সংস্কারের নামে দেশে নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান। তিনি বলেন, ‘চাল, ডাল, তেলসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম দিন দিন বেড়েই চলছে। চারদিকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মানুষ। আমরা মনে করি, অতি শিগগির একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের মাধ্যমেই মানুষের মৌলিক অধিকার, সামাজিক অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব।’

আজ সোমবার দুপুরে নোয়াখালীর হাতিয়া এ এম উচ্চবিদ্যালয় মাঠে দেশবিরোধী অপতৎপরতা রুখতে ও গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে এ কথাগুলো বলেন মাহবুবের রহমান। হাতিয়া উপজেলা বিএনপি এই জনসমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মী ও সমবেত জনতার উদ্দেশে মাহবুবের রহমান বলেন, ‘আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা রাজপথে ছিলাম বলেই গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আজকের এই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ কারও একক অর্জন নয়, এটা বাংলাদেশের আপামর মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে।’

মাহবুবের রহমান বলেন, ২০২৪-এর স্বৈরাচারমুক্ত আন্দোলনে বিএনপির ৪২২ নেতা-কর্মী শাহাদাতবরণ করেছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনা গত ১৭ বছরে গুম-খুন, হামলা, মামলা ও নির্যাতনের মাধ্যমে তাঁর বাবার মতো বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাংলার আপামর মানুষ একটি সুসংগঠিত গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তা নস্যাৎ করে দিয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সমাবেশে মাহবুবের রহমান বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা বিগত সময়ে এত অপকর্ম করার পরেও তারা এখনো প্রকাশ্যে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়, অনতিবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে হাতিয়ার সাধারণ মানুষ এর কঠিন জবাব দেবে।

মাহবুবের রহমান আরও বলেন, ‘হাতিয়া একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল, কিন্তু এখানকার সাধারণ মানুষের জনদুর্ভোগের শেষ নেই। যাতায়াতের জন্য ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই। ভালো কোনো হাসপাতাল নেই। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, বাংলাদেশের মানুষের ম্যান্ডেট নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে হাতিয়া হবে একটি পর্যটন এলাকা। এখানকার জলপথ ও স্থলপথের যাতায়াতব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হবে। এ ছাড়া যেসব এলাকায় নদীভাঙন রয়েছে, সেখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। হাতিয়াবাসীর বাণিজ্যিক উন্নয়নের জন্য এখানে একটি নৌবন্দর করা হবে। হাতিয়ার মানুষ চিকিৎসার জন্য যাতে মাইজদী ও ঢাকা না যাওয়া লাগে, সে জন্য উন্নত মানের হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে জনসমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দীন চৌধুরী, সভাপতি আলা উদ্দিন, সাবেক আহ্বায়ক শওকত হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিচানুল আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা কাদের হালিমী, হাতিয়া পৌরসভা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোকাররম বিল্লাহ, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হোসেন ওরফে আজাদ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সম্মেলন বাতিল চেয়ে বিএনপির একাংশের বিক্ষোভ মিছিল

হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন বাতিল চেয়ে দলের একাংশ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। শুক্রবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে গোবিন্দপুর বাজারে সমাবেশ হয়। 

সমাবেশে বক্তৃতা করেন ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি সিরাজ উদ্দিন, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব এবিএম জহির উদ্দিন সোহেল, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আব্দুস সাত্তার, নূরে আলম এরশাদ প্রমুখ। রোববার গোবিন্দপুর বাজারে সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।

বক্তারা বলেন, গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম হিমেল ও তাঁর সহযোগীরা নিজেদের লোক নিয়ে সাজানো সম্মেলন করতে চাচ্ছেন। এটা দলের নেতাকর্মীরা মানে না। আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে করা কাউন্সিলের চিন্তা বাদ দিয়ে নির্যাতিত ত্যাগী নেতাকর্মীকে স্থান দিতে হবে। 

এ বিষয়ে শফিকুল ইসলাম হিমেল বলেন, সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিএনপি। মিছিল করেছে যুবদল। তাদের কোনো সাংগঠনিক এখতিয়ার নেই সম্মেলনের বিরুদ্ধে মিছিল করার। 

এ প্রসঙ্গে সিরাজ উদ্দিনের ভাষ্য, কথাটা ঠিক নয়। ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব শহীদুল ইসলামসহ একাধিক বিএনপি নেতা মিছিলে অংশ নিয়েছেন। তারা বক্তব্যও দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর। 

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম ও হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মবিনকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তাদের ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ