প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে কিশোরী (১৭) অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল। আর সেই তরুণ বিয়ে করেছিলেন আরেকজনকে। স্থানীয়ভাবে সালিস ও মামলা করেও কিশোরী কোনো প্রতিকার পায়নি। অবশেষে আত্মহননেই তার জীবনপ্রদীপ নিভে গেল। এই ঘটনা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার।

গত বুধবার রাতে ওই কিশোরী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে কিশোরী শনিবার সকালে মারা যায়। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

আত্মহত্যার আগে ওই কিশোরী একটি চিরকুট লিখে গেছে। এতে সে লিখেছে, ‘আমার জীবনের মূল্য নেই, এসবের পিছনে সব দায়ি জাহেদা, আমি এই দুনিয়া থেকে চলে যায়তেছি (যাইতেছি), আমি তখনি শান্তি পাব, যখন জাহেদা আর কাওছার সারা জীবন জেলে ধুঁকে ধুঁকে মরবে। আমি তখনই শান্তি পাব।’  

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাওছার (২২) নামের এক তরুণের সঙ্গে ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে কিশোরীর পরিবার বিয়ের জন্য কাওছারকে চাপ দেয়। এ নিয়ে কয়েক দফা সালিস হয়। এতে কোনো সুরহা হয়নি। অন্যদিকে কাওছার গোপনে অন্যত্র বিয়ে করেন। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে উপজেলার কচাকাটা থানায় ধর্ষণের অভিযোগে কাওছারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কাউছারের পরিবারের সদস্যদেরও আসামি করা হয়। পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কিশোরী আত্মহত্যা করে।

কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোরীর মায়ের করা মামলা ৭ জানুয়ারি রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যেই ৮ জানুয়ারি রাতে ওই কিশোরী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে রংপুর মেডিকেলে মারা গেছে বলে শুনেছি। গতকাল রাতে তার লাশ দাফন করা হয়েছে। আজ সকালে ওই কিশোরীর পরিবারের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আজ সন্ধ্যায় হত্যা মামলা করবে বলে জানিয়েছে। আগের মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ