গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাল পাতা নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই দল জেলের সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। এ সময় এক পক্ষের নৌকা ডুবিয়ে জেলেদের সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। তারা পরে অন্য জেলেদের সহায়তায় তীরে ফেরেন। রোববার রাত ১০টার দিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের চর বিজয় এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। 

আহত জেলেদের মধ্যে মম্বিপাড়ার বাসিন্দা মো.

নাসির (৩৪) ও মাঝি ইলিয়াস ফকিরকে (৩১) বরিশালে পাঠানো হয়েছে। অন্য জেলে আবদুল মালেক (৫০) কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। 

আহত জেলে ও কুয়াকাটার আড়তদাররা জানান, উপজেলার নিজামপুর এলাকার সোবহান মাঝির নেতৃত্বে শত শত ট্রলারে করে বেহুন্দি জাল নিয়ে যাওয়া হয় বঙ্গোপসাগরে। এর মধ্যে কিছু জাল তারা গঙ্গামতি এলাকায় ইলিয়াস ও নাসিরদের ফেলা ইলিশের জালের ওপরে ফেলে। এতে ইলিশের জালের ক্ষতি হয়। বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সোবহান মাঝির নেতৃত্বে সাতটি ট্রলারের ১৫-২০ জন ইলিয়াসের পক্ষের ওপর হামলা করে। এ সময় তাদের মাছ ধরার ট্রলার ডুবিয়ে সবাইকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়। পরে তারা অন্য ট্রলারের সহায়তায় তীরে আসেন।

আহত জেলে ইলিয়াস ফকির বলেন, ‘ওরা আমাদের জাল নষ্ট করেছিল। এ কারণে তাদের ডেকে তীরে এসে এ নিয়ে সমাধানের প্রস্তাব দেই। তারা প্রথমে রাজি হয়। পরে হঠাৎ হামলা চালায়। আমার নাক ও কপাল ফেটে গেছে। আমি সাগরে পড়ে গেলে আমার ভাই অন্য ট্রলার নিয়ে উদ্ধার করে।’ এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন তিনি। 

এ বিষয়ে সোবহান মাঝির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। রোববার রাতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কুয়াকাটা পৌর মেয়র বাজারের আড়তদার সমিতির সভাপতি মো. আবদুর রহিম খান। তিনি বলেন, তারা অবৈধ বেহুন্দি জাল নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরে। ইলিশ শিকারি বৈধ জেলেদের ক্ষতি করে। রোববার কোনো রকম মীমাংসার সময় না দিয়েই তারা জেলেদের ওপর হামলা করেছে। তাদের লাগাম না টানলে সমুদ্রে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

কলাপাড়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আহত জেলেরা আইনের আশ্রয় নিলে বিষয়টি নৌ-পুলিশ খতিয়ে দেখবে। এ ছাড়া তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। অবৈধ বেহুন্দি জাল বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। 

এ বিষয়ে সংবাদ পেয়েছেন বলে জানান কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, আহত জেলেরা যদি আইনের আশ্রয় নেন, তাহলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

খাতুনগঞ্জে ডিসি ও মেয়রের অভিযান, ভোজ্য তেল না পেয়ে ক্ষোভ 

দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেছেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। মজুদদারির বিরুদ্ধে এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই অভিযান পরিচালনা করেন তারা। অভিযানে বাজারে ভোজ্য তেলের সরবরাহ দেখতে না পেয়ে তারা ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের উপর ক্ষুদ্ধ হন। 

এ ব্যাপারে আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ভোজ্যতেলের আমদানিকারক, উৎপাদনকারী ও আড়তদারদের নিয়ে জরুরি সভা আহ্বান করেছেন।

আজ সোমবার (৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে খাতুনগঞ্জে যৌথভাবে বাজার তদারকি ও বিভিন্ন পণ্যের মজুদ ও সরবরাহ কার্যক্রম দেখতে অভিযানে নামেন চট্টগ্রামের মেয়র ডা. শাহাদাত ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এ সময় তারা খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়ত ও পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করেন এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার কারসাজি, জড়িতদের ৫৩.২৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড

নড়াইলে বাজার মনিটরিং শুরু

অভিযানকালে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত সাংবাদিকদের বলেন, “সাধারণ মানুষ বেশ কয়েক দিন ধরে কমপ্লেইন করছিল, ভোজ্যতেল বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে। এবং যেগুলো বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১৮০ টাকা, ২০০ টাকার উপরে চলে গেছে। সে কারণে আজ আমরা এখানে এসেছি। এখানে দেখতে পাচ্ছি ভোজ্যতেল মোটেও পাওয়া যাচ্ছে না। দুয়েকটা জায়গায় যে তেলগুলো দেখেছি, ল্যাব টেস্টের জন্য অলরেডি নিয়েছি। আমাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা আছেন। পরীক্ষা করে দেখব, আদৌ এগুলো ভোজ্য তেলের মতো কি-না। আমরা মনে করি রমজান মাসে নিত্যপণ্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত।’’

মেয়র জানান, গত প্রায় এক মাস ধরে চট্টগ্রামের বাজারে বোতলের সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। রোজা শুরুর আগের সপ্তাহ থেকে সেই সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।

মেয়র বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আগামীকাল ব্যবসায়ীদের সার্কিট হাউজে ডেকেছি। তেলের ব্যবসায়ী যারা আছে, উৎপাদনকারী ও আমদানিকারক সবার সঙ্গে বসব। কেন তারা দাম বাড়াল? দাম কমানোর জন্য তাদের ডাকছি। অন্যথায় আমাদের হয়ত আইনগত ব্যবস্থায় যেতে হবে।’’ 

জেলা প্রশাসক বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা যাতে বাজারে তেল সংকট সৃষ্টি করতে না পারে এবং নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে সক্রিয় আছে। 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কৃষকের ৮ টাকার লেবু কয়েক হাত বদলের পর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়
  • খাতুনগঞ্জে ডিসি ও মেয়রের অভিযান, ভোজ্য তেল না পেয়ে ক্ষোভ 
  • বগুড়ায় রোজা শুরুর আগেই সবজির বাজার চড়া, লেবুর হালি ৬০ টাকা