ফরিদপুরে সাইনবোর্ড খুলতে গিয়ে মই থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু
Published: 13th, January 2025 GMT
ফরিদপুরে সাইনবোর্ড খুলতে গিয়ে মই থেকে ছিটকে পড়ে মারুফ লস্কর (১৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাত আটটায় শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মারুফ ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামের সোহরাব লস্করের ছেলে। রিকশাচালক বাবার কাজের সুবাদে সে ফরিদপুর শহরের মধ্য আলীপুর রাজ্জাকের মোড় এলাকায় সপরিবার থাকত। মারুফ এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে ছোট এবং পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এলাকাবাসী জানান, সে পড়াশোনার পাশাপাশি পোস্টার সাঁটানো বা সাইনবোর্ড লাগানোর কাজ করত।
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গতকাল বিকেল চারটার দিকে শহরের রাজ্জাকের মোড় এলাকায় একটি খাবার হোটেলের সাইনবোর্ড নামানোর কাজ করছিল মারুফ। এ জন্য মই বেয়ে ওপরে উঠতে গিয়ে সে হঠাৎ পা ফসকে নিচে সড়কে পড়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকাবাসী। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এ মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মারুফের মরদেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
আজ সোমবার বেলা একটার দিকে সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামে মারুফের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে একটি চেয়ারের বসে শিশুর মতো কাঁদছেন তার বাবা সোহরাব। বিলাপ করতে তিনি বলছিলেন, ‘আমার সোনা হারায় গেল রে! এখন কে আমাকে বাবা ডাকবে? কে পাশে দাঁড়াবে? আমার সব আশা জ্বইলা-পুইড়া শেষ হইয়া গেল।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা
সিলেটে সকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করার পর বিকাল ও সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার এবং ছাত্রলীগের এক নেতারা বাসায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় বিকালে হামলা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা চালানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নোয়াখালীতে বিনোদনকেন্দ্রে হামলা, পুলিশসহ আহত ৭
রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু
হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।
সিলেট নগরীর শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়ে’ হামলা চালায় একদল মানুষ। তারা মিছিল নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।
মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অবশ্য এসব হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাঠে নামে। তারা ভিডিওতে দেখা যাওয়া চার-পাঁচজন মিছিলকারীকে ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।