বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ পৌর শহরে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন মো. জহুর আলী (৩০)। পুলিশ তাঁর পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। ঘটনার এক মাস পর তাঁর বড় ভাই হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিলেন। এতে ৯৯ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছিল।

এ মামলায় সাবেক পরিকল্পনামমন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকসহ ১১৯ জন গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। একই মামলায় আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে বর্তমানে জেলে আছেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নাদের বখতসহ সাতজন।

এ অবস্থায় আজ সোমবার আদালতে হাজির হয়ে বাদী ও জখমি দুই ভাই আপসনামা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, আসামিরা জামিন পেতে তাঁদের কোনো আপত্তি নেই। এ মামলা চালাতে তাঁরা আর আগ্রহী নন। সুনামগঞ্জের দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক নির্জন কুমার মিত্র আপসনামার আবেদনটি মামলার নথিতে রেখেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধক নুরুল আলম।

এর আগে মামলা দায়েরের ১ মাস ২০ দিন পর হাফিজ আহমদ আদালতে হলফনামা দিয়ে বলেছিলেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি কোনো কিছু জানেন না, কোনো আসামিকে চেনে না। পরে গত ১১ নভেম্বর তিনি আদালতে এলে সেখান থেকে একদল যুবক তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। রাতে সদর থানা থেকে তাঁকে নেন পরিবারের লোকজন।

আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে বাদীকে আদালত এলাকা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ১১ নভেম্বর ২০২৪

গুলিতে আহত মো.

জহুর আলী এখন কিছুটা সুস্থ। আজ আদালতে আপসনামা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আমার ভাই (বাদী) সহজ-সরল মানুষ। আমি তখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলাম। ভাইকে ভুল বোঝানো হয়েছে। আমাকে গুলি করছে পুলিশ। আমি এখনো পুলিশের বিচার চাই। কিন্তু একজন সাংবাদিক সবাইকে আসামি দিয়ে ব্যবসা করেছে।’

জহুর আলী বলেন, ‘যেহেতু পুলিশ আমাকে গুলি করেছে, তাই পুলিশের বিরুদ্ধে এ মামলা করার কথা ছিল। পরে দেখা যায়, মামলায় ৯৯ জন আসামির নাম। নাম ছাড়া আরও আসামি ২০০ জন। পরে মামলা নিয়া ব্যবসা শুরু হয়। টাকা নিয়ে জেলে ঢুকায়, বের করে। মামলায় যাদের নাম নাই তাদেরই পুলিশ ধরে বেশি।’ জহুর আলী আরও বলেন, ‘আমরা আর মামলা চালাব না বলেছি। আর কারও শত্রু হতে চাই না। আমি বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাব। তাই এ মামলার ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে চাই।’

আরও পড়ুনআন্দোলনে গুলিবিদ্ধ জহুর আলী লাইভে এসে বললেন, ‘এই মামলা নিয়া এখন ব্যবসা শুরু হইছে’১৪ নভেম্বর ২০২৪

জহুর আলীর বাড়ি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বাধনপাড়া এলাকায়। তিনি শহরের একটি সার-বীজের দোকানে চাকরি করতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার এরোয়াখাই গ্রামে।

মামলার পর বাদী হাফিজ আহমদও একপর্যায়ে স্বীকার করেন, তিনি এত লোককে আসামি দিতে চাননি। ওই সাংবাদিকই সব করেছেন। আদালতে দেওয়া হলনামায় তিনি লিখেছেন, তাঁর বাড়ি দোয়ারাবাজার উপজেলার এরোয়াখাই গ্রামে। ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জ থেকে অনেক দূরে। তাই তিনি ঘটনার বিষয়ে কোনো কিছু জানেন না। আসামিদেরও চিনেন না।

আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে জামিন পেলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান০৯ অক্টোবর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ আর নেই

ডেইলি অবজারভারের বিজনেস এডিটর ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। 

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, পুত্রবধূ, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

চট্টগ্রামে আশির দশকে সাংবাদিকতা শুরু করেন নিজাম উদ্দিন আহমদ। তিনি চট্টগ্রামে নিউ নেশন-এর ব্যুরো প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি রয়টার্স ঢাকা ব্যুরোতে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন।

নিজাম উদ্দিন আহমদের স্ত্রী জানান, তাকে আজ বাদ আসর চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার আধুনগর গ্রামে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। 

নিজাম উদ্দিনের মৃত্যুতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া, চিটাগং জার্নালিস্ট ফোরাম ঢাকার (সিজেএফডি) সভাপতি মুজিব মাসুদ, সহ-সভাপতি কাশেম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন রোকন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্নেল অলির ওপর হামলায় আ’লীগের ২০১ জন আসামি
  • দেশেই ফেসবুক, গুগলের সার্ভার আনার উদ্যোগ
  • গত সরকারের সুবিধাভোগী ৩ জনের আবেদন বাতিল
  • সিলেটে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীর লাশ উত্তোলন
  • সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ আর নেই