তথ্য গোপন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ রেহানা ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক (রূপন্তী) এবং ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাগুলোতে রেহানার আরেক মেয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক এবং রেহানার বোন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আখতার হোসেন আজ সোমবার প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

দুদক জানায়, ঢাকা শহরে রাজউকের আওতাধীন এলাকায় নিজ পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকলে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ নেই। শেখ রেহানা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এসব তথ্য গোপন করে পূর্বাচলে তিনটি প্লট বরাদ্দ নেন।

আজকের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ঢাকা শহরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন এলাকায় বাড়ি, ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও হলফনামায় তা গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কূটনৈতিক এলাকায় একটি ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন শেখ রেহানা। প্লট বরাদ্দ নিতে তাঁর মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে বিশেষ ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করেন। আর শেখ হাসিনা তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও সরকারি কর্মচারী হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকল্পের বরাদ্দ–বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে প্লট বরাদ্দ দেন।

ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে করা মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনপূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ: শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদের নামে মামলা১২ জানুয়ারি ২০২৫

এর আগে গতকাল রোববার শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ (পুতুল) ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট নিজেদের নামে করিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এ মামলা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ