ঘরের মাঠে সিলেট স্ট্রাইকার্সের শেষটা ভালো হলো না। চিটাগং কিংসের কাছে ৩০ রানে হেরেছে সিলেট। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে চিটাগং কিংস ৬ উইকেটে ২০৩ রান করে। জবাব দিতে নেমে অনেক চেষ্টার পরও সিলেট করতে পারে কেবল ১৭৩ রান।

তিন ম্যাচ হারের পর টানা দুই জয়ে সিলেট কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছিল দর্শকদের। কিন্তু সিলেট পর্বের শেষটা ভালো হলো না স্বাগতিকদের। নির্বিষ বোলিংয়ের পর শুরুর ব্যাটিং হলো ছন্নছাড়া। মাঝে লড়াই করলো তারা। শেষটাতেও হাল ছাড়ল না। কিন্তু ৩০ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি।

২০৪ রান তাড়া করতে নেমে শুরুর ১০ ওভারে ম্যাচ ছুট হয়ে যায় সিলেটের। ১০.

৩ ওভারে অ্যারোন জোন্স যখন চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তখন স্কোরবোর্ডে রান কেবল ৬৪। একাদশে ফেরা পল স্টারলিং গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদ পান। রনি তালুকদার করেন মাত্র ৭ রান। ভালো ও আক্রমণাত্মক শুরুর পর জাকির হাসান থেমে যান ২৫ রানে। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ১৯ বলে ২৫ রান করেন তিনি। জোন্স ১৮ বলে ১৫ রান করে হতশ্রী ইনিংসটি শেষ করেন। 
পঞ্চম উইকেটে সিলেট লড়াইয়ে ফেরে। জাকেরকে নিয়ে লড়াই করেন জর্জ মুনসে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুনসে শুরুতে রান পেতে ভুগছিলেন। থিতু হওয়ার পর চালান তাণ্ডব। প্রথম ২৫ রান পেতে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান খেলেছেন ২৬ বল। পরের ২৫ তুলেছেন ১০ বলে। শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৫২ রান করে ফেরেন সাজঘরে।

আরো পড়ুন:

সিলেটকে দুইশ রানের চ্যালেঞ্জ চিটাগংয়ের

রেকর্ড রানে জেতার ম্যাচে ঢাকার প্রাপ্তি লিটন-তানজিদের সেঞ্চুরি

এরপর আরিফুল এসে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে আশার আলো দেখান। কিন্তু ১২ রানের বেশি আসেনি তার ব্যাট থেকেও। শেষ পর্যন্ত উইকেটে টিকে ছিলেন জাকের আলী। ২৩ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৭ রান করে পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়ে আনেন তিনি।

চিটাগংয়ের হয়ে ২৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা ছিলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম।

এর আগে তিন বিদেশির হাত ধরে উড়েছে চিটাগংয়ের ব্যাটিং ইনিংস।  শুরুতে উসমান খানের ঝড়ো ফিফটি। মাঝে গ্রাহাম ক্লার্কের বিধ্বংসী ইনিংস। এবং শেষে হায়দার আলীর ক্যামিও।

টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে চিটাগং কিংসকে অল্পতে আটকে রাখার পরিকল্পনা ছিল সিলেট স্ট্রাইকার্সের। কিন্তু গোটা ইনিংসে তাদের বোলাররা যেভাবে হাত খুলে রান দিয়েছেন তাতে একবারও মনে হয়নি অধিনায়কের সিদ্ধান্ত যথার্থ।

ধারাবাহিক রানে থাকা উসমান এবারও দলের হাল ধরেন শুরুতে। ৩৫ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৫৩ রান করেন। আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন এক ছক্কা হাঁকিয়ে আটকে যান। দ্বিতীয় উইকেটে ক্লার্ক ও উসমান ৩৯ বলে ৬৮ রানের জুটি গড়েন। প্রতি আক্রমণে গিয়ে দ্রুত রান তুলে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন তারা।

ফিফটির পর উসমান থেমে গেলেও গ্রাহাম টিকে ছিলেন আরও কিছুক্ষণ। সিলেটের অধিনায়ককে বেরিয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন উসমান। ৫ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৩ বলে ৬০ রান করা ক্লার্ক সাজঘরে ফেরেন নাহিদুল ইসলামের বলে।

শামীম হোসেনের পরবর্তী পাঁচে হায়দার আলীকে আসতে দেখে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু ডানহাতি হার্ডহিটার শেষের দাবি মিটিয়েছেন বেশ ভালোভাবে। মাত্র ১৮ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৪২ রান করেন। ২৩৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংসটিতে ছিল কাভার ও মিড উইকেট দিয়ে হাঁকানো দৃষ্টিনন্দন ছক্কায়। এছাড়া মিথুন ১৯ বলে ২৮ রান তুলে রাখেন অবদান।

ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে ৯৯ রান তোলা চিটাগং শেষ ১০ ওভারে পায় ১০৪ রান। বোঝাই যাচ্ছে একই ছন্দে তারা ব্যাটিং করেছে। যেখানে সিলেটের বোলাররা ছিলেন স্রেফ দর্শক। ৩৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে তানজিম সাকিব ছিলেন তাদের সেরা।

চিটাগং কিংসের তৃতীয় জয়ের দিনে সিলেট পেল চতুর্থ পরাজয়ে তিক্ত স্বাদ পেল। পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে এখন চিটাগংয়ের অবস্থান।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ