এবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গেন্ডারিয়া ঢাকা (দক্ষিণ) কার্যালয়ের ছাদে লাগানো মাদকরোধক ডিসপ্লেতে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’ লেখা দেখা গেছে। এ ঘটনায় অধিদপ্তরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের পাশপাশি, পুলিশ থানায় বাদি হয়ে শাান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অধিদপ্তরের দক্ষিণ কার্যালয়ের ছাদের বাইরের দিকে একটি ডিসপ্লে আছে। সেখানে ‘মাদককে না বলুন’সহ মাদকবিরোধী নানা শ্লোগান ২৪ ঘন্টা দেখা যায়। কিন্তু গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে ডিসপ্লেতে হঠাৎ ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’ লেখা দেখা যায়। এ সময় স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এ সময় খবর পেয়ে গেন্ডারিয়া থানার টহল পুলিশ এসআই মো.

আব্দুর কাদির ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে আসেন। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে তারা স্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে ডিসপ্লেটি বন্ধ করে দেন। 

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি। তবে দক্ষিণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাঞ্জারুল ইসলাম বলেন, ‘‘ডিসপ্লে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করায় আমার কাছে ফুটেজ নেই। তবে নতুন যে পেন ড্রাইভ লাগানো আছে, সেখানে লেখা থাকলে থাকতেও পারে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পরিচালক লিখিতভাবে প্রধান কার্যালয়কে জানিয়েছেন। তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি ঘটনা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’’

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে গেন্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু শাহেদ ঘটনার সতত্য নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাদি হয়ে ডায়েরি করেছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও জিডি করতে এসেছেন।’’

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এটি পরিকল্পিত ঘটনা বলে আমাদের কাছে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে। তদন্তের পরই বিস্তারিত জানাতে পারবো।’’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি এই অফিসে রাতের বেলা যেন কেউ ঢুকেতে না পারে সেজন্য প্রধান ফটক আটকে রাখা হয়। থাকে দারোয়ান। এরপরও ছাদে যেতে হলে সেখানে দুজন নিরাপত্তার রক্ষি থাকে। যাদের কাছে ছাদে ওঠার চাবি থাকে। আবার ওই ডিসপ্লেতে আগের পেন ড্রাইভ খুলে নতুন করে পেন ড্রাইভ লাগানো হয়েছে। ফলে ভেতরের কারো সহায়তা না থাকলে  পেন ড্রাইভ পরিবর্তন করা সম্ভব না বলে তারা মনে করছেন।  

এ দিকে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিদপ্তরে এখনও ফ্যাাসিবাদের দোসররা রয়েছে। তারা অধিদপ্তর বা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এ ধরনের কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। 

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন নিজেদের ইচ্ছামতো সিন্ডিকেট তৈরি করে অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মাঝেমধ্যেই অধিদপ্তরে ঘটছে নানা অনিয়ম বা দুর্নীতির ঘটনা। 

উল্লেখ্য এর আগেও কমলাপুর স্টেশনসহ ঢাকার বাইরে আরও কয়েকটি জেলায় সরকারি অফিস কিংবা অধিদপ্তরের  ডিসপ্লেতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নানা শ্লোগান ভেসে ওঠার ঘটনা ঘটেছে। 

এমআর//

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ