সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া, হাসিনাকে ‘দুষলেন’ রিজভী
Published: 13th, January 2025 GMT
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেছেন, বাংলাদেশ সীমান্তের ১৬০টি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। দেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘যোগসাজশে’ ভারত এমন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন রিজভী।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে দোয়া মাহফিল আয়োজিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এ সময় রিজভী বলেন, ‘‘দুইটি স্বাধীন দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে যে কাজগুলো করা যায়, সেটা না করে ভারত জোর করে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। শেখ হাসিনার যোগসাজশে আমাদের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে ভারত ১৬০ জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
জামায়াতের উদ্দেশে রিজভী
‘মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রিজভী
‘অন্য এজেন্ডা নিয়ে কাজ করলে মানুষ মেনে নেবে না’
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ৪ হাজার ৬০০ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে তিন হাজার কিলোমিটারের বেশি জায়গাজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। ৮৫৬ বা ৮৫৭ কিলোমিটার বাকি আছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম, বিধি-বিধান এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি, এমনকি যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, সেটাও মানছে না তারা। শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজ সীমানার মধ্যে কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা হবে না। হতে গেলেও দুই দেশের মধ্যে যে আলাপ-আলোচনা করতে হবে, সেটা না মেনে লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে ভারত।”
রিজভী বলেন, ‘‘এর বিরুদ্ধে যে জনগণ দাঁড়াতে পারে, বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীর প্রতিরোধের সাথে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে, এই দৃষ্টান্ত শেখ হাসিনার আমলে শেখ হাসিনা দেখাতে দেয়নি। ফ্যাসিজম দিয়ে, নির্দয়তা দিয়ে, নির্মমতা দিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) ভারতের সেবাদাসী হয়ে কাজ করেছেন।”
‘‘তিনি একটা কথা বলতেন, নিজের দলের লোকদেরও বলেছেন যে, আমার দলের লোকদের মধ্যে অনেককে কেনা যায়, কিন্তু শেখ হাসিনাকে কেনা যায় না। আরে, আপনাকে তো সবার আগে কেনা যায়। ভারত আপনাকে সবার আগে কিনেছে। কেনার কারণে আপনার নিজের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গৌরবকে আপনি পদদলিত করে ভারতকে অসম কাজ করার সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন’’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
জাতীয়তাবাদী রিকশা ভ্যান-অটো রিকশা চালক শ্রমিক দলের সভাপতি আলমগীর হোসেন মন্টুর সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান সমুন, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ।
ঢাকা/নাজমুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি ছাড়া সব পদেই আ.লীগের জয়জয়কার
মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থিরা ১৪টিতে জয় পেয়েছেন। সভাপতি পদ ছাড়া অন্য সব পদে তারা জয়ী হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী এমদাদুল হক খান। তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়াকে ৭৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
এদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে ১৫৬ ভোটে পরাজিত করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সদর উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মাহাবুব হোসেন (শাকিল)। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৩০ ভোট ও জালালুর রহমান পেয়েছেন ১৩০ ভোট। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম মিয়া পেয়েছেন ২৯ ভোট (নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় পুনরায় গণনা অথবা লটারি করে বিজয়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে)। সহ-সভাপতি পদে মাহবুব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ পদে শাকিলা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ পদে মশিউর রহমান পারভেজ, কোষাধ্যক্ষ পদে সুজন ভৌমিক, সম্পাদক (লাইব্রেরি) পদে মুনীর হাসান, সম্পাদক (মহরার) পদে এ কে এম আজিজুল হক মুকুল নির্বাচিত হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী ৫টি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিজয়ী ৫ জন হলেন সৈয়দা তাহমিনা খানম, এনামুল হক, আবদুস সালাম, ইকবাল হোসেন ও আবু সুফিয়ান। এ ছাড়া সম্পাদক (অ্যাপায়ন ও বিনোদন) পদে বদরুন নাহার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক গোলাম মাওলা আকন্দ মুঠোফোনে জানিয়েছেন, মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ছাড়া ১৪টি পদেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী কিংবা সমর্থক বিজয়ী হয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে সরাসরি আওয়ামী লীগের পদে থাকা কোনো নেতা অংশগ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগের কোনো আইনজীবী নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তিনিও অন্য সবার মতন বিজয়ী হতেন বলে আমি মনে করি। যারা নির্বাচিত হয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন।
তবে এমদাদুল হক খান সভাপতি পদে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের সমর্থন নিয়েই বিজয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের কেউ প্রার্থী না হওয়ায় তাদের সমর্থক আইনজীবীরা নির্বাচনে মূলত এমদাদুল হক খানকেই ভোট দিয়েছেন। সেকারণেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়া পরাজিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমান বলেন, এমদাদুল হক খানকে নির্বাচিত করায় সব আইনজীবীদের ধন্যবাদ। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তার বিজয়ে আমরা আনন্দিত।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য মাদারীপুর আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন জানান, সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুজন সমান ভোট পাওয়ায় তাদের ছয়মাস করে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।