অস্ত্র নিয়ে দলীয় সম্মেলনে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুর রহমানকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করেছে জেলা বিএনপি।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে বহিষ্কারের তথ্য জানানো হয়। বহিষ্কারের চিঠি কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, রাজশাহী বিভাগীয় সমান্বয়ক, সাংগাঠনিক সম্পাদক, সহ-সাংগাঠনিক সম্পাদক বরাবর পাঠানো হয়েছে।

বহিষ্কার পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুর রহমান গত ১০ জানুয়ারি বেড়া পৌরসভার দলীয় কাউন্সিল-২০২৫ বাধাগ্রস্ত ও ভণ্ডুল করার লক্ষ্যে সভাস্থলের পাশে তিনি ও তার লোকবল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং দলীয় নেতৃত্বের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন ও অশোভন আচরণ করেন। সেকারণে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। সেইসঙ্গে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে সুপারিশ পাঠানো হলো।

আরো পড়ুন:

যশোরে বিএনপির মিলনমেলা

কুষ্টিয়ায় জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষে আহত ৩০

পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ যারা করবেন, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’’

বহিষ্কারের বিষয়ে শামসুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘‘আমাকে বিধি বহির্ভূতভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে এমন কাজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের অবগত করবো।’’

গত ১৪ নভেম্বর বিকেলে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে খাইরুন নাহার খানম মীরুকে আহ্বায়ক ও শামসুর রহমানকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির গঠনের পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

পর দিন ১৫ নভেম্বর বিকেল ৫টার দিকে বেড়ার সিএন্ডবি মোড় থেকে সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে ঝাড়ু মিছিল বের করেছিল শামসুর রহমান ও তার সমর্থকরা। পরে সিএন্ডবি মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকারের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছিল।

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়েবমেট্রিক্স র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশসেরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিক্সের র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। গত ২৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এ র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) পেছনে ফেলেছে রাবি।

প্রতিবছরের মতো এবারও দুই শতাধিক দেশের ৩১ হাজারের বেশি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং, ২০২৫ (জানুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওয়েবমেট্রিক্স।

এই র‍্যাঙ্কিং প্রণয়নে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণ পদ্ধতি, বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রভাব, নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতাসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত ভূমিকা বিবেচনা করে স্পেনের মাদ্রিদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিক্স। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট ছাড়াও তাদের গবেষক ও প্রবন্ধ বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা তৈরি করা হয়।

ওয়েবমেট্রিক্সের প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১ হাজার ৪২২তম। ২০২৪ সালের প্রথম সংস্করণে (জানুয়ারি) রাবির দেশীয় অবস্থান ছিল তৃতীয় এবং দ্বিতীয় সংস্করণে (জুলাই) এক ধাপ এগিয়ে অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। এ বছর আরো এক ধাপ এগিয়ে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে, শীর্ষ অবস্থান থেকে অষ্টমে নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যার বৈশ্বিক অবস্থান ১ হাজার ৯৯৫তম।

বাংলাদেশের শীর্ষ বিদ্যালয়ের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে বুয়েট (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৪৭৪), তৃতীয় অবস্থানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৭৭০), চতুর্থ অবস্থানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৭৮৩), পঞ্চম অবস্থানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৮১৮), ষষ্ঠ স্থানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৪২), সপ্তম স্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৭০) এবং অষ্টম স্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৯৫)। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ২২৮৭) নবম স্থানে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ২৩৬৭) দশম স্থানে আছে এ র‌্যাঙ্কিংয়ে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেছেন, “এ অর্জন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা আমাদের গবেষকদের অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছি এবং তারাও সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে গবেষণাকর্ম করছেন। এজন্যই আমাদের সফলতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আমাদের গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির চেষ্টা করছি এবং সবাইকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। আশা করি, আমরা সামনের দিকে আরো ভালো করব।”

রাবির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে, আমরা যেন এ সাফল্যে আত্মতুষ্টিতে ভুগে স্থবির না হয়ে যাই। আমাদের সামনে আরো ভালো করার সুযোগ রয়েছে এবং আমরা সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাব।”

তিনি আরো বলেন, “আমি সব সময় বলে আসছি, আমাদের গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। ন্যূনতম বরাদ্দ অন্তত দ্বিগুণ করা উচিত, যাতে আমরা উন্নত গবেষণা করতে পারি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো ভালো অবস্থান অর্জন করতে সক্ষম হই।”

ঢাকা/ফাহিম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ