রেক পান। এই রোমান্টিক ছবিতে তিনি ঐশ্বরিয়া রায়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন মামুট্টি, অজিত কুমার এবং টাবু। পরের বছর তার ‘মিনালে’ বক্স অফিসে হিটের তকমা পায়।

২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অংশ’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন তিনি কিন্তু সেটি বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি। ২০০০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে আব্বাসকে তামিল চলচ্চিত্রের অন্যতম ভরসা যোগ্য অভিনেতা হিসাবে বিবেচনা করা হত। তবে ২০০৬ সালের দিকে আব্বাসের কেরিয়ার থমকে যায়।

হিন্দি সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি বেশ কয়েকটি তামিল চলচ্চিত্র ছেড়েছিলেন। কিন্তু তার দুটি হিন্দি ছবি ‘অংশ’ ও ‘অউর ফির’ ব্যর্থ হয়। তিনি যে অন্যান্য ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন সেগুলোও শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। ফলস্বরূপ আচমকাই যেন আব্বাসের সোনালি কেরিয়ার বন্ধ হয়ে যায়। কাছের মানুষের পরামর্শের বিরুদ্ধে গিয়ে আব্বাস তামিল এবং তেলুগু চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রের কাজের অফর লুফে নেন তিনি। তার চেয়ে কম জনপ্রিয় অভিনেতাদের পাশে দ্বিতীয় হিরোর রোলও করেছেন সেই সময়। পরবর্তী কয়েক বছর ধরে আব্বাসকে তেলুগু চলচ্চিত্রে ক্যামিও এবং সহায়ক অভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু আর সেই স্টারডম ফিরে পাননি।

২০১১ সালের পর ফিল্ম কেরিয়ারে পতনের বোঝা নিয়েই টেলিভিশন শোতে কাজ করেন। কয়েক বছর পর ইউটিউব চ্যানেল রেডনুলের সাথে কথা বলার সময় তিনি জানান, ওই সময় অভিনয় নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং তাই সব ছেড়ে নিউজিল্যান্ডে চলে যান।

২০১৫ সাল নাগাদ আব্বাস নিউজিল্যান্ডে পৌঁছেছিলেন নতুন জীবন গড়ার আশা নিয়ে। তবে সমস্ত অর্থ নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পর ছোটখাটো চাকরি করতে হয় একসময় দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি কাঁপানো এই তারকাকে।

রেডনুলিন ২০২২-এর সাথে একটি সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, একটি নির্মাণ সাইটে কাজ করা থেকে মেকানিক হিসাবে প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং এমনকি বছরের পর বছর ধরে সেখানে একটি পেট্রোল পাম্পেও কাজ করেছেন তিনি। অবশেষে মোটিভেশনাল স্পিকার হয়ে ওঠেন আব্বাস। ২০২৩ সালে ভারতে ফিরে আবার অভিনয়ে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে এখনও নতুন কোনো প্রজেক্টে চুক্তিবদ্ধ হননি তিনি। পরিবারের সঙ্গে চেন্নাইয়ে থাকেন তিনি। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রেল সেতুতে ধাক্কা, রূপসা নদীতে ডুবল লাইটারেজ জাহাজ

খুলনায় রূপসা রেল সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে রূপসা নদীতে ডুবে গেছে লাইটারের জাহাজ এমভি সেভেন সার্কেল-২৩। জাহাজটিতে ১ হাজার ১৭৫ টন সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ছিল বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জাহাজের সুকানি ইমাম হোসেন লিটু ও গ্রীজার অমিত কুমার শীল জানান, তারা মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া এলাকা থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল নিয়ে রূপসায় সেভেন রিংস সিমেন্ট ফ্যাক্টরির দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় রূপসা রেল সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে জাহাজটি ডুবে যায়।

জাহাজে থাকা ১৩ জন কর্মচারীকে জাহাজ কর্তৃপক্ষের ২টি ট্রলার এসে উদ্ধার করে তীরে উঠায়।

ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে জাহাজটি উদ্ধার কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ