গজনফর-ইব্রাহিমকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল আফগানদের
Published: 13th, January 2025 GMT
আফগান স্পিনার মুজির উর রহমান কিছুটা আলোর বাইরে চলে গেছেন। কিন্তু তার জায়গা পূরণে রহস্য স্পিনার হিসেবে আর্বিভাব হয়েছে আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফরের। ১৮ বছরের এই ডানহাতি স্পিনারকে নিয়ে পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা করেছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। সঙ্গে ফিটনেস ফিরে পাওয়া টপ অর্ডার ব্যাটার ইব্রাহিম জাদরান ফিরেছেন আফগান দলে।
তিন ফরম্যাটে আফগানদের নিয়মিত ও নির্ভারযোগ্য ব্যাটার হয়ে উঠেছিলেন ইব্রাহিম। কিন্তু ইনজুরিতে পড়ে দলের বাইরে চলে যান তিনি। সারেতে তার সার্জারি করানো হয়েছে। ওই ইনজুরি কাটিয়ে বিপিএলে খুলনা টাইগার্সে খেলছেন ইব্রাহিম। তার ফিটনেস নিয়ে এসিবির নির্বাচকরা সন্তুষ্ট হওয়ায় তাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে নিয়েছে।
আফগানদের বাকি নামগুলো অনুমিত। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী আছেন দলে। রহমত শাহ ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ জায়গা পেয়েছেন। তরুণ ব্যাটার সাদেকুল্লাহ আতাল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে আছেন। নেওয়া হয়েছে পেস অলরাউন্ডার আজমতুল্লাহ ওমরজাই ও গুলবাদিন নাঈবকে। স্পিন আক্রমণে তরুণ লেগি নূর আলীও আছেন। পেস আক্রমণে নেতৃত্ব দেবেন ফজল হক ও ফরিদ মালিক। এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবে আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল: হাসমতউল্লাহ শাহেদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ (সহ অধিনায়ক), রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইকরাম আলী খিল, ইব্রাহিম জাদরান, সাদেকুল্লাহ আতাল, নূর আহমেদ, মোহাম্মদ নবী, গুলবাদিন নাঈব, রশিদ খান, আল্লাহ গজনফর, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, ফজল হক ফারুকি, নাভিদ জাদরান, ফরিদ আহমেদ মালিক।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শাবান মাসে রমজানের প্রস্তুতি
শাবান মূলত পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতির মাস। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) শাবান মাসে সবচেয়ে বেশি নফল ইবাদত তথা রোজা-নামাজ ইত্যাদি আমল করতেন। রজব মাসে ইবাদতের মাধ্যমে মনের ভূমি কর্ষণ, শাবান মাসে আরও বেশি ইবাদতের মাধ্যমে মনের জমিতে বীজ বপন; রমজান মাসে সর্বাধিক ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে সফলতার ফসল তোলা।
প্রিয় নবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ ও সালাম প্রদানের নির্দেশনা-সংবলিত আয়াতটি শাবান মাসেই অবতীর্ণ হয়। ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা নবীজির (সা.) প্রতি পরিপূর্ণ রহমত বর্ষণ করেন, ফেরেশতাগণ নবীজির (সা.) জন্য রহমত কামনা করেন; হে বিশ্বাসী মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করো এবং যথাযথভাবে
সালাম পেশ করো।’
(সুরা-আহজাব, আয়াত: ৫৬)
ইবাদতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় শাবান মাস। নফল রোজা ও নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দরুদ শরিফ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-কালাম, দান-সদকাহ-খয়রাত, ওমরাহ ইত্যাদির মাধ্যমে এই মাসকে সার্থক ও সাফল্যময় করা যায়।
রাসুল (সা.) রজব ও শাবান মাসব্যাপী এই দোয়া বেশি বেশি পড়তেন– ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগ না রমাদান।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমাদান আমাদের নসিব করুন।’ (মুসনাদে আহমাদ)
শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত ১৫ তারিখের রাতকে ‘শবেবরাত’ বলা হয়। ফারসি পরিভাষায় শব অর্থ রাত, বারাআত মানে মুক্তি; শবেবরাত অর্থ মুক্তির রাত। শবেবরাতের আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারাআত’ তথা মুক্তির রজনী। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্যদিবসের রজনী বলা হয়েছে।
শাবান মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এভাবে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, একদা মহানবীকে (সা.) জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কোন রোজার ফজিলত বেশি? উত্তরে তিনি বললেন, ‘রমজান মাসের সম্মানার্থে শাবান মাসে কৃত রোজার ফজিলত বেশি। আবার জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন দানের ফজিলত বেশি? উত্তরে তিনি বললেন, ‘রমজান মাসে কৃত দানের ফজিলত বেশি।’ (বায়হাকি)
হজরত উসামা বিন জায়েদ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! শাবান মাসে আপনাকে যত রোজা রাখতে দেখি, অন্য মাসে এত
পরিমাণ রোজা রাখতে দেখিনি। অর্থাৎ আপনি কেন এ মাসে এত বেশি রোজা রাখেন?
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘এটি এমন একটি মাস, যা রজব এবং রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি মাসের মধ্যে পড়ে। আর অধিকাংশ মানুষ এ মাসটি সম্পর্কে গাফেল থাকে। অর্থাৎ উদাসীন থাকে। যার ফলে তারা ভালো আমল করে না। তারা ভাবে, রমজান তো আছেই।’ (নাসাঈ)
হাদিস সূত্রে জানা যায়, শাবান মাস আসার আগেই মহানবী (সা.) দুই হাত তুলে এ দোয়া পাঠ করতেন এবং সাহাবাদেরও পড়তে বলতেন– ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবাও ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা ইলা শাহরির রমাদান।’ (মুসনাদে আহমাদ)
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দাও এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দাও। তাই এ মাসকে বলা হয় মাহে রমজানের আগমনী বার্তা।
উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘মহানবী (সা.) কখনও নফল রোজা রাখতে শুরু করলে আমরা বলাবলি করতাম, তিনি বিরতি দেবেন না। আর রোজার বিরতি দিলে আমরা বলতাম যে, তিনি মনে হয় এখন আর নফল রোজা রাখবেন না। আমি মহানবী (সা.)-কে রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে পূর্ণ এক মাস রোজা পালন করতে দেখিনি। কিন্তু শাবান মাসে তিনি বেশি নফল রোজা রেখেছেন।’ (মুসলিম)
মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের শাবান মাসে বেশি বেশি নফল ইবাদত করার তৌফিক দান করুন।
ড. মো. শাহজাহান কবীর: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা