সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ও সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর বক্তব্য নিয়েছে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তে গঠিত টাস্কফোর্স। 

সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান কার্যালয়ে ডেকে তাঁর বক্তব্য নেওয়া হয়।

টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ও পিবিআই প্রধান মোস্তফা কামাল সমকালকে বলেন, সাগর–রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এজন্য সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, আরও অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় ইকবাল সোবহান চৌধুরীর বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনার পর তিনি এ নিয়ে অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিক নেতা ছিলেন। ঘটনাটির ব্যাপারে তাঁর কাছে এমন কোনো তথ্য থাকতে পারে, যা তদন্তে সহায়ক হবে। এ কারণেই তাঁর বক্তব্য নিয়েছেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। এর আগে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

পিবিআই প্রধান বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই আমরা একটি ঘোষণা দেব যে, সাগর–রুনি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে তিনি যেন আমাদের জানান। এজন্য ফোন নম্বর দেওয়া থাকবে। যে কেউ পরিচয় প্রকাশ করে বা গোপন রেখে তথ্য দিতে পারবেন। এর মাধ্যমে অজানা তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। 

পিবিআই সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে সোমবার সকালে পিবিআই কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। এরপর সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাঁর বক্তব্য নেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। 

এর আগে গত বছরের ২৩ অক্টোবর সাগর–রুনি হত্যা মামলার তদন্তে চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছয় মাসের মধ্যে টাস্কফোর্সকে তদন্ত শেষ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। টাস্কফোর্সে পিবিআই প্রধান ছাড়াও রয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তর ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একজন করে অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক এবং র‍্যাব থেকে পরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন সাগর–রুনি। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক এবং রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ছিলেন। ওই ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। থানা পুলিশের পর মামলার তদন্ত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল ডিবি ব্যর্থতা স্বীকার করলে আদালত র‍্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। সর্বশেষ গত বছরের ৪ নভেম্বর মামলা পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নদীতে ভেসে উঠল আরেকজনের লাশ, নিহত বেড়ে ৫

শরীয়তপুরে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নদীতে পড়ে নিখোঁজ আরো একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের কাশীপুর এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে, তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ জনে দাঁড়াল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করেন সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এ সময় এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া দেন। ডাকাতদল পালিয়ে শরীয়তপুরের তেতুলিয়া এলাকায় এলে স্থানীয়রা বাল্কহেড দিয়ে ডাকাতদের স্পিড বোটের গতিপথ রোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা ও গুলি ছুঁড়লে বেশ কয়েকজন আহত হন। একপর্যায়ে ডাকাতেরা স্পিড বোট ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ক্ষুব্ধ জনতা তাদের গণপিটুনি দেয়। আর ধাওয়া দিয়ে সাত জনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুই জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বাকি পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনের মৃত্যু হয়। তবে, স্পিড বোটে ঠিক কতজন ছিল সেটা জানা যায়নি।

এদিকে, এ ঘটনার পরে রবিবার বিকালে শরীয়তপুর জেলা লাগোয়া ও মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের বিদ্যাবাগীশ এলাকার কীর্তিনাশা নদী থেকে অজ্ঞাত একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোমবার ভেসে উঠে আরো একজনের মরদেহ। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় পুলিশ ধারণা করছে, নিহতরা ডাকাত চক্রের সদস্য। সেদিন গণপিটুনিতে নদীতে পড়ে যান তারা। দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ডাকাতির চেষ্টা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পালং মডেল থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে পালং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। এতে গণপিটুনিতে আহত পাঁচ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- মুন্সীগঞ্জের রিপন (৪০), শরীয়তপুরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), নড়িয়ার সাঈদ (২৫), মাদারীপুরের সজীব (৩০) ও শরীয়তপুরের রাকিব গাজী (৩০)। তাদের ঢাকা মেডিকেল থেকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

ঢাকা/আকাশ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহজাদপুরে আগুনে নিহত চারজনের মরদেহ ঢামেকে
  • অনিয়মের খোঁজ নেওয়ায় সাংবাদিকের চাকরি খাওয়ার হুমকি বেরোবি কর্মকর্তা
  • ইসরায়েলে ছুরি হামলায় নিহত ১, আহত ৩
  • ভোলায় চুরির অভিযোগে একজনের দুই চোখে গুরুতর জখম, কাটা হলো দুই আঙুল
  • ৭টি মৌলিক হক
  • ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডা: পশ্চিমাদের জেগে ওঠার বার্তা
  • নদীতে ভেসে উঠল আরেকজনের লাশ, নিহত বেড়ে ৫
  • সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১১৬ বার পেছাল
  • সাগর-রুনি হত্যা : নিরাপত্তারক্ষী পলাশ রুদ্রকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি
  • মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে এক যুগ চাকরি, মামলা