পাওনা আদায় ও ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাল-আবদুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার চাকরিচ্যুত কয়েক’শ শ্রমিক। এতে মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার অংশে যানজট দেখা দেয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও বিভিন্ন গাড়ির চালকরা। পরে জলকামান ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছাত্র ভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শারমীন গ্রুপের চাকুরিচ্যুত শ্রমিকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, সম্প্রতি শারমীন গ্রুপের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মালিকপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৩ ধারায় কিছু শ্রমিককে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরবর্তীতে তদন্ত করে মালিকপক্ষ যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমান পেয়েছে তাদের চাকরিচ্যুত করে। চাকরিচ্যুত করা এমন শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৪৩০ জন।

আরো পড়ুন:

গজারিয়ায় নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে আহত ১৪

মঙ্গলবার থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের ‘পরিবহন ধর্মঘট’ 

আজ সকালে চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিকবার তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করা হয়। তবে, তারা পুলিশের অনুরোধ না শুনে অবরোধ চালিয়ে যান। বিকেলে পুলিশ জলকামান ও লাঠিচার্জ করে আন্দোলনকারীদের ছাত্র ভঙ্গ করে দেয়। 

পুলিশ জানায়, সকাল ১০টার দিকে চাকরিচ্যুত শারমীন গ্রুপের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরে আন্দোলনকারীদের নানাভাবে বুঝিয়েও সড়ক থেকে সরাতে না পেরে জলকামান নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে সড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম বলেন, “সকাল থেকে বিভিন্ন দাবিতে বাইপাল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল চারকিচ্যুত শ্রমিকরা। আমরা তাদের অনুরোধ করি, আপনাদের বিষয়ে বিজিএমইতে আলোচনা চলছে। আপনারা রাস্তা থেকে সরে যান। তবে তারা শোনেননি। বিকেল ৩টার দিকে আমরা তাদের জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করে সরিয়ে দেই।”

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

স্বপ্ন পূরণে যে পরামর্শ দিলেন শাহরুখ খান

বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খান। তাকে ‘কিং খান’ও বলা হয়। কিন্তু এই মানুষটি বিশ্বাস করেন, মানুষের দেওয়া কোনো ‘ট্যাগ’ জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবনকে তিনি খুবই ছোট মনে করেন, এই ছোট জীবনে নিজের বড় স্বপ্ন পূরণে কি করা উচিত—সেই বিষয়ে একটি বক্তব্যে বিস্তারিত বলেছেন। 

শাহরুখ খানের বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: মানুষ আপনার জীবনে যে ‘ট্যাগ’ই দিক, সেটা জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবন  খুব ছোট। মানুষ আপনাকে স্বপ্নকে বড় ভাবে কিন্তু আপনার চুপ করে থাকাকে ভাবে দুর্বলতা। মানুষ আপনার সততা দেখে মনে করে আপনি নিষ্পাপ। সত্যিকার অর্থে শুধুমাত্র আপনিই জানেন, আপনি কে।

আমি যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসি তখন আমার মাথার ওপর কেউ ছিল না। এক জোড়া ছেঁড়া জুতা, একটি স্যুটকেস, সেকেন্ড হ্যান্ড জামাকাপড় আর বুকভর্তি স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। মানুষ আমাকে দেখলে বলতেন, এই ছেলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারবে! মানুষ আমাকে দেখলে হাসতেন। কিছু মানুষ আমাকে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল প্রধান হিরো হবো। আপনি দেখবেন যে, কোনো মানুষকে আপনার স্বপ্নের কথা বললে, তিনি বলবেন, এটা যথেষ্ট ভালো নয়, স্মার্ট নয়, ট্যালেন্টেড নয়। যখনই আপনি কারও কাছে আপনার স্বপ্নের কথা বলবেন, তার অর্থ আপনি তাদেরকে আপনাকে সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ দিয়ে দিচ্ছেন। এটা খুবই বিদপজনক।  

আরো পড়ুন:

ষাটের দশকের হেঁশেলের চিত্র ‘খাদ্যবিলাস’

যে রং দেখা যায় না

আপনি আপনার স্বপ্নের দিকে যাত্রা শুরু করুন। এরপর আপনার পাশে অন্য অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে যাবে। আপনি যদি আপনার লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে আপনি ভুলে যাবেন, আপনার স্বপ্নের কথা। মনে রাখবেন, আপনি কারও কাছ থেকে ‘বৈধ্যতা’ পাওয়ার জিনিস নন। আপনি কারও সেকেন্ড চয়েস নন। আপনি কারও ব্রেকআপ প্ল্যান নন। আপনি আপনার পরিকল্পনার প্রধান চরিত্র।

স্বপ্ন পূরণের পথে যাত্রা শুরু করুন। যে মানুষেরা আপনাকে অপমান করেনে, ছোট করেন তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। যেখানে আপনার মূল্যায়ন নেই, সেখান থেকে সরে যান। সেই সম্পর্ক থেকে সরে যান, যে সম্পর্ক আপনাকে কেবল ‘ছোট’ অনুভব করায়। এরপরে মানুষ আপনাকে বড় ভাবতে শুরু করবে। এর অর্থ এই নয় যে, আপনি মানুষকে ভয় পাবেন। এর অর্থ হলো, সেই সব মানুষের কাছ থেকে সরে থাকা; যারা আপনাকে মূল্য দেয় না। 

নিজেকে গড়ে তোলার জন্য সময় নিন। শিক্ষা অর্জন করুন। নিজেকে নির্মাণ করুন। দয়া করে নিজের সঙ্গে কথা বলুন। অহংকারী হয়ে উঠবেন না, সচেতন হয়ে উঠুন। এর অর্থ এই নয় যে, আমি অন্যদের চেয়ে বড়। এর অর্থ হলো, আপনি অন্যদের চেয়ে ছোট নন। 

অনেক সময় আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই যে, নম্রতা হলো নিজেকে অবহেলা করা। মনে রাখবেন, আপনি উজ্জ্বলভাবে জ্বলে ওঠার জন্য জন্মেছেন। স্বপ্ন তাড়া করা থামিয়ে দেবেন না। এটি আপনার ডেইলি রুটিনে যুক্ত করে নিন। একদিন সকালে আপনি একজন সুপারস্টারের মতো জেগে উঠবেন আর অন্যদিনগুলোতে আপনি আপনার গল্পে একজন পার্শ্ব চরিত্রের মতো জেগে উঠবেন; এটাও ঠিক আছে। এটা কোনো ব্যাপার নয় যে, আপনি আপনার গল্পের বা ফিল্মের কোন চরিত্রটি অনুভব করছেন। কিন্তু নিজেকে এটা মনে করিয়ে দিন ‘আমি বিক্রির জন্য নই, আমার কোনো ডিসকাউন্ট নেই, আমার কোনো দর কষাকষি নেই।’ আয়নায় শুধু নিজের মুখ দেখবেন না, নিজের ভেতরে থাকা আগুন দেখুন। কারণ ওই আগুনই সত্য। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ