আনন্দ মোহন কলেজে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, হল ছেড়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
Published: 13th, January 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরের আনন্দ মোহন কলেজে ছাত্রাবাসের সিট বরাদ্দ নিয়ে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে হলে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরোধ ও ধাওয়ার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কলেজের পল্লিকবি জসীমউদ্দীন হলের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তাঁরা জানান, সামনে তাঁদের পরীক্ষা, তাই হল ছাড়বেন না। এ ছাড়া হল ছেড়ে গেলে হামলাকারীরা দখল করবে। তবে শিক্ষকদের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে বেলা আড়াইটার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন।
এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আনন্দ মোহন ছাত্রদলের পক্ষ থেকেও পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় জানানো হয়, শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল অপপ্রচারের শিকার হয়েছে। ছাত্রাবাসে অবৈধ সিট দখলকারী, নিষিদ্ধ ও গুপ্ত সংগঠনের অনুসারীরা এর সঙ্গে জড়িত।
আনন্দ মোহন কলেজে ছাত্রাবাসের সিট বরাদ্দ নিয়ে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরোধ দেখা দিয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার বিকেলে ও সন্ধ্যায় হলে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজ এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরে এ ঘটনায় ছেলেদের পল্লিকবি জসীমউদ্দীন হল, কবি নজরুল হল ও ভাষাসৈনিক আহমেদ মালেক হল বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আজ সকাল আটটার মধ্যে ছেলেদের ছাত্রাবাস ত্যাগের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কলেজে আগামী তিন দিনের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আনন্দ মোহন কলেজের পল্লিকবি জসীমউদ্দীন হলের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় ভোটার দিবস আজ
আজ আজ ২ মার্চ জাতীয় ভোটার দিবস। ‘তোমার আমার বাংলাদেশে, ভোট দেব মিলেমিশে’ এই প্রতিপাদ্যে সারাদেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সপ্তমবারের মতো জাতীয় ভোটার দিবস পালিত হচ্ছে। এবারের ভোটার দিবসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
২০২৪ সালে হালনাগাদ করা চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আজ রোববার প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটাধিকার সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ২ মার্চ থেকে দিনটি পালন করে আসছে সংস্থাটি। কমিটির সভাপতি ও নির্বাচন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামানের সই করা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোটার দিবস উপলক্ষে মাঠ পর্যায়ে জেলা, উপজেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে র্যালি, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘গণতন্ত্র, নির্বাচন ও ভোটাধিকার বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে’ প্রতি বছরের ১ মার্চকে জাতীয় ভোটার দিবস হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার। তবে পরের বছর ২০১৯ সাল থেকে এই ভোটার দিবস উদযাপনের তারিখ পরিবর্তন করে ২ মার্চ করা হয়। এ দিবস উদযাপন উপলক্ষে ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশন সচিবালয় হতে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপন উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকাতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এবং মাঠপর্যায়ে থানা বা উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
ঢাকায় সকাল ৯টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক নির্বাচন ভবনের সামনে থেকে জাতীয় ভোটার দিবস ২০২৫-এর শুভ উদ্বোধন করা হবে। এ সময় নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত থাকবেন। এরপর নির্বাচন ভবনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হবে। সকাল ১১টায় নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ভোটার দিবস নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইসির আলোচনা সভায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্য থেকে ১০ জন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি, ইউএনডিপির প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে অবজারভার গ্রুপ থেকে কয়েকজন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকে ‘বিশেষ প্রকাশনা’ প্রকাশ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে ভোটার দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের বিষয়ে বিশেষ টকশো প্রচারিত হবে। মাঠপর্যায়ে জেলা, উপজেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসগুলোতেও র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সহকারী পরিচালক জনসংযোগ মো. আশাদুল হক।
সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ছয় কোটি ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৭ জন আর নারী ভোটার পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ ৪ হাজার ৬৪১ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯৩২ জন।