কুষ্টিয়ায় বিএনপির হামলায় আহত জামায়াত কর্মীর মৃত্যু
Published: 13th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় বুড়াপাড়া-মিটন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলায় আহত জামায়াতে ইসলামীর কর্মী খোকন মোল্লা (৩২) মারা গেছেন।
উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুরাপাড়া গ্রামে রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে হামলায় খোকন মোল্লা আহত হয়। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল হতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে বিএনপির ক্যাডার বাহিনীর হামলায় জামায়াতের ৩৫ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়।
আরো পড়ুন:
বাগেরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু
মৌলভীবাজারে স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পণ
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেম ও সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজাউদ্দিন জোয়াদ্দার সাংবাদিকের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অতি সত্বর সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
স্থানীয় বুড়াপাড়া-মিটন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা রাশেদ মাহমুদ নাসির জোর করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে সরিয়ে দিয়ে নিজে সভাপতি হওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমলা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমীর নাসিম রেজা মুকুলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এর প্রেক্ষিতে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হলে স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষের লোকজনকে নিযে ওই প্রতিষ্ঠানে সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করে। জামায়াত কর্মীরা বৈঠকের জন্য স্কুল প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে নাসির তার লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে অনেকে গুরুতর আহত হয়। গুরুতর আহত খোকন মোল্লা কুষ্টিয়ায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।
জামায়াতের কুষ্টিয়া জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেম বলেন, “বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য জামায়াতের নেতারা প্রশাসনের শরণাপন্ন হন। স্থানীয় বিএনপি নেতারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দেন। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি। বিএনপির নেতারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেন।’’
সংঘর্ষের পর মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাওয়াকে কেন্দ্র করে জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। পরবর্তীতে যে কোনো সহিংসতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পত্রিকা বিক্রেতাকে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই
প্রায় ২০ বছর ধরে গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পত্রিকা বিক্রি করতেন আনিস মিয়া ঠান্ডা। সংসারের অতিরিক্ত ব্যয় মেটানোর জন্য সকালে পত্রিকা বিক্রির পর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালাতেন। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে তার রক্তাক্ত মরদেহ সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
স্বজনদের দাবি, আনিস মিয়াকে হত্যা করে তার ইজিবাইক নিয়ে পালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
আনিস গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কিশামত ফলিয়া গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে।
নিহতের প্রতিবেশী সুজন মাস্টার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হন আনিস। রাত দেড়টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে কয়েকজন সন্ত্রাসী যাত্রী সেজে আনিসের ইজিবাইকে ওঠেন। তারা আনিসকে গাইবান্ধা স্টেডিয়ামের দিকে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর ওই ব্যক্তিরা আনিসের কাছে ইজিবাইকের চাবি চান। চাবি না দেওয়ায়, আনিসের সঙ্গে তাদের প্রথমে ধ্বস্তাধস্তি হয়। পরে তারা ছুরি দিয়ে আনিসের পেটে আঘাত করেন। আনিসকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে তারা ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যান।
শুক্রবার ভোরে এক পথচারী আনিসকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে চিনতে পারেন এবং বাড়িতে খবর দেন। পরে তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেন তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আনিসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৯টার দিকে আনিস মারা যান।
নিহতের চাচাতো ভাই রুহিল মিয়া জানান, আনিসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখেছে রংপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে তারা। লাশ দাফনের পর গাইবান্ধায় হত্যা মামলা করবে পরিবার।
গাইবান্ধা পত্রিকা বিতানের স্বত্তাধিকারী আব্দুর রহমান জানান, আনিস দীর্ঘদিন ধরে গাইবান্ধা শহরে পত্রিকা বিক্রি করতেন। তিনি ভালো মানুষ ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, “স্টেডিয়াম এলাকায় এক যুবক সন্ত্রাসীদের আঘাতে মারা গেছেন বলে খবর পেয়েছি। কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ