গরু চুরি করে ভূরিভোজের আয়োজন করায় জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মাহমুদুল হাসানকে (মুক্তা) দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা চিঠি এলাকায় পৌঁছালে বিষয়টি জানা যায়।

বহিষ্কৃত মাহমুদুল হাসান মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। লোকজন দিয়ে গরু চুরি করিয়ে ভূরিভোজের আয়োজন করার অভিযোগে গত শনিবার রাতে তাঁকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। আর আজ দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব ধরনের পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানা গেল।

মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মঞ্জুর কাদের বাবুল খান প্রথম আলোকে বলেন, দলের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্নের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাহমুদুল হাসানকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে তাঁকে কেন দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সেটি আগামী সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এখন যেহেতু তাঁকে কেন্দ্র থেকেই বহিষ্কার করা হয়েছে, তাই এই প্রক্রিয়ার আর কোনো প্রয়োজন নেই।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার উপজেলা মহিলা দলের সমাবেশ উপলক্ষে বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসানের বাড়িতে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। ভূরিভোজের জন্য মাহমুদুল হাসান লোকজন দিয়ে গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কৃষক এফাজ মণ্ডলের গোয়ালঘর থেকে একটি গরু চুরি করিয়ে আনেন। ওই গরু জবাই করে শনিবার তাঁর বাড়িতে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। ভোরের দিকে ওই কৃষক তাঁর গোয়ালঘরে গরু না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। স্থানীয় লোকজনের মধ্যেও গরু চুরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে।

স্থানীয় কয়েকজন উপজেলার কয়ড়া বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মো.

বজলুর কাছে গরুর মাথা ও চামড়া দেখতে পান। পরে ওই মাথা ও চামড়া কৃষক এফাজ মণ্ডলের গরুর বলে শনাক্ত করা হয়।

মাংস ব্যবসায়ী বজলু স্থানীয় লোকজনকে বলেন, বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান ও যুবদলের কর্মী সুমন মণ্ডল তাঁকে ওই গরুর মাংস কাটতে নিয়ে গিয়েছিলেন। এটি জানতে পেরে স্থানীয় লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই নেতার বাড়িতে যান। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে লোকজন পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে যুবদল কর্মী সুমন ও মাংস ব্যবসায়ী বজলুকে আটক করে। এ সময় গরুর চামড়া, মাথা ও কিছু মাংস জব্দ করে পুলিশ।

এ ঘটনায় গরুর মালিক এফাজ মণ্ডল বাদী হয়ে শনিবার বিকেলে মাদারগঞ্জ থানায় মাহমুদুল হাসানসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা সাত থেকে আটজনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় সুমন মণ্ডল ও বজলুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের প্রথম নারী ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু

বাংলাদেশ প্রথম নির্বাচিত নারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট চন্দনা গ্রামের বাসিন্দা শামসুন্নাহার চৌধুরী মারা গেছেন।

শুক্রবার আছর নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মৃত্যুকালে তিনি স্বামী, সন্তানসহ আত্মীয়স্বজন ছাড়াও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সিঙ্গাপুর, ভারতসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহেরের স্ত্রী তিনি।

তিনি চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ও দেওরগাছ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৩ বার চেয়ারম্যান নির্বাহিত হন। এরমধ্যে ১৯৮৮ সালে প্রথম মিরাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সারা দেশে তখন তিনিই ছিলেন প্রথম নারী ইউপি চেয়ারম্যান। সেই থেকে রাজনীতিতে জড়ান। ১৯৯৩ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।

শামছুন্নাহার চৌধুরী ৩ বার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নানা সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন। পেয়েছেন অতিশ দীপঙ্কর জয়িতাসহ নানা পুরস্কার। হয়েছেন জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান। কাজ করেছেন নারী উন্নয়নে।

তার মৃত্যুতে সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শোক প্রকাশ করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ