পিএসএলে বাবর আজমের দলে নাহিদ রানা
Published: 13th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সর্বশেষ পাকিস্তান সফরে গিয়েছে গত বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরে। দুই টেস্টের সিরিজে স্বাগতিকদের ধবলধোলাই করে বাংলাদেশ। সেই সিরিজে গতির ঝড় তোলেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার নাহিদ রানা। সে সিরিজে দুই দল মিলিয়ে বোলিংয়ে সবচেয়ে বেশি গতি তুলেছিলেন—ঘণ্টায় ১৫২ কিলোমিটার। পেসার-প্রসবা পাকিস্তানি ক্রিকেট সংগঠকদের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন।
সেই গতির ঝড়ই সম্ভবত এবার পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) দল পাইয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের এই পেসারকে। আজ পিএসএল ড্রাফটের রাউন্ড ওয়ানে ‘গোল্ড’ ক্যাটাগরিতে নাহিদকে দলে টেনেছে পেশোয়ার জালমি।
আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফি: দলে আছেন নর্কিয়া, এবার খেলতে পারবেন তো২ ঘণ্টা আগেলাহোরের হুজুরি বাগে অনুষ্ঠিত ড্রাফটে পাকিস্তানি অলরাউন্ডার হুসেইন তালাত ও নাহিদ রানাকে নিয়ে গোল্ড ক্যাটাগরি শেষ করে পেশোয়ার জালমি। পাকিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যান বাবর আজম এই দলের অধিনায়ক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিন সংস্করণের প্রধান কোচ ড্যারেন স্যামি এই ফ্র্যাঞ্চাইজি দলেরও প্রধান কোচের দায়িত্বে। গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও গতির ঝড় তুলে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন রানা। স্যামি নিশ্চয়ই সেই সফরে তাঁকে খু্ব ভালোভাবে খেয়াল করেছেন। গতির ঝড়ে এসব মিলিয়েই হয়তো পিএসএলের দরজা খুলল নাহিদের জন্য।
এবার পিএসএলের ড্রাফটে বাংলাদেশের ২৮ ক্রিকেটারের নাম রয়েছে। প্লাটিনাম ও ডায়মন্ড ক্যাটাগরিতে রয়েছে ৮ জন—সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। প্লাটিনাম ক্যাটাগরিতে থাকা মোস্তাফিজুর ও সাকিব প্রথম ডাকে অবিক্রীত থেকেছেন। সব ক্যাটাগরি এখনো ডাকা হয়নি। প্রথম ডাকে দল না পাওয়া ক্রিকেটারদের পরে সাপ্লিমেন্টারি ক্যাটাগরি থেকে দল পাওয়ার সুযোগ থাকবে।
আরও পড়ুনবিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে বাংলাদেশের সাথিরা৩ ঘণ্টা আগেড্রাফটে এখন পর্যন্ত রানা সতীর্থ হিসেবে পেয়েছেন ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান টম কোহলার-ক্যাডমোর, দক্ষিণ আফ্রিকার পেস অলরাউন্ডার করবিন বশকে। টমকে প্লাটিনাম ক্যাটাগরি এবং করবিনকে ডায়মন্ড ক্যাটাগরিতে নিয়েছে পেশোয়ার জালমি। ২০১৭ সালে পিএসএল জয়ের পাশাপাশি ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২১ সালে ফাইনালে উঠেছিল জালমি।
নাহিদ রানা এখন বিপিএলে খেলছেন। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ৬ ম্যাচে এ পর্যন্ত ৯ উইকেট পেয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এবার রিশাদের ২ উইকেট ও ২ রান, রান উৎসবের ম্যাচে হেরে গেল লাহোর
পিএসএলে নিজের প্রথম দুই ম্যাচে তিনটি–তিনটি করে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। তাঁর দারুণ বোলিং লাহোর কালান্দার্সকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। আজও ২ উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের লেগ স্পিন অলরাউন্ডার। তবে ছিলেন বেশ খরুচে; ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৫ রান।
অবশ্য শুধু রিশাদ কেন, রান উৎসবের ম্যাচে বেশিরভাগ বোলারই আজ কঠিন সময় পার করেছেন। তবে ম্যাচ শেষে হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে মুলতান সুলতানস। রিশাদের লাহোরকে তারা হারিয়েছে ৩৩ রানে।
এবারের পিএসএলে নিজেদের মাঠ মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এটিই মুলতানের প্রথম ম্যাচ। নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ হারা দলটি এ রাতেই পেল প্রথম জয়।
ওপেনার ইয়াসির খানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে (৬টি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ বলে ৮৭) ২২৮ রানের পাহাড় গড়েছিল মুলতান। জবাবে লাহোর ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৫ রানে থামে। ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লাহোরকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন উবাইদ শাহ। মুলতানের পেসার উবাইদের আরেক পরিচয় পাকিস্তান জাতীয় দলের ফাস্ট বোলার নাসিম শাহর ছোট ভাই।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৯ রান তুলে ফেলেছিল মুলতান, যা এবারের পিএসএলে পাওয়ারপ্লেতে দলীয় সর্বোচ্চ। সপ্তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন রিশাদ, দেন ১০ ওভার। ১২তম ওভারে আবার বোলিংয়ে ফিরে দেন ১২ রান।
তবে নিজের শেষ দুই ওভারে ২ উইকেট নেন রিশাদ। এই দুই ওভারে আরও ২৩ রান দিলেও আউট করেন উসমান খান আর অ্যাস্টন টার্নারকে। এরপরও মুলতানের রানের লাগাম টানা সম্ভব হয়নি। হারিস রউফ ও শাহিন আফ্রিদি আজ দেদারসে রান বিলিয়েছেন। শেষ দিকে ইফতিখার আহমেদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২২৮ রান করে ফেলে স্বাগতিকেরা।
কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও ফখর জামানের উইকেট হারায় লাহোর কালান্দার্স। দলীয় ৮৭ রানের মধ্যে হারায় প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে।
এরপরেই ব্যাটিংয়ে নামেন রিশাদ। আগের দুই ম্যাচে আটে ও সাতে নামা এই অলরাউন্ডার আজ আরও এক ধাপ ওপরে উঠে এসে ব্যাট করলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ২ বলে ২ রান করে লেগ স্পিনার উসামা মিরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন।
তবু লাহোরের জয়ের কিঞ্চিৎ আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন স্যাম বিলিংস ও সিকান্দার রাজা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। দুজনের ঝোড়ো ব্যাটিং শুধু লাহোরের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। রিশাদদের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার বাবর আজমের পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরমুলতান সুলতানস: ২০ ওভারে ২২৮/৫ (ইয়াসির ৮৭, ইফতিখার ৪০*, উসমান ৩৯, রিজওয়ান ৩২; রিশাদ ২/৪৫, রাজা ১/১৫, আসিফ ১/২৬, আফ্রিদি ১/৪৩)।
লাহোর কালান্দার্স: ২০ ওভারে ১৯৫/৯ (রাজা ৫০*, বিলিংস ৪৩, ফখর ৩২; উবাইদ ৩/৩৭, ব্রেসওয়েল ২/২০, উসামা ২/২৬)।
ফল: মুলতান সুলতানস ৩৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসির খান।