আমরা প্রতিবেশী, একসঙ্গে থাকতে হবে: বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতীয় সেনাপ্রধান
Published: 13th, January 2025 GMT
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের বিষয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, ‘‘প্রতিবেশীদের মাঝে বিদ্বেষ কোনো পক্ষের জন্যই ভালো বয়ে আনবে না।’’
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেন তিনি।
ভারতের সেনাবাহিনীর ‘আর্মি ডে’র আগে সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, ‘‘আমরা প্রতিবেশী। আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে, একে অপরকে বুঝতে হবে এবং কোনো ধরনের শত্রুতা আমাদের একে অপরের স্বার্থের জন্য ভালো হবে না।’’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় এই সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘সম্প্রতি বাংলাদেশের সেনাপ্রধান যে মন্তব্য করেছিলেন, আমি আপনাকে সেটি মনে করিয়ে দিতে চাই। তিনি বলেছিলেন, কৌশলগত দিক থেকে ভারত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দিক থেকেও বিষয়টা একই। কৌশলগত কারণে আমাদের জন্যও বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ।’’
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সীমান্তের বেশিরভাগই ভারতের সঙ্গে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ছোট একটি অংশ মিয়ানমারের সঙ্গে রয়েছে।’’ দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো ‘সমস্যা নেই’ দাবি করেছেন জেনারেল দ্বিবেদী।
ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যখন ক্ষমতার পালাবদল ঘটল, তখন থেকেই আমি বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এমনকি, গত ২৪ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সেও আমাদের কথা হয়েছে।’’
‘‘সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে বলা যায়, সেটি আবারো আগের মতোই চলছে। আমাদের কর্মকর্তারা সেখানে এনডিসিতে যোগ দিয়েছেন। এই বিষয়ে কোনো ছাড় নেই। কেবল একটি বিষয় হল, যে যৌথ মহড়া চালানো হতো, এখনকার পরিস্থিতির কারণে আমরা কিছু সময়ের জন্য সেটি স্থগিত করেছি। পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেই মহড়াও হবে।’’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সীমান্ত এলাকায় বেড়া নির্মাণ করা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাঝেই ভারতীয় সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী বাংলাদেশ ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে কথা বললেন।
বার্ষিক এই সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচিত সরকারের বিষয়ে উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, ‘‘বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। সেদিক থেকে সেনাবাহিনী পর্যায়ে এখন পর্যন্ত দুই দেশের সম্পর্ক ভালো এবং একদম সঠিক রয়েছে।’’
ঢাকা/সুচরিতা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শাবিপ্রবির সাংগঠনিক সপ্তাহে নবীনদের উচ্ছ্বাস
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলছে সাংগঠনিক সপ্তাহ। সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর টেন্টে জমেছে নবীনদের ভিড়। নিজেদের প্রতিভা বিকাশ ও অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত নবীন শিক্ষার্থীরা।
গত ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ সাংগঠনিক সপ্তাহের মূল কার্যক্রম শুরু হয় ২৬ জানুয়ারি থেকে। এবারের আয়োজনের বিশেষত্ব হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে ৩৭টি সংগঠন একসঙ্গে অংশগ্রহণ করছে, যেখানে আগে অর্জুন তলায় দুই সপ্তাহে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে এ কার্যক্রম পরিচালিত হতো।
এ আয়োজনকে ঘিরে ক্যাম্পাস জুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিভিন্ন সংগঠনের টেন্ট ঘুরে শিক্ষার্থীরা নিজেদের আগ্রহ অনুযায়ী সদস্য হতে ফর্ম সংগ্রহ করছেন। কেউ সংগীত, কেউবা বিতর্ক বা ফটোগ্রাফি নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
বাংলা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী তানভীর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বুঝলাম, পড়াশোনার বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে। আমি ফটোগ্রাফি ও বিতর্ক নিয়ে কাজ করতে চাই। তাই এ দুই সংগঠনে সদস্যপদ নিতে ফর্ম নিয়েছি।”
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া জাহান বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলাম। এখানে এসে দেখলাম, অনেক সংগঠন সাংস্কৃতিক চর্চা করে। গানের প্রতি ভালোবাসা থেকেই একটি সংগঠনে সদস্য হয়েছি। পাশাপাশি, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনেও যোগ দিয়েছি, যাতে মানুষের জন্য কিছু করতে পারি।”
সরেজমিনে দেখা যায়, সংগঠনগুলোর সদস্যরাও ব্যস্ত সময় পার করছে। কেউ নতুনদের ক্যাম্পাস ও সংগঠনের নিয়ম জানাচ্ছে, কেউ সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিবরণ দিচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠন ব্লাড গ্রুপিং, ফটোগ্রাফি ওয়ার্কশপসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যারা জানিয়েছেন, সাংগঠনিক সপ্তাহ শুধু সদস্য সংগ্রহের অনুষ্ঠান নয়, এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশেরও বড় সুযোগ। নতুনদের উচ্ছ্বাস ও অংশগ্রহণই প্রমাণ করে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলোর অংশ হতে কতটা আগ্রহী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, “আগের বছরগুলোর মতো আলাদা ধাপে সাংগঠনিক সপ্তাহ না করে এবার একসঙ্গে আয়োজন করা হয়েছে। যাতে সব সংগঠন সমানভাবে সদস্য সংগ্রহের সুযোগ পায় এবং নবীন শিক্ষার্থীরাও একসঙ্গে সব ক্লাবের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।”
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী