দ্য হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমপি) প্রতিরোধে দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে উপজেলা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে মেডিকেল টিম কার্যক্রম শুরু করে। 

আরো পড়ুন: দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত

আরো পড়ুন:

ভারত থেকে এলো ৫ টন জিরা

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আসছে না ভুটানের পাথর

ভারতে এইচএমপিভি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় হিলি চেকপোস্টে এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে বন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

“ভারতে এইচএমপিভি ভাইরাসের উপস্থিতি, সতর্কতা নেই হিলি স্থলবন্দরে” শিরোনামে গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি.

কমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এদিকে, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এই কার্যক্রম শুরু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এই চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাতায়াত করা পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।

উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে আজ সকাল থেকে এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। মাস্ক পড়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যদি কোন যাত্রীর শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া যায়, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হবে।” 

হিলি ইমিগ্রেশনের ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, “ভাইরাসটি প্রতিরোধে পাসপোর্ট যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারো যদি সর্দি-জ্বর, কাশি, গলাব্যথার লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাসহ পরামর্শ দেওয়া হবে। যদি কেউ বেশি অসুস্থ হন, তাহলে তাকে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” 

আরো পড়ুন: কোভিডের মতোই বিপজ্জনক হতে পারে এইচএমপিভি, প্রতিরোধে করণীয়

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, “এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে এই চেকপোস্টে মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। মেডিকেল টিম পাসপোর্টধারী যাত্রীদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পূর্ণ করলে যাত্রীদের কাস্টমসের কার্যক্রম করা হচ্ছে।” 

ইচএমপিভি সংক্রমণ নিয়ে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড ১৯ এর মতোই এই ভাইরাস। বাংলাদেশেও এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। চীনের সেন্ট্রার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশান বা সিডিসি’র ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ‘‘এইচএমপিভি কোভিড-১৯ এর মতোই একটি আরএনএ ভাইরাস। যার অর্থ হচ্ছে, এই পৃথক দুই ভাইরাসের জীনের গঠন একই। এই ভাইরাসও কোভিড ১৯ এর মতো শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে। কিন্তু এই ভাইরাস একই পরিবারের ভাইরাস নয়। সুতরাং কোভিডের টিকা নেওয়া থাকলে বা আগে কখনো কোভিড হলেও আপনার এইচএমপিভির সংক্রমণ হতে পারে। কোভিডের ইমিউনিটি আপনাকে এইচএমপিভি ভাইরাস থেকে রক্ষা করবে না।”

লক্ষণ কী:

ভাইরাসটির ‘ইনকিউবেশন পিরিয়ড’ তিন থেকে পাঁচদিন। অর্থাৎ কেউ এতে সংক্রমিত হলে তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে তার দেহে এর লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে।এই ভাইরাসের সাধারণ লক্ষণের মধ্যে রয়েছে––
১. জ্বর
২.সর্দি/নাক থেকে পানি পড়া/নাকবন্ধ ভাব
৩.হাঁচি/কাশি/গলাব্যথা
৪. চামড়ায় র‍্যাশ

এই ভাইরাস থেকে যে কারো ইনফ্লুয়েঞ্জা, ব্রংকাইটিস, ব্রংকিয়োলাইটিস, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া, অ্যাজমা বা কানে ইনফেকশনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।বিশেষ করে  শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী বা জটিল রোগে আক্রান্তদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

যেভাবে ছড়ায়: শীত ও বসন্তকালে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে বেশি আক্রমণ করে। মূলত হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায়। কেউ যদি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয় তার ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে আরেকজনের মধ্যেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির ড্রপলেট লেগে থাকা স্থান যেমন দরজার হাতল, লিফটের বাটন, চায়ের কাপ ইত্যাদি স্পর্শ করলে তারপর সেই হাত চোখে, নাকে বা মুখে ছোঁয়ালে এইচএমপিভি ছড়াতে পারে।

প্রতিরোধে করণীয়: 

১. বাইরে গেলেই মাস্ক পরা
২. ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া।
৩. হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা।
৪. আক্রান্তদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা। জন সমাগমস্থল এড়িয়ে চলা।
৫. হাঁচি কাশি দেয়ার সময় মুখ টিস্যু দিয়ে ঢেকে নেওয়া এবং ব্যবহৃত টিস্যুটি সঙ্গে সঙ্গে মুখবন্ধ করা ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে হাত সাবান পানিতে ধুয়ে ফেলা।
৬. যদি টিস্যু না থাকে তাহলে কনুই ভাঁজ করে সেখানে মুখ গুঁজে হাঁচি দেওয়া।
৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি ও শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করা।
৮. সর্দিকাশি, জ্বর হলেও অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

যেহেতু এই ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো টিকা আবিষ্কার হয়নি তাই ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ